কবিতার কালিমাটি ১১৮ |
চিরকুট
বিকেলের পায়চারি
সাঙ্গ হয় প্রতিদিন কিছু লিখে রেখে
আধবোজা পুকুরের
পাশে পিপুল গাছের ঘরবাড়ি
সঙ্গে ধীবরের
হাসিঠাট্টা – পমফ্রেট মৌরলার সন্ধ্যা নেমে আসা
মনুষ্যকুলের
কথা কতটা লিখেছ?
বিকেলের হাঁটাহাঁটি
শেষ হলে তুমি ফাঁকা চেয়ারে তখন –
কী এক বিস্ময়ে
যেন একা হয়ে গেলে
আশেপাশে কেউ
নেই তিনটে কল্পিত সাদা খরগোস ছুটোছুটি করে
ছাদ থেকে বারান্দায়
নিসর্গের পাশাপাশি আনন্দ উৎসব কতখানি
তুমি তো এঁকেছ
চিরকুটে
কিশোরবেলার
ছবি দস্যু সেজে লুকোচুরি খেলা
পায়চারি শেষে
শুধু লিখে রেখে যেয়ো
কতখানি ঝুঁকে
তুমি অদৃশ্য হয়েছ আজ কন্ঠজোড়া পুরাতনী গানে।
ঘুম
এদিক থেকে জল
শুষে নিচ্ছে সাদা ভ্যাবাচাকা খাওয়া পাইপ
দুটো শালিখেরও
তুমুল মজা হলো
ঝড়ের পূর্বাভাসে
তখনও কিছু লেখা ছিল না
তখনও গঙ্গার
ওপর একটা পুরনো ভটভটি ভাসছিল চুপচাপ
এ পারের রাতগাড়ি
স্টেশন ছেড়ে চলে গেছে বহুক্ষণ আগে
আকাশ বোবা হচ্ছে
– সাদা চুলের মানুষও বোবা
একটা কাঠের
পালঙ্ক দাও আজ
সবারই ঘুমিয়ে
পড়ার কথা আগামী সন্ধেবেলা।
অন্য কাহিনির কাছে
আনন্দটুকু যখন
নিয়ে যেতে চায়
হাসপাতালের
নীচে দু’পা পিছিয়ে তখন কিছু মনে পড়ল তোমার
শরতের ঘনঘোর
সন্ধ্যাবেলার কাহিনি যেন
কোনো এক নোটবুকে
লিখে রেখেছিল
হাঁটুর ওপরে
ছিল নিঃসঙ্গ উল্কির মতো শোকাকুল প্রণয়-লিপিকা
পুরোটাই যে
তোমারই সেই অভিভূত মৃত্যুবোধ –
এ কথা হাসপাতাল
অলিন্দে দাঁড়িয়ে বুঝেছিলে
বোঝোনি কেবল
সস্তা নোটবুক জুড়ে আঁকিবুকি
তুমি তো পেছনে
সূর্য ঢেকে হয়েছ সামান্য নীচু
কতটা লালের
আভা – তার চেয়ে ঢের
অসীম কুয়াশা
এসে ঢেকে দিয়ে গেল তোমাকেও
তবু জানতে না
সাদা হাসপাতালের ঠোঁট ফোলানোর মতো
উপহার হাতে
নিয়ে কীভাবে অশেষ করে দেয় হাহাকার!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন