কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১

সৈয়দ কওসর জামাল

 

কবিতার কালিমাটি ১০৮



কবিকথা

 

কখনও চাইনি আমি  আয়নার ন্যুব্জ আত্মরতি

কখনও ছিল না আয়ু উত্তেজক স্নায়ু-প্রবণতা

কখনও আঁকিনি আমি মেঘে মেঘে বাঁকা বিদ্যুল্লতা

সামান্য জীবন তবু অগ্ন্যুৎপাত আমার নিয়তি

 

আগুন উৎসব নয়, অসম্পূর্ণ স্বদেশ-প্রতীক

বরং মৃত্তিকালিপি আলোর সংবেদ হয়ে জ্বলে

তমসানির্ণীত ভাষা নিরুদ্বেগ ঘুমের অতলে

শতঝর্না কলহংস পাথরে ভেঙেছে আকস্মিক

 

এ যদি দর্শনকথা, প্রজ্ঞা আর কল্পনানির্মিত

অনন্ত তুষারমগ্ন প্রেক্ষণের রহস্যচালিশা

অতিরঞ্জনের দোষে আড়ালে হেসেছে শতভিষা

সমিধবাহক আমি, ছদ্ম হোত্রী, নিন্দায় মন্দ্রিত

 

কবিতায় প্রেম লিখি, বৈতানিক লিখেছি অগ্নিতে

অতীন্দ্রিয় করি দেশ, দ্বেষ মুছি একান্ত নিভৃতে

 

কবিতা আদিম

 

কবিতা আদিম, গুহাপথ, আমি অন্ধ অনুগামী

স্বপ্নের দূরত্ববর্ষ পেরিয়ে এসেছি কোন কালে

কয়েক শতাব্দী হবে, অন্ধকারে হিসেব রাখিনি

সুড়ঙ্গ তুমিই শুধু খুঁজে পেলে, আমাকে বাঁচালে।

 

কে তুমি, অন্ধকারেও দ্যাখো? এখানে ওঠে না চাঁদ

যা কিছু আলো তা এক বিন্দুর মতন, নাকি ভ্রম!

আমি অনুসরণের মায়া, ভেঙেছি ফেরার সাঁকো

আলেয়া হয়েই থাকো, আমি ভুলে থাকি পথশ্রম। 

 

কবিতার দিন

 

প্যাপিরাস পাতায় জড়িয়ে রাখি এই দিনলিপি

দিনলিপি মানে অযুত শব্দের টানা ঝোড়ো হাওয়া

কাঁটাঝোপে আটকে-থাকা বৃষ্টির দুএক মুক্তোফোঁটা

কাঠবেড়ালির মতো মৃত্যু উঁকি মারছে তার দিকে

বিদ্দ্যুল্লতা চিরে দিচ্ছে বুকের পাঁজর, আর দ্বিধা

হাতের মুঠোয় ধরা তখনও শব্দের ক্ষীণ ডাক

বৃষ্টির ভিতরে মিশে যায়, বলো কাব্য, বলো দুঃখ

এ লেখার শেষ তবে দেখি, প্রদীপ ভাসাও জলে

পুরোনো ভাসান-স্মৃতি ক্ষতের দাগের মতো চোখে

তারা বদ্ধ, ম্লান অক্ষরের মতো লিপির পাতায়

কিছু পাঠোদ্ধার করি, কিছু রাখি অভিলেখাগারে

ওত পেতে থাকা সময় আঁচড়গুলো আততায়ী

আয়ু খায়, প্রেম খায়, দিনলিপি জানে কী নীরব

অথচ সর্বনাশের এই খেলা ভুলিয়ে রেখেছে

এতকাল, লিপিহীন প্রলাপের মতো  সব কথা

কবিতায় অস্থির লিখেছি, আজ সব স্রোত, জল 

 

       

   

 

 

 

 

 

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন