কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২১

দুরদানা মতিন

 

কবিতার কালিমাটি ১০৫


শূন্যতা নিয়ে তিনটে কবিতা

 

(১)

 

অস্থির বর্তমান, নিরন্তর কম্পমান,

সতেজ, নিটোল, উৎসুক, সৃষ্টিতে

উল্লসিত, কিংবা ধ্বংসে উন্মাদ নটরাজ;

চোখের পলকে শ্লথ, ন্যুজ, শূন্য দৃষ্টি,

দিকভ্রান্ত নাবিক আর সুতো কাটা ঘুড়ি।

স্মৃতিগুলি ওলোটপালট - এবেলা ধুসর,

ওবেলা প্রখর; সম্পর্কদের নিত্য অদল

বদল, দেয়ালে ভেসে ওঠে দরোজা,দরোজা

খুললেই নদী, নদীতটে শৈশবের আঁকিবুকি;

দন্তহীনমুখে অনাবিল হাসি; গন্তব্য নেই,

অথবা গন্তব্যের ব্যাপারটাই অবান্তর যেনো;

সময় এখন উল্টো নদীর সাথে ভেসে চলা।

 

()

 

চারপাশে ছড়ানো অজস্র সম্ভাব্য শিল্প;

রাস্তা থেকে অল্প দূরে ইটভাটার ওপর সর্পিল

ধোঁয়া, আরো দূরে ধূসর নীল পাহাড়ের সারি

দাঁড়িয়ে থাকে মৌনি সন্তদের মতো; রাতের

আকাশে হেলান দেয়া কালচে নিঃসঙ্গ বাড়ির

ভেতর আলো ছায়ার খেলা, রহস্যের

আনাগোনা; সরাইখানায় জুয়াঘরে রাতভর 

তাস পেটায় নির্ঘুম জুয়ারি; টুকরো টুকরো

চিত্রকল্পগুলো থরথর কাঁপে মুক্তির প্রতিক্ষায়,

অমরত্বের আকাঙ্ক্ষায়। আর আমি বয়ে যাই,  

বয়ে যেতে যেতে যেন শীর্ণ একটি নদী; ক্ষীণ

থেকে ক্ষীণতর আমি, তাদের মুক্ত করতে

পারি না। আদিহীন, অন্তহীন সময় সুঠাম,

অবিনশ্বর, আর আমি ফুরোতে থাকি

বিনা কাজে, অকাজে; সীমাবদ্ধতার গ্লানিতে

আকন্ঠ নিমজ্জিত উদ্বিগ্ন আমি অপেক্ষায়

থাকি এক ভয়াবহ শূন্যতার,

কোনো এক অনিবার্যতার।

 

(৩)

 

মৃত মানুষের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর

হয়, তারা ভেসে থাকে, উড়ে বেড়ায়;

প্রিয়জনের পাশে বসে থাকে শঙ্কাহীন;

তারা মৃত, তাদের সময় অশেষ, অন্তহীন;  

নিষিদ্ধ গোধূলি এলাকায় তাদের বসবাস।

কাঠের দরোজাটা কি কিঞ্চিত ফাঁক হল?

কারুর ছায়া কি পড়লো, নাকি সে কল্পনা?

সেই দুটি চোখ, স্মৃতি জমা করছিল নিভে

যাওয়ার আগ পর্যন্ত; সে তো এখন ধুলো,

বাতাস, নদীতে বয়। জলে ভরে যায় দু’চোখ;

আহ্! নি:শ্বাসে ভরে নেই অজানা ঘ্রাণ।  

কল্পনাতেই খুঁজে নেই সত্য যতদিন বেঁচে

থাকি, আর অস্তিত্ব বিলীন হবে যেদিন, যদি

একান্তই বিলীন হয়, তবে জেনো কল্পনা আর

স্বপ্নদের প্রয়োজন রইবে না আর।

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন