![]() |
কবিতার কালিমাটি ১৪৯ |
সভ্যতার শিলাখণ্ডগুলি
হাত কত লম্বা হলে শিকড়ের তলদেশ
ছুঁয়ে ফেলা যায়
তলদেশে বাস্তুসাপ শীতঘুমে অচেতন হয়ে
আগলায় অপস্রিয়মাণ সভ্যতার শিলাখণ্ডগুলি।
শিকড় আরাম দেয়।
শীতল ধূসর মাটি জন্মদেবতার মুদ্রাদোষ
লিখে রেখে দেয়।
আমাদের জীবনের পাতাগুলি একদিন সবুজ ছিল
এখন অনেক লোক চলে গেছে ভিন্ন পথে
এদিক-ওদিক
যারা আছে তারা আমাদের চেনে না আদপে।
আমাদের গল্পগুলি বিন্দুমাত্র সুখ দেয় না তাদের।
এখন বস্তুত একা; শীতঘুমে বাস্তুসাপ যদি হই
বর্তায় না অনুপল গুনে গেঁথে
হিসেব মেলানোর দায়।
এমনও তো হতে পারে
শেষ সূর্য ডুবে গেলে অন্ধকার কাটবে না আর
শেষ নারী চলে গেলে নিরুপায় পুরুষের
বংশক্রম রক্ষার সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
কুয়াশা বা আদতকথা
এই তো ঠাণ্ডার শুরু
এ সময় কাউকেই বিশ্বাস কোরো না।
মানুষেরা উত্তাপ বিলিয়ে
জেনে নিতে পারে সব গূঢ় তত্ত্বকথা।
হিংসার সবুজ দিয়ে ঢেকে যাবে চোখ
চোখ খুব ছুটি চায়, কাজে ফাঁকি দেয়।
এক কথা বলতে গেলে অন্য কথা এসে
যায়;
ভুলে যাই পণবন্দী মানুষের কথা;
দরজার বাইরে থাকা প্রার্থীর নাম;
অকর্মণ্য অশ্রু থেকে কুয়াশা জন্মায়।
জিয়নকাঠির কথা বোলো না কাউকে;
অন্যের আদতকথা জেনে নিতে
সকলের আগ্রহ যখন জন্মায়
তখন হঠাৎ করে খুলে যায় দক্ষিণের মলিন জানালা।
মানুষ ভয়ার্ত হলে
যে হাত তালার খুব কাছে গিয়ে বলে:
চাবি নেই
সে হাতের গন্ডূষে কতক্ষণ স্থির থাকে জল?
প্রদীপের শিখা জ্বলে... আঁচলে আগুন ধরে...
এ সময় কি তাচ্ছিল্য মানায়?
নারী তার নদীর গভীরে মিশে পাড় ভাঙে,
মানুষ ভয়ার্ত হলে
অন্ধকারে পাখি ও ঘুড়ির রঙ
মিলেমিশে যায়...
ভূমিকাসূর্যের আগে সব কাজ সাঙ্গ করে
প্রেমের প্রান্তরের খোঁজে
চোরকাঁটা বেছে বেছে
এগুনো কঠিন।
পৃথিবীতে ছদ্মবেশে
কেউ কেউ কথা বলে, না বলার মতোই,
কেউ কেউ কথা না বলেও বলে অনেক কিছুই;
আসলে কথাটা জরুরি নয়, কীরকম ভাবে বলছ,
মোচড়ে মোচড়ে ঠিক কীরকম ঘূর্ণিতে বেঁধে দিচ্ছ
বাবুই-এর বাসা, এ সব এখন খুব দামি মনে হয়।
ভদ্রতায় ঢিল ছোড়াছুড়ি ঢের হল এ পৃথিবীতে।
এবার এসব বন্ধ রেখে সবুজ ঘুড়িতে ওই আকাশের নীল
সম্পূর্ণত ঢেকে যাক্। যেন সূর্যও সেই রঙ দেখে
পৃথিবীতে ছদ্মবেশে নেমে আসে, খোঁজ নিতে
ঘাসের উৎসকথা; বুনো ঝোপে কোথায় জন্মায় লালফুল।
পৃথিবীতে নষ্ট হবার মতো খুব বেশি দ্রব্য বাকি নেই
আর।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন