কবিতার কালিমাটি ১০৬ |
ঘুমন্ত তুলোর রাত
(১)
আর কিছু নয় শুধু এই অবিশ্বাস্য আঙুল, তোমার রাত্রি মোচন থেকে উঠে আসে, ঘুমন্ত তুলোর নিঃশ্বাস আর উড়ন্ত বীজ, শোনো, আমি ছুটে এসে ছোঁয়া যাবে করে আঙুলে ঢাল বেঁধেছি, মেয়েলি তৃতীয় চোখ, সমর্পণে রেখেছি খঞ্জর, তুমি জানো শুধু তুমিই কতটা পরাবাস্তব এই মিডনাইট চাদরে, মাথা গুলিয়ে উগলে উঠছে বিষ, দুহাতে কদম বুকে ক্ষণজন্মা, অথচ অন্ধকারের সমর্থন ফিসফিসিয়ে বলছে --
-ও মা, তা না
হলে পুরুষমানুষ যাবে কোথায়
-কেন নদী নেই, ছাই নেই
- সে কি তবে
অবলম্বন
একটি একটি করে অগ্নি সাক্ষীর সাতটি বাঁধন যখন ঝরে পড়ছে, খুলে যাচ্ছে ক্লান্ত লকগেট, ওপার থেকে সে এবার চলে যাবে, রয়ে যাবে শুধু এক অবিশ্বাস্য প্যাসিভ ভিউ, পরজন্মে যদি পুরুষ জন্মনি তুমি হবে আমার পা ছড়ানো স্ত্রী, আমি দলিত অগ্নি
সে আগুনে শিকড়
পুড়ে গেল।
(২)
-তাহলে তুমিও
অনাহূত
-ভুলে যাই
-কি
-রণ-ক্লান্ত
এ অঙ্গ শিথিল
ভয় এক মাঝারি ধরনের অনুতাপ, মনে আসে তারপর হাওয়ার বসবাস, ভাসে দেহ ভাসে রাত-কাঙালি, এক মায়াবী উষ্ণতা, শেষ চালে ঘোরতর পাপ, তাকিয়ে দেখছে সে, আমার কি সব প্রতিরোধ ভেসে গেল, নাকি সেও ছিল বয়েলিং ফ্রগ সিনড্রোম, জ্বলন মানুষের, মুখ নেই, হাত নেই, পা নেই, একমাত্র ঠোঁট আছে, ছুঁয়ে আছে, অবিশ্বাস্য ছুঁয়ে আছে এতদিন।
(৩)
স্বয়ংক্রিয় খেলনাগুলো রতি শিখেছে, ওদের কুসুম গন্ধে মেঘ দেখেছে সিঁদুর, নাম দিয়েছে, বুকের কাছে নামিয়ে রেখেছে সোহাগ, সে হয়তো আর জন্মে মরমিয়া ছিল, আজ এই রাতটুকু বিকিয়ে যে কটি বর্ণ উপার্জন, তাই হবে আজ তার বৈধব্যে কলম, আমার প্রতি শেষ উচ্চারণে --
-চাও তো ফিরে
যেতে পার, না হলে অন্ন দিয়ো পেটে
-আর যদি খেয়ে
নিতে চাই
-সে আমার পরম
সৌভাগ্য হবে
বেহেস্তের সিঁড়ি মোছা কাজ, এক জলধারা বয়ে এসে নিজেকে পবিত্র করে যায়, রেখে যায় অহোরাত্রি, তার ধীর নিঃশ্বাস, আমি দেখি অনির্বাণ ঢেউ সারা শরীর জড়িয়ে আছে, টানছে, আলো আঁধারি ঘরের মেঝেতে শুয়ে আমি আর সে, মাঝ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে হয়তো শেষ ঘুমন্ত তুলোর রাত।
AMIT SARKAR
উত্তরমুছুন