কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১৩২

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১৩২

শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

উপল মুখোপাধ্যায়

 

কালিমাটির ঝুরোগল্প ১৩৭


পাঙ্খাবাড়ি রোড

আসতে চাইনি। আসলে আসতে চেয়েও ভয় পেয়েছিলাম। তবু এসেছি জয়ার সাহসে। কী করে সাহসী হয়? এসব বোঝার কোন দরকার আছে কি? যিনি চালালেন তাঁর বয়স বাষট্টি। দেখেছি অনেকটা আমার মতোই। তফাৎ যা আজকাল টলটল টলটল করে মাথা। কানের থেকে সংবেদ আসতে গিয়ে খাদে পড়ে যায় যেখানে কুয়াশা থাকে, আমার কুয়াশা। কেন থাকে। কেন যে এমন হয় টলটল টলটল করে বুঝতে পারি না। সেকথা বলাতে বললেন, আমারও হয়, আজকাল হর্ন যেন শুনি অনেক দূরের মনে হয়। তবে টলটল করেনি এখনও  গাড়ি চালাই বলে।

কত কথা হল বামফ্রন্ট চাষের জমি নিয়ে নিল ছ’হাজার করে বিঘে। কত কাজ হল। তৃণমূল বিক্কিরি করছে কাঠা প্রতি চল্লিশ লাখ। কত কাজ হল। তিনি বললেন, অনেকটা জমি সিআরপি নিয়েছে। আমাদের যতটা  ছিল সে ছ’বিঘের মতো তার থেকে অনেক বেশি। এইভাবে ধারে ধারে কুয়াশা হয়েছে। হাসপাতাল বার রোলের দোকান ইস্কুল শুঁড়িখানা রোলের দোকান হয়েছে তো হয়েছেই সব কুয়াশার ভেতরে। গভীর খাদের মতো একটা কিছু নেমে যেতে দেখেছেন আর আমাদেরও দেখিয়েছেন পাঙ্খাবাড়ি রোডের তলায়, যেখানে দুটো ছানা নিয়ে বসেছিল একজন মা যাকে চিতাবাঘ বলে। সেই মায়ে কথা বলতেই উনি বলেন, আমি জানি যে তলায় ঝরণাও আছে। একটু চেষ্টা করলেই ফিস আইয়ের মধ্যে থেকে সব দেখা গেল, সব দেখা যায়।

একশো আশি ডিগ্রী থেকে দেখা গেল সব দেখা যায়। পাঙ্খাবাড়ির রোডের সঙ্গে রোলের দোকানও অথবা হাসপাতাল অথবা ইস্কুল কিম্বা বামফ্রন্ট বা তৃণমূল। কিন্তু সব কিছু আবছা আবছা কুয়াশাবাহার কিম্বা বিতিকিচ্ছিরি। শাশ্বত যা তা রাস্তার মতো, কথার মতন গভীর ও শাশ্বত আমি দূর থেকে দেখেছি কেবল টলটল টলটল করতে।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন