কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

তৌহিদা ইয়াকুব

 

কবিতার কালিমাটি ১২১


পুরাতন

 

বিনষ্ট সব কিছুর পেছনে

যে আলো, প্রকট উদ্ভাস, মুদ্রায় মনোভঞ্জন

রসাতলে চলে গেছে সব সন্দেহ, বাদ-বিবাদ

তাতে অনায়াস স্খলন এলে কত দূর যাবে?

 

বরং রেখো দ্বান্দিক শব্দগুলো,

উন্মুল বাসনার চারধারে

দ্বিমত দানের গুটি।

জানো তো সহজ নয়,

প্রস্তর,

কণ্টক,

চতুর ছলা

দুপুরে,

অবেলায়,

সমীহ করেনি জীবন তোমাকে,

ঝরে গেছে অবসিত এক একটি বিন্দু।

 

খাটের নিচে ভাঙা সুটকেস থেকে

ন্যাপথোলিন মাখা আম্মার কুশি কারুকাজ

আতুড় গন্ধ ছড়ায়। 

সমকালীন হতে পারিনি

অয়নান্ত থেকে ফিরি পুরাতন

মৌসুরির ঢেউ প্রবাহ থেকে দূরে

শান্ত জলে মাছেদের অল্প সাঁতার দেখি,

দেখি ছোট ছোট নদী

স্রোতের ঢেউ নিয়ে উঠোন পেরোতেই

ঘরময় বেজে উঠে নির্জরা ব্যালাড।

 

কুয়াশায় থেমে থেকে

 

কুয়াশার স্টেশনে থেমে আছি টুকরো হয়ে

আমারই ভগ্নাংশ নিয়ে বিপরীতগামী ট্রেন

ছেড়ে গেছে প্ল্যাটফরম।

 

প্রতিরূপ অক্সিজেনের শুস্রূষা নিয়ে

সম্ভাষণে বাড়িয়ে রেখো না হাত-

 

আমি আরো দূর হেঁটে যাব কুহেলিকায়

পাথরে হোঁচট খেয়ে রক্ত ঝরাব

মাথার ভেতর সহস্র পিঁপড়েরা

উপুর করে ঢেলে গেছে বিষ

কুঁকড়ে যাওয়ার মতো ব্যথা নিয়ে আরো একটা দিন

এইতো প্রায় শেষ হয়ে এলো।

 

এভাবেই বেদনাময় কিছু স্মরণের কাল

জমা করে রাখি। 

একদিন প্রিয়তম মানুষের কাছে বসে

টেনে নেব জলকণা উড়া বিষন্ন দিন।

না হয় ফিরে যাব  

স্বস্তির মাথা নিয়ে আমার স্বরূপ

যেখানে তুমি সাজিয়ে রেখেছো —

 

সুদিনের দিকে

 

আয়োডিনের গন্ধের ভেতর শুয়ে শুয়ে

মনে করি আমাদের দাম্পত্য ও সন্তানের মুখ

চোখের জলের মতো মমতায় গড়াগড়ি সুখ

আসক্তির ঘরদোর আমাকে আকুল টেনে রাখে।

আমি ফিরি  সংকটে, ভাঙা সাঁকোর মতো

দুলে উঠে দিন-রাত্রির আবর্তন।

 

রক্তমাংসে  লেপ্টে থাকা  ব্যথার কথা, 

আমি ভুলে যেতে চাই, গহনে গ্রথিত বন্ধন খুলেছে?

এবার এসো শব্দহীন সখা,আলিঙ্গনের মাঝে,

এই আমি নির্ভরতায় নুইয়ে আছি।

প্রেম, আনুরাগ ও অহম  ছড়িয়ে রেখেছে

শান্ত জলের প্রত্যায়ণ,

তৃষিত কোরকের চারুকুঞ্চ।

হে সোমলতা, সুনাঝুড়ি আলোর সুদিন

আমাকে নেবে?

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন