কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০

হাসান মোস্তাফিজ

 

কালিমাটির ঝুরোগল্প ৯০


ঋণ


স্পীডবোটে উঠতে গিয়েই পড়ে গেলাম পানিতে। স্থানীয়রা হেসে উঠলো। চালক   বলল, ভাই তাড়াতাড়ি উঠুন, না হলে সাপ কামড় দিবে।

আমি উঠতে পারছি না। ওদিকে কামড় খাওয়ার ভয়। মাঝারি উচ্চতার মাধুরী গোঁফসহ এক ভদ্রলোক বোটে বসেছিলেন। তিনি এবার লুঙ্গিটা গিঁট মেরে বেঁধে  পানিতে ঝাঁপ দিলেন। আমাকে উদ্ধার করতে শরীরের সমস্ত ভর নিয়ে নিলেন নিজের উপর।  

বোটে উঠতেই আমি দেখলাম কিছু সাপ তরঙ্গরূপে পানিপথের সমান্তরালে চলছে। আমি ভদ্রলোককে ধন্যবাদ দিলাম। কিন্তু উনি মুখ কুঁচকে বললেন — আমি বিনিময়ে বিশ্বাসী।

বেশ, সিগারেট বাড়িয়ে দিলাম। নিলেন না। ক্যাশও নিতে রাজি হলেন না।

আমি শেষে বললাম, কী চান তাহলে?

ততক্ষণে আমরা ঘাটে পৌঁছে গেছি। লোকজনও কম। উনি হেসে বললেন,  আপনার স্পার্ম।

রোম খাড়া হয়ে গেল আমার। আমি কমবয়সী ছেলে। সেই অনুযায়ী মাস্টারবেশন করেছি অনেকবার। বহু স্পার্ম তাতে অপচয় হয়েছে। কিন্তু উনি তা দিয়ে কী করবেন?

ভদ্রলোক কথা বাড়ালেন না। রুক্ষ গলায় বললেন, দেখুন আমি আপনাকে বাঁচিয়েছি। আপনি এখন আমার কাছে ঋণী। ঋণ শোধ করতে চাইলে যা চাই তা দিন। নইলে আজীবন ঋণী থাকুন।

আমি বললাম, বেশ। ঠিকানা দিন।

ঘুম ভাঙলো যখন তখন নিজেই লজ্জা পেলাম। প্রথম কোন হোটেলে থেকে এমন হল আমার। ঘুমের মধ্যে আমি সাপকে স্বপ্নে দেখেছি। সাপ দেখেই যে ঘোরের ভেতর মাস্টারবেশন হয়ে যাবে, ভাবতেই পারিনি। আমি রুমসার্ভিসকে ফোন করলাম। বললাম ক্লিনার পাঠাতে।

নিজে সাফ হয়ে যখন একটা সিগারেট ধরিয়েছি, তখনি ক্লিনার আসলো।

স্যার, আমাকে চিনতে পারছেন?

আমি চমকে উঠলাম।

হ্যাঁ, চিনেছি।

আমার বাসায় আপনাকে আর আসতে হবে না। এতেই হবে।

ভদ্রলোক চাদর পরম মমতায় মুড়িয়ে নিয়ে হাসিমুখে চলে গেলেন।  

 


1 কমেন্টস্: