পরিচালক কিম কি-দুক সততার সাথে সিনেমা বানাতে
চান
(কিম কি-দুক
মানব সত্ত্বার সর্বজনীন দিকটিকেই খোঁজেন)
(অনুবাদ: অদিতি
ফাল্গুনী )
কিম কি-দুক একজন কোরীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা যাঁর ছবিগুলো সম্ভবত বহির্পৃথিবীতেই বেশি জনপ্রিয়। ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূর্ঘটনা নিয়ে তাঁর নির্মিত সিনেমা ‘স্টপ’ সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে। মঙ্গলবার ‘কোরিয়ান ফিল্ম কমিশন’ প্রদত্ত হিসাব অনুযায়ী এই ছবিটি মাত্র ২৪১ জন দর্শক দেখেছেন। একই সময়ে কোরিয়াতেই কোন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কল্পিত দূর্ঘটনা নিয়ে বানানো সিনেমা ‘প্যান্ডোরা’ একই দিনে ১.৭৮ মিলিয়ন দর্শক দেখেছে এবং কোরিয়ার স্থানীয় বক্স অফিসে ছবিটি ১ নং অবস্থানে থেকেছে। ‘স্টপ’ ও ‘প্যান্ডোরা’- এ দুই ছবির টিকিট বিক্রির পরিমাণ তুলনা করা অনুচিত হবে যেহেতু কিম কি-দুক ছবিটি বানিয়েছেন মাত্র ১০ মিলিয়ন ইওন বা ৮,৫৪১ মার্কিনী ডলার ব্যয়ে আর ‘প্যান্ডোরা’ ছবির নির্মাণে খরচ হয়েছে ১০ বিলিয়ন ইওন বা ৮.৫ মিলিয়ন মার্কিনী ডলার। ‘স্পট’ ছবিটি যেখানে শুধুই একটি মাত্র ইন্ডি ফিল্ম হাউসে এবং ঘরে বসে অনলাইন প্লাস আইপিটিভিতে দেখার সুযোগ মিলছে, তখন ‘প্যান্ডোরা’ দেখানো হচ্ছে দেশ জুড়ে। যাইহোক, কিম তাঁর ছবির দর্শনের দিকে নির্দেশ করে সবাইকে বুঝিয়েছেন যে কেন তাঁর সিনেমা দেশের চেয়ে বহির্পৃথিবীতেই বেশি সমাদৃত।
“বহু বিদেশী সাংবাদিকরাই আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে কেন আমার ছবি কোরিয়ার চেয়ে বিদেশে বেশি সমাদৃত”, গত মঙ্গলবার মধ্য সিউলের ‘জোংনো’ নামে এক কাফেতে ‘দ্য কোরিয়া টাইমস’ পত্রিকার সাথে এক আলাপচারিতায় কিম কি-দুক একথা বলেছেন। “আমাকে তখন বলতে হয় যে হতে পারে আমার গল্পগুলো মানবসত্ত্বার সর্বজনীন দিকে আলোকপাত করাতেই বেশি মনোযোগী। সোজা কথায় আমি যেটা বোঝাতে চাইছি যে পৃথিবীর প্রতিটি জাতিই তার জনগণকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়, তবে আমরা বা কোরীয়রা নিজেদের বিষয়ে অধিকতর গর্বিত। যেহেতু আমাদের শেখানো হয় যে আমরা অন্যদের চেয়ে উন্নততর। কিন্ত আপনি যদি ভ্রমণ করেন এবং সারা পৃথিবী ঘুরে দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন যে প্রতিটি জাতিরই রয়েছে তার নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য এবং সেই স্বাতন্ত্র্যকে আমি আমার সিনেমায় অন্তর্ভুক্ত করতে ভালবাসিক”।
“কোরিয়ায় জনপ্রিয় সিনেমাগুলো জাতিগত গৌরবে পরিপূর্ণ এবং এসব সিনেমায় দেখানো হয় যে আমরা পৃথিবীর সেরা। কিন্ত আমার কৌতূহল হচ্ছে যে এমন দাবির আসলে বস্তগত নিরপেক্ষতা কতটুকু। আমার সিনেমা সারা পৃথিবীতেই দেখা হয় - দক্ষিণ আমেরিকা, রাশিয়া বা চীনে মানুষ এ কারণেই আমার ছবি দেখে যে আমি মূলত: মানব সত্ত্বার সর্বজনীন দিক নিয়েই কাজ করি”। কিম বলেন।
গত বিশ বছরে কিম কি-দুক ২২টি সিনেমা পরিচালনা করেছেন যার ভেতর ‘পিয়েতা’ ৬৯তম ‘ভেনিস ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল‘-এ ‘গোল্ডেন লায়ন’ জয় করেছে এবং এর আগে কিম ৬১তম ‘ভেনিস ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ তাঁর ‘থ্রি-আয়রন’ ছবির জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। কিমের ছবিগুলো ভীতিকর এবং অস্বস্তিদায়ক নানা দৃশ্য অসঙ্কোচে প্রদর্শন করে এবং তিনি তাঁর বক্তব্য প্রকাশে যতটা সম্ভব বাস্তববাদী হবার চেষ্টা করেন।
এই পরিচালক আরো বলেন যে সামনে তিনি ফ্রান্স, নিউ ইয়র্ক, লস এ্যাঞ্জেলস এবং এমনকি কাজাখস্থানের আলমেটিতে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন যাতে তিনি তাঁর সামনের সিনেমার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ সংগ্রহ করতে পারেন।
প্রশ্ন: দূর্ঘটনা নিয়ে কেউ একটি সিনেমা বানাতে চাইলে আশপাশে কত রকমের দূর্ঘটনার ঘটনাই ত’ আছে। আপনি বিশেষ ভাবে কেন ফুকুশিমার বিষয়েই আগ্রহী হলেন?
উত্তর: হারিকেন, বিশাল মাত্রার ভূমিকম্প বা ভয়ানক তুষারঝড়ের মত নানা ধরনের দূর্যোগই বর্তমানে আমাদের আশঙ্কিত করছে। কিন্ত একটি পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রে বিষ্ফোরিত দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের সংখ্যা ও ক্ষয়-ক্ষতির পরিসরটি একটু ভিন্ন। পারমাণবিক তেজষ্ক্রিয়তার ক্ষরণ আমাদের চোখে এই দূর্ঘটনার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে একটু পরেই ধরা পড়ে এবং সাথে সাথে ধরা পড়ে না।
অথচ একই সময়ে কোরিয়া ও চীনের মত দেশগুলো পারমাণবিক প্ল্যান্টের সংখ্যা
বাড়িয়েই চলেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত অনেক দেশই পারমাণবিক বিদ্যুতের উপর রীতিমতো
নির্ভরশীল। আমি এই ভয়ানক প্রবণতাটিকেই থামাতে চেয়েছি।
আমার ছবির দর্শক শুধু কোরীয় দর্শকেই সীমাবদ্ধ নয়। বরঞ্চ আমার আছে বৈশ্বিক
দর্শক শ্রেণি। একারণেই আমার সিনেমাটির ঘটনা ঘটেছে জাপানে এবং জাপানী অভিনেতারা এ ছবিতে
অভিনয় করেছেন।
প্রশ্ন: কিন্ত আপনার ছবিতে কিছু অস্বস্তিকর দৃশ্য আছে। যেমন, কোথাও কোথাও জাপানী কোন অভিনেতাকে দেখা যাচ্ছে কোরীয় কাপ ন্যুডলস খাচ্ছেন বা তাঁর কম্পিউটার কোরীয় ভাষায় সেট করা।
উত্তর: ‘স্টপ’ একটি স্বল্প-বাজেট চলচ্চিত্র এবং ছবিটির নির্মাণগত নানা ত্রুটি লক্ষ্য ও সংশোধন করার জন্য দরকারী একটি ‘আর্ট টিম’ নিয়োগ করার মত আর্থিক সামর্থ্য তখন আমার ছিল না। অবশ্য আমার আগের ছবিগুলোতেও এমন কিছু না কিছু ভুল-ত্রুটি থেকে থাকবে। তবু দর্শক এসব ভুল-ত্রুটি মেনে নেয় যেহেতু এই কাজগুলো কিম কি-দুকের। খুঁটি-নাটি নানা ডিটেইলেসর বদলে আমি সবসময়ই আমার মূল বক্তব্য প্রকাশে বেশি আগ্রহী।
প্রশ্ন: একা হাতে একটি দূর্যোগের সিনেমা বানানোর শক্তির দিকটি কি?
উত্তর: সত্যি বলতে এটাকে একটি ‘দূর্যোগ সিনেমা’ বলাটা আমার জন্য অস্বস্তিকর। প্রথমে আমি টোকিও শহরে ইস্পাতের মিনার ভেঙ্গে পড়ছে এমন দৃশ্য দেখানোর জন্য কিছু কম্পিউটার গ্রাফিক্সের কাজ করেছিলাম। কিন্ত পরে আমি দৃশ্যটি বাদ দিয়ে দিই, যেহেতু এটা বড্ড অপেশাদারী দেখাচ্ছিল। কাজেই আমি এই সিনেমাটি অনেকটা নাটকের আঙ্গিকে বানাতে চাইলাম। দেশ জুড়ে নানা ধ্বংস ও অর্থনৈতিক ক্ষয়-ক্ষতির কিছু দৃশ্য দেখানোর চেয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নি:সরিত তেজষ্ক্রিয়তার কারণে সাধারণ মানুষের মনের মানসিক পরিবর্তনকেই আমি আমার কাহিনীর উপজীব্য করলাম। সম্ভবত: এই ধারার ছবিতে আমি বড় গভীরে যেতে চাইলাম।
প্রশ্ন: দর্শকের কাছ থেকে সাধারণত: আপনি কী ধরনের প্রতিক্রিয়া বা মতামত পেতে ভালবাসেন?
উত্তর: একবার ‘য়্যুবারি‘তে একটি জাপানী চলচ্চিত্র উৎসবে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং সেখানে আমি ‘স্টপ’ নিয়ে গেলাম ও স্থানীয় দর্শক-শ্রোতাদের সাথে আমার কথা হলো। তাঁরা জানতেন যে আমার এই ছবিটিতে বাজেট কম এবং ছবিটির কিছু কিছু জায়গায় আরো উত্তরণ ঘটানোর বিষয় আছে। তবে তাঁরা এসব খুঁটি-নাটি বিষয় নিয়ে কথা তেমন বলেননি। বরঞ্চ তাঁরা এ বিষয়টিই ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছিলেন যে একজন কোরীয় পরিচালক জাপানে ঘটা একটি দূর্ঘটনা নিয়ে সিনেমা বানিয়েছেন যা কোন জাপানী পরিচালক বানাননি। এবং তাঁরা আশা করছিলেন যে এই সিনেমাটি তাঁরা তাঁদের দেশে দেখাতে পারবেন।
প্রশ্ন: আপনার ছবিগুলো মুখ্যত: মূল চরিত্রগুলোর মনস্তাত্ত্বিক দিককে তুলে ধরে। কেন?
উত্তর: গত বিশ বছর ধরে আমি সিমেনা বানাচ্ছি। তবে, অন্তিমে এই সব সিনেমাই মানবীয় কিছু গল্প বলে। আরো যেহেতু আমি নিজেই আমার সিনেমার অর্থলগ্নীকারী, সিনেমাগুলোর আয়তন আমি খুব বেশি বাড়াতে পারিনি। সিনেমার কারিগরী নানা দিক, যেমন, স্পেশাল এফেক্ট বা রূপসজ্জায় আমি খুব বেশি খরচ করতে পারি না বলে আমার কাজগুলোর আবেদন প্রায়ই একটু নাটকীয় বা চরিত্রগুলোর উপর আলোকসম্পাতেই সীমাবদ্ধ থাকে। টাকা ফিল্ম বা সিনেমার পরিসরকে বড় করে। তবে বড় আকারের বিনিয়োগ ছাড়া একটি ছবির পরিসর আর একটি উপায়েই বাড়ানো যায় : সেটা হচ্ছে কীভাবে আপনি আপনার চরিত্রগুলোর আবেগকে একটি অর্থপূর্ণ উপায়ে গঠন করছেন। সুতরাং, আপনি যদি আমার সিনেমা দেখেন, তবে আপনাকে আমার ছবির বাণীকে গ্রহণ করতে হবে।
প্রশ্ন: আপনার সিনেমা প্রায়ই নানা ভয়ানক ও অস্বস্তিকর দৃশ্য প্রদর্শন করে। কেন আপনি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে এমনটা প্রদর্শন করেই চলেছেন?
উত্তর: আমি আমার ছবিতে কোন মিথ্যা কথা বলতে চাই না। প্রতিবারই যখন আমি একটি নতুন সিনেমা রিলিজ করি, আমি যেন একটু হলেও নিজের উত্তরণ ঘটাই এবং আমি মনে করি যে ওসব দৃশ্য খোলাখুলি ভাবে দেখানোর আমার অধিকার আছে। সমাজে নানা ‘স্বস্তিদায়ক‘ ছবি ত’ আছেই। আমার ছবি যদি শুধু একটি ছোট্ট দর্শক বৃত্তই দেখে থাকে, সেক্ষেত্রে আমি ত’ চাইবই যে এই ছবিগুলো দিয়ে আমি যেসব বিষয়ে জোর দিতে চাই, সেটা তাঁরা দেখুক। আমার সিনেমায় আমার আপন ভুবন বিধৃত এবং সেটাই গল্পের কেন্দ্র। সময় বয়ে চলার সাথে সাথে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ভাবে আমার সিনেমার ব্যাখ্যা করতে পারে এবং সিনেমা দেখার পর দর্শক নিজের কাছে ফেরার সময়ও তাঁর মত করেই আমার সিনেমার ব্যাখ্যা করতে পারেন।
প্রশ্ন: একটি সিনেমা বানানোর সময় আপনার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কোনটি?
উত্তর: সত্যি। একটু আগেই আমি এটা বলেছি। কিম কি-দুক হলেন কিম কি-দুক। পুরো বিষয়টিই হলো সততার সাথে একটি ছবি বানানো হচ্ছে কি না। যে মূহূর্তে আমি দর্শকের স্বাদ অনুসারে আমার ছবিটি বানাতে বা বাজারজাত করতে চাইব এবং জনপ্রিয় অভিনেতাদের অভিনয়ে ডাকব, পরিচালক হিসেবে তখনি আমি হারিয়ে যাই এবং সিনেমা থেকে আমার সত্যও হারিয়ে যায়। আমি কিন্ত আমার বক্তব্যকেই তুলে ধরতে চাই। যেহেতু আমার বানানো সিনেমাগুলোয় আমি নিজেই নিজের হৃদস্পন্দন শুনি।
কিম
কি দুকের এই আলাপচারিতাটি কোরীয় পত্রিকা ‘‘দ্য কোরিয়ান টাইমস‘-এর ‘শিল্প ও বিনোদন‘
পাতায় ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬ তারিখে প্রথম প্রকাশিত
হয়। অন্তর্জাল থেকে সেটারই বঙ্গানুবাদ এখানে পাঠকের জন্য প্রকাশ করা হলো।
(কিম কি দুক ১৯৬০ সালের ২০শে ডিসেম্বর
দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল ড্রপ আউট কিম কারখানায় শ্রমিক ও সেনাবাহিনীতে
নিচু পদে কাজ করে পরবর্তীতে ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত প্যারিসে সড়ক অঙ্কণ বিষয়ে শিক্ষা
গ্রহণ করেন করেন। এরপর নিজ দেশ দক্ষিণ কোরিয়াতে এসে শুরু করেন চিত্রনাট্য লেখার কাজ
এবং ১৯৯৫ সালে কোরিয়ান ফিল্ম কাউন্সিল কর্তৃক আয়োজিত এক প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার
পান। পরের বছর তিনি ক্রোকোডাইল নামক একটি স্বল্প বাজেটের চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন।
২০০০ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর ছবি রিয়্যাল ফিকশন ২৩তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে
জায়গা করে নেয়। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সামারিটান গার্ল
চলচ্চিত্রের জন্য এবং ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ৩-আয়রন চলচ্চিত্রের জন্য তিনি সেরা পরিচালকের
সম্মানে ভূষিত হন। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে পিয়েটা নামক তার চলচ্চিত্রটি ভেনিস, বার্লিন ও
কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্রের সম্মান লাভ করে এবং ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন
লায়ন পুরস্কার লাভ করে। জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক দূর্ঘটনার প্রেক্ষিতেও সিনেমা নির্মাণ
করেছেন তিনি। তবে তাঁর সব কীর্তি ছাপিয়ে গেছে জেন বৌদ্ধ দর্শনের বাণী সম্বলিত স্প্রিং,
সামার, অটাম, উইন্টার... এ্যান্ড স্প্রিং সিনেমাটি। মাত্র ৪৪ বছরে এমন গভীর আত্মিক
দর্শন সম্বলিত সিনেমা নির্মাণ সত্যিই অভাবিত। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর লাটভিয়ায় তাঁর
শেষ ছবির শ্যুটিংয়ের কাজে গিয়ে কোভিডে আক্রান্ত
হয়ে মাত্র ৫৯ বছর বয়সে এই অমিত প্রতিভাবান চলচ্চিত্রকারের অকাল মৃত্যু ঘটে। ‘কালিমাটি’-র
পাঠকদের জন্য জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক দূর্ঘটনা
নিয়ে ‘স্টপ’ সিনেমা নির্মাণের পর ‘দ্য কোরিয়ান টাইমস’ পত্রিকার সাথে কিমের আলাপচারিতার
অনুবাদ তুলে ধরা হলো।
২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমায় ঘটা পারমাণবিক দূর্ঘটনার প্রেক্ষিতে কিম কি-দুকের চলচ্চিত্র ‘স্ট’’ সারা পৃথিবীতে প্রথম প্রদর্শিত হয় ২০১৫ সালের ৯ই জুলাই তারিখে। এই সিনেমার কাহিনী এক তরুণ জাপানী দম্পতিকে ঘিরে আবর্তিত। বধূটি যখন গর্ভবতী, তখনি ফুকুশিমার দূর্ঘটনা ঘটে। তেজষ্ক্রিয়া বিষ্ফোরণের প্রভাবে গর্ভবতী মেয়েটির সন্তান পঙ্গু হয়ে জন্ম নিতে পারে। এখন কি তবে এই দম্পতি নব সম্ভাবনাময়ী মায়ের গর্ভপাত ঘটাতেই সম্মত হবে? এই মানসিক দোটানা ও অস্থিরতায় একটা সময় দুজনেই যেন উন্মাদ হয়ে পড়ে।)
অদিতি ফাল্গুনী
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন