কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / সপ্তম সংখ্যা / ১৩৪

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / সপ্তম সংখ্যা / ১৩৪

শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রদীপ চক্রবর্তী

 

কবিতার কালিমাটি ১৪৯


জোড়বাংলার রণবোল

(এক)

বৃষ্টিদিনের ক্ষেত কিছুবা শরীরী

একটা গাছ

ঘরের শতচর বদলে যাওয়া...

 

চোখেরপাতার নিচে আটকে

অবশিষ্ট সবুজরঙ নিংড়ে নেমে এলো

চোখের ভেতরেও থেকে গেল কিছু পানীয়

 

নিজের ছায়ার সঙ্গে ফতোয়া

                       সমানে সমানে নেশা                                                             পেটোয়ারি চালে চড়ুইভাতি

 

আদ্যনীল আঙুলটি তার দরজা

ভানুমতী সীমার মতো

                         ফেনার মতো

ওপরে ফ্লাইওভার

নীচে মূক-অমলপারা,

ভুশ করে উঠে এলে তুমিই তো!

 

ভগ্নস্তূপে জোনাই জমেছে

খানাখন্দে দু ফেরতা

পাখির গায়ে বর্ষাব্যথা

 

ছোপ-ছোপ রঙ ছিল হলুদ কি বাহারী

পাড়ভাঙা হাবিজাবির মতো বস্তুভাবা

                                  তোর বুকের কাঁপনে 

                        হাইরাইজে নামে নরম কাকাতুয়া

 

(দুই)

হাজার গণ্ডা নকল নিঃশ্বাসে পাড় ভেঙে যায়...

 

শূন্যতা লীন

পুরাঙ্গনাদের মধ্যে তিনিই শ্রেষ্ঠা কামুকী

 যার স্তনদ্বয় শূন্য বর্তুল

 করভ-সদৃশ ঊরু

 অঙ্গসৌষ্ঠবে যোজনগন্ধার

                            শূন্য সৌরভ...

 

শূন্য একটি অভিব্যক্তি

 

ঢেউ ফেনা তাপ সুরসার

শূন্য আদিমমাতার ফণা...

 

শূন্য অক্ষরের সব নীলরঙ

স্বপ্নে বোনা হয়েছিল

                      রোয়া হলো ভিড়ে...

 

(তিন)

উঠে পড়ে স্নান সারবো

স্নান করতে করতে ভাববো

আজ আরেকবার দেখা হতে পারে কি না

 

ও রকমই ছল্লিবাজ আছিস তো তুই?

 

ছোঁয়ার বদলে খুলবো দরজা

                               ঢুকবো ঘরে

দেখবো কলসেন্টারের মতো ভগ্নদূত

                          দাঁড়িয়ে নীলশাড়ির ঘূর্ণিতে...

 

বিনি-সুতোয় বুনতে থাকো স্বচ্ছতোয়া

ঠাস-বুনোটের চোখ

সহজিয়া বসন্তবৌরীর রাজবোল

 

একজন নৈর্ব্যক্তিক দেখা,

 

কেউ দেখতে পাচ্ছে না, শুধুমাত্র একজন

 

সংলগ্ন ফুটপাতে, আড়মোড়া ভেঙে টেনে ছিঁড়ে ঘন কেশরাশ

                  রক্ত-মাস কেমন করে চোঁয়ায় মনে

কিছু ইতস্তত ক'রে

অবশেষে টপকায়

দুপুরের শূন্যতার ভেতর ক্রমাবলীন - অস্পষ্ট,                                                            হারিয়ে টপকায় ক্রমশ...

 

(চার)

জলরঞ্জিনীর আঁকিবুকি

বুকে থুপি দেওয়া শ্রীময়ীর আজ ক্রমে কৌশল, মুখের ওপর নির্মীয়মাণ...

                         আরেকটু অভাব-সবুজ

 

মেঘবাড়ির নীচে অশেষ বৈশালী বাদুড়                                                                 লক্ষ্যভেদী ষাঁড় ও শুক্র

 

নির্যাসে অভ্রষ্ট আর কিছু ফাতনা, বঁড়শি,

নালশে-কেঁচোর চার...

শ্রীময়ী অবিমিশ্র

 

 কেবল একটা মৃতচোখের পাতায় শ' মিটার আন্দাজ সুড়ঙ্গ

 যাওয়া হয় না আছড়ে পড়ে,

                    নীলশাপলার মাঠে সমস্ত দুপুর

 

এবং সেকারণে উঁচু জানলা দিয়ে দেখে নেয় একটা লোক সাঁতার কাটছে এন্তার

খুব কাছ থেকে ক্রমাগত ভেঙে যাচ্ছে শিশ্ন,                                                            অ্যাক্সিসে 

 

গভীর জঙ্গলের দিকে তাকে ঠেলে নিয়ে যায় মিষ্টি শিস দিতে দিতে এক ছোট্ট পাখি

                  নির্ভার শরীর

হাল্কা বিষে রাঙা,

নাভিমূলে

সাতরঙা বুদ্‌বুদ কিরণ

 

মানুষের মতো,

অদিশা নিশানা এলোচুলে

আঁত অবধি চেঁচিয়ে ওঠে

              শাওনঝিলের ভরা বর্ষা

 

(পাঁচ)  

ক্রমে পশলা এক অদ্ভুত,

                           সর্বত্রগামিনী...

 

নিগূঢ় এই ভাবে নয় প্রথম

সবুজ মারুয়ার দানায়

লুকোচুরি খেলতে থাকে

চিরচেনা বাড়ি!

 

শীতার্ত রানি ডেকেছেন আজ

শীতের কুম্ভকে কুনো ব্যাঙ

কার্পাসে কাঞ্চনে

নির্মোকের শাড়ি ক্রমাগত ময়ূরকণ্ঠী

 

দীর্ঘতম জঙ্গলে ফেলে আসা একটি আসক্ত রঙ

 

ক্রমে সম্বিৎ ফিরে পাও

 বিরামকক্ষের চন্দ্রলেখা,

যতই তুমি কলঙ্কে ক্ষতিপূরণ দেবে বলো দুঃসাহসী তিলের ক্বচিৎ নীল...

 

অল্প অল্প ছুরির নুনে দ্বিপ্রাহরিক রক্তে

                                 প্রথম নৌকো ডুবল...

কায়াহীন মনিহারীদ্রব্য

সবজি লোহালক্কড়

মাছেরবাজার

নেশার নৌবহর

এবং শয়নগৃহ

 

(ছয়)

শিহর কুঁড়ির ফেরৎ ফেনায় শিশির পড়তে কতক্ষণ!

নিস্পৃহতায় ঘন হচ্ছে সেগুন কাঠের চেয়ার

 

পড়ন্ত ঢেঁকি ও ঝুমকো

সবুজে ডেকে যায়

বিয়ন্ত গাইয়ের ইশারা...

 

অব্যবহৃত ভোর, আসঙ্গকাতর

পিপাসামুক জোড়বাংলার অষ্টাদশ ঘোড়া ছুটছে

ছুটেই চলেছে হল্লাবোল,

অসবর্ণ তারল্য-সংকট মনে

 

শূন্যময় সম্পাতি বিদ্যুৎ

                   আকাশে উড়ছে  শকুনপাখি

 

ঘোড়ার ওপরে রাজন্যা

ঘিয়াগরদের ভিজে লালপাড়

গলা ছেড়ে গাইছে গান,

 

নিঃস্বন নিঃস্ব ছল্লাছই ভঙ্গিল ভুজঙ্গ ফণা

পুঞ্জিত পাললিকে পুড়ি প্রমূর্ত প্রবঞ্চনা

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন