কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১

মোহাম্মদ হোসাইন

 

কবিতার কালিমাটি ১০৮



দূরের পাহাড়

 

পৃথিবীতে যত রাত নামে আর

দিন আসে

কেউ কি জানে কোথা থেকে আসে

 

কোথায় হারিয়ে যায় এই তাপানো

সন্ধেবেলা

 

মাঘ শেষের বৃষ্টিতে মাটি ভেজে না

তবু হু হু শীতের বাতাস বদলে যায়

বদলে দিয়ে যায় প্রকৃতির শ্বাস

 

নতুন কুঁড়ি এসে মুচকি হাসে

গা জ্বলে, বুক জ্বলে

বড় বেলাজ সে উচ্ছ্বাস!

 

অকারণে বাঁশি বাজে

অকারণেই গান গায় দখিনা হাওয়া

উল্টো স্রোত এসে ভেঙে দিয়ে যায়

মৃন্ময় ভাড়ার

 

ঘুম আসেনা, ঘুম যেন

দূরের পাহাড়...!

 

কাঁচা প্রেম অথবা কালের অবিচ্যুয়ারি

 

রাষ্ট্র যখন অন্ধ

যখন সে অচেতন, অবচেতনে থাকে প্রায়শ

এবং হয়ে ওঠে উদ্যত, বেসামাল কোনো কোনো সময় 

তখন কাঁচা বাঁশের বাঁশির মত স্বরভঙ্গি তার, যেন কাঁচা প্রেম, মূঢ় বাঘবন্দি খেলা

 

এমনকি

কখনো কখনো অসময়ে নাক ডাকা ঘুম ভীষণ কদর্যতা আনে, অভব্য ভাবালুতাও

অথচ, সে জানেই না বানিয়া কিংবা মৃত

মেষশাবকেরা অন্যবেশে ফিরে আসতে পারে, চটকা কিংবা ভাওয়াইয়া গানের আদলে...!

 

সেই অন্ধ সংঘটি

'গৌড়নদী পাড়ি দিয়ে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছাবে কী করে', জানতে চাইছিল একজন!

আমি তখন কবুতরের খোপের ভিতর তাপানো রোদে বক বকম শুনছিলাম...

 

'কালের চাকা হাতে নিয়ে বসে থেকে

মেলোড্রামার জন্ম দেয় যে কবি ও কাপ্তান

তাদেরকে সসম্মানে রাজঘোটকীর সওয়ার করাই ভাল' ; অন্য একজন ফোড়ন কাটছিলেন...

 

গীতবন্দনা শুনতে শুনতে আমরা প্রায়শ যখন হাই তুলি

আর ঘিয়ে ভাজা লুচি কিংবা সন্দেশের খোঁজ করে করে

নিজেরাই অবিচ্যুয়ারি লিখে দিয়ে আসি কালের হাতে

তখন পৃথিবীর তাবৎ গ্রন্থ থেকে উড়ে যায় সংবেদনশীলতার অমূল্য হরফ, নম্রতা সমুদয়

 

আন্তোনিও গ্রামসি অথবা জ্যাঁক লাঁকা তখন মুচকি হাসেন আর

গণতন্ত্র কিংবা সাম্রাজ্যবাদের নতুন সংজ্ঞা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন...!

 

পাগল

 

ক্ষেত্রবিশেষে সবাই পাগলামিতে পড়ে

কেউ জেনে কেউ না জেনে

 

আমি যে ঘরটাতে থাকি

সেখানে সবাই কমবেশি পাগল

আমার বই, বিছানাপত্তর, ফ্লুরোসেন্ট লাইট প্রায়শ তা উসকে দেয়

 

অন্যেরা স্বীকার করেনা

অথচ, আমি জানি তারাও পাগল

 

প্রকৃত পাগল হলে সুবিধে অনেক, অসুবিধাও

পাগলের কোনো সাক্ষী নেয়না পৃথিবী

কিন্তু, শঠদের নেয়

 

সেয়ানা পাগলেরা গারদে থাকেনা

তারা গারদ বানায়

ফ্রয়েড কি পাগল ছিল

কিংবা, রুমি, খঁয়ের বাক!

 

প্রকৃত পাগলেরা পৃথিবী বদলে দেয়

রাষ্ট্র তাদের চেনে না

 

যারা সংঘ চালায়, রাষ্ট্র তার মূল পৃষ্টপোষক

সেখানে পিস্তল ও পরজীবি পাশাপাশি জন্মায়!

 

আমাদের কানা চোখ

আমাদের রাত যা দিনও তা

 

অথচ, মজনু জানে কোন পথে লাইলী আসে

কোন পথে ফিরে যায়...!

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন