কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২

সোনালি বেগম

 

কালিমাটির ঝুরোগল্প ১০৮


ইন্টারোগেশন

বেশ কয়েকদিন টানা বৃষ্টি হল। আজ ঝলমলে রোদ উঠেছে। গ্যারাজে একটা লাল রঙের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ইন্দিরাপুরম থানার শিপ্রা সানসিটির একটা হাউজিং কমপ্লেক্সের দশতলার ফ্ল্যাটে থাকত ভিক্টিম মেয়েটি, নাম কৃতিকা। কৃতিকার ডেডবডি আজ সকালে পাওয়া গিয়েছে আবাসনের গেট থেকে একটু দূরে পার্কের ঘাসজমিতে। কেসটার চার্জ নিয়েছে ইন্দিরাপুরমের ওসি নিশান্ত সিং। পাঞ্জাবের মানুষ। গভীর শ্বাস ফেলে তিনি বলে ওঠেন, ‘একটা তরতাজা বাইশ বছরের তরুণী, এরকম নিষ্ঠুরভাবে খুন হয়ে গেল!’

কৃতিকার কাঁধে ক্লান্ত মাথা রেখেছে তার বয়ফ্রেন্ড নীল। আলো-অন্ধকার  স্বর্ণজয়ন্তী পার্ক। নিঝুম। ফোনে এলোমেলো আঙুল ছোঁয়াচ্ছে কৃতিকা। স্থানীয় একটি কাগজের নিউজ-রিপোর্টার সে। এলোপাথাড়ি গুলির শব্দে চমকে উঠেছিল ওরা দুজন। কয়েক মুহূর্তের জন্য ওরা লুকিয়েছিল শিমুল গাছের পেছনে। কেন গুলি চলছে? কারা গুলি চালাচ্ছে? কিছু বোঝার আগেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল কৃতিকার শরীর।

নীলকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই খুনের একমাত্র উইটনেস সে। আবার একটানা বৃষ্টি হয়েই চলেছে। রেনকোট পরিহিত একটা শরীর রাস্তায় উদভ্রান্তের মতো ছুটছে। পেছনে পুলিশের ভ্যান।

ইন্টারোগেশন রুমটাই ওসি নিশান্ত সিং গম্ভীর গলায় জানতে চান, ‘নীল, কৃতিকার খুনের সময়,  তুমি তো ওর সঙ্গেই ছিলে। তাই না?’

হালকা গোঙানির শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা গেল না।

‘মাথায় লাঠির বাড়ি পড়লে গড়গড় করে সব বেরিয়ে আসবে, স্যার’ পুলিশ কনস্টেবল পাপ্পু যাদব লাঠি হাতে অস্থির হয়ে ওঠে।

‘প্রোমোটারের লোকেদের সঙ্গে তোমার দহরম-মহরম বেশ ভালোই বলে শুনেছি। তা কৃতিকাকে খুন হতে হল, কেন?’ নীলের কাঁধ ধরে ভীষণ ঝাঁকুনি দিতে থাকেন তিনি। জ্ঞান হারিয়ে ফেলে নীল। নাক থেকে রক্ত পড়তে থাকে তার।

কৃতিকার হোয়াটসঅ্যাপের সমস্ত মেসেজ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকলেন ওসি নিশান্ত সিং।

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন