কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৫

ময়ূরিকা মুখোপাধ্যায়

আবার দেখা হবে


চাঁদটাকে আজ ঠিক মেরী বিস্কুটের মতো লাগছে একটা হাল্কা হলুদ ভাব আছে জ্যোৎস্নায়
আজ অনেকদিন পর তরী এইভাবে চাঁদটাকে খেয়াল করছে নয়তো ইদানিং ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে মুখই ফেরাতে পারে না অফিসের বস্‌ ভীষণ জ্বালাচ্ছেন  আরে... এত বড় একটা প্রোজেক্টের ওপর প্রেজেন্টেশন বানানো মুখের কথা নাকি...
নাহ্... এবার একজন আই স্পেশালিস্টের কাছে যেতেই হবে, বড্ড ঝামেলা করছে চোখটা ক'দিন ধরে
কালো কফি কোনোদিনই পচ্ছন্দ নয় তরীরবেশ ঘন দুধে গাঢ় নেসক্যাফে হলে...!
ভালো মনে আছে, তখন ফাইন্যাল ইয়ার। মা কফি করে দিত ঘুম পাবে না বলে আর এখন কফি খাওয়া যেন নেশার মতো হয়ে গেছে

বাঁ-দিকের দেওয়ালের ঘড়িতে তখন রাত :১৫
স্কাইপে পাসওয়ার্ড দিতে দিতেও দেওয়া হলো না ওদের ওখানে তো এখন দিন, মল্লার- হয়তো এখন ব্যস্ত!  
সবে সাত নম্বর স্লাইডটা তৈরি হয়েছে বাড়তে থাকা রাতের সঙ্গে পাল্লা দিতে  দিতে তরীর হঠাৎ মনে পড়ে গেল, বছর চারেক আগের কথা

কলেজের সেমিনার হল... প্রিন্সিপল স্যার... ডিরেক্টর... ফাইনাল প্রোজেক্ট... আর
মেঘের সেই অসাধারণ প্রেজেন্টেশন...

মেঘ...

নিজের অজান্তেই কখন যে তরী নামটা বলে ফেলেছে! দূরের টাওয়ারের লাল আলোটাও যেন তখন ব্যঙ্গ করে বলছে, কি হে! মনে পড়ল তাহলে?  
আচ্ছা মেঘ... তুই কি আমার উপর এখনও রেগে?
কী করতাম বল্? মল্লার সেদিন অপারেশানটা না করলে মাকে যে আর...!
ভগবানও শেষে নিষ্ঠুর হয়ে গেলেন শুধু রয়ে গেল, মাকে দেওয়া শেষ কথা...
মল্লার...
ট্যাক্সিটা সেদিন সিগন্যালে আটকে ছিল গাড়ির ভেতর থেকেই আমি দেখলাম  পাশের জনকে খুব ভালো মানিয়েছে রে তোর সঙ্গে!

কোথা থেকে একটা দমকা হাওয়া ডেস্কে রাখা কাগজগুলোকে ওলোট পা্লোট করে দিল
ফাইলগুলো গোছাতে গোছাতে একটা এ-ফোর সাইজের পাতা পড়ল
আরে তো সেই বর্ষার লেখা কবিতাটা!
শেষ দুটো লাইন দারুণ পচ্ছন্দের তরীর -

                 চেনা গলি, চেনা মানুষ, ফেলে এসেছি কবে
                 তবুও... তবুও জানি আবার দেখা হবে

আবার দেখা হবে!  

 




0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন