কবিতার কালিমাটি ১২১ |
হাতছানি, বিচ্ছেদ আর রক্তমুঞ্জরী
(১)
মাঝে মাঝে প্রতীক্ষিত প্রশ্ন ফিরে আসে, সাথে সাথে ফিরে আসে তার মৃত্যু কামনা, হাত পাতে, দাও, এখানে শূন্যস্থান, কিছুটা স্পেস, এক নো ম্যান্স ল্যান্ড, বয়ে যাওয়া জলের দাগ, মৃত স্মৃতি নিয়ে সেই যে প্রতীক্ষ্যমাণ মহাশ্মশান, সেখানে পুঁতে রেখেছে আধার, যে প্রথম খুঁজে পাবে সেই পাবে হাতছানি, বেলাসঙ্গমে যখন রাত কিছুটা দিন চুরি করে আর দিন কিছুটা রাত, রক্ত চুরি করে আমাদের রক্তাক্ত লোভ, তখন সদাগর ঠিক ঠিক দাম ফেলে, কত ভাগ গেলে কতটা ফিরে আসবে, কতটা শেষ হলে ফিরে পাবে চুরি যাওয়া নিষিক্ত হাতছানি, যার কাছে বিছানো রয়েছে প্রশ্নের প্রতিপক্ষ প্রশ্ন।
(২)
গতনিশি জাগরণে কেউ বলে গেছে আবার একবার সমস্ত সম্পর্ক পিছনে রেখে বেরিয়ে যেতে হবে, আমাদের প্রিয় পরবাসে, প্রিয় সন্ন্যাসে, উদাসীনতার হাত ধরে প্রিয় কারখানা দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাত বেড়ে দেবে বলে, তুমি তঞ্চিত রক্ত আর ঘাম, স্মৃতি থরথর সূর্যাস্ত, অসম্ভব মৃত্যু পিপাসায় কান্না আর সম্ভোগ সংমিশ্রণ করতে চাইছো, প্রতিকণা শুক্রাণু অতীত থেকে তার স্মৃতি বয়ে আনছে, হাতছানি বয়ে আনছে লোভ, সে বলেছে বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে, খুব বেঁচে থাকতে, ছুঁতে ইচ্ছে করে, যদিও জানি এ মৃত্যু অন্য কারো।
(৩)
শেষ পর্যন্ত দেখা গেল শাখাপ্রশাখায় অনন্ত পথ চলার পরেও গুঁড়িতে যে ফাটল রয়েছে তা এক হাতছানি, নিরন্তর ডাকছে নিজেরই শবসাধনায়, আসো জ্বলে খাক হও, আগুন পাখির ডানা দেখা গেছে দিগন্তব্যাপী, সে ব্যর্থতার মাঝ দিয়ে উড়ে যাচ্ছে, বলে যাচ্ছে অগুনতি জীবনের মাঝে একটি মাত্র মৃত্যু সব তুচ্ছ করে গেল, তুমি তাও তুমিকে কাঁধে করে এক বিস্ময়ের সামনে এসে দাঁড়ালে, প্রশ্ন করলে, কেন প্রেম? কেন বিচ্ছেদের মুখাপেক্ষী? আমিও প্রতিপক্ষ রাখলাম প্রেম আর বিচ্ছেদ যদি রক্তবীজ হয়, হাতছানি কি রক্তমুঞ্জরী নয়?
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন