কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২১

শান্তা সাবরিনা

 

কবিতার কালিমাটি ১০৫


মৃত নদী

 

সেদিন শয়তানের ইশারার বাহককে অনুসরণ করে

খুলেছিলে তাঁতীর বুনন

প্রতিটা সুতোর ঘ্রাণে নিঃশ্বাসের ভারত্ব বাড়ছিলো

হঠাৎ'ই আবেদনময়ীর শরীর মৃত নদীর মতো থেমে গেলো

অথচ, তুমি সৃষ্টিকর্তার শিল্পের সাগরে ডুবে যেতে চেয়েছিলে

 

তীব্র আগ্রহ নিয়ে খুঁজে খুঁজে দেখলে, তার বুকে কোন হৃদয়ই নেই

কেবল আবদ্ধ সময়ের দীর্ঘশ্বাস আর হাজারটা গোখরোর ফোঁস ফোঁস আওয়াজ।

 

তুমি তবুও প্রাচীন বীণ তুলে নিয়ে  মরা নদীতে সাপুড়ে হয়ে গেলে।

 

আত্মঘাতী

 

প্রথম টানেই প্রাণ পেয়েছিলো মরা আগুনের ফুলকি

ধোঁয়ার ঝর্ণা নেমে এসেছিলো তোমার কামুক ঠোঁট বেয়ে

একপায়ে ভর দিয়ে ঐ কালো ঠোঁটের খুব কাছে গিয়ে

প্রাণভরে শ্বাস নিয়েছিলাম সেদিন

 

তোমার মনে আছে?

 

কলিজা পোড়ার স্বাদ নিয়েছিলে তুমি, আমি, সাথে নিকোটিনও।

মরণের এতো আগ্রহ দেখে তোমার বিস্ময় জেগেছিলো

কপালের ভাজে জেগে উঠেছিলো প্রশ্নবোধক চিহ্ন

 

এতো কাছে এসে নিঃশ্বাসের সুষম বণ্টন না হলে, দহনে সমতা না এলে কী প্রেম হয়?

প্রশ্নের উত্তরে দাঁড় করিয়েছিলাম প্রশ্নকে।

 

তোমার মনে আছে?

 

চাইনি, আমাকে খুন করতে তুমি আত্মঘাতী হও

তুমি বরং খুনী হলেই পারতে।

 

ভাবনার বুদ্বুদ

 

সূর্যের বেখেয়ালে টুকরো টুকরো রোদ ছিটালো কাঁচা ঘুমে

প্রতিশোধের থু থু ছিটাতে যাচ্ছিলাম আমিও

আহা! গত রাতের পিনিকটা এখনো লেগে আছে যেন!

বিদেশি খাঁটি মদ বলে কথা

এখন দু'টান হলেই যুতসই।

হাতড়াই বালিশের তলা, হাতে পাই রুপোর কলম

হাতড়িয়ে নিজের খোলস, পেয়ে যাই অনধিকার বিছানা।

 

এই ঘর, মুঠো মুঠো আদুরে সবুজ, ডাকনামে চিঠি

অভিযোগ বাক্স, প্রিয় সব বই, কাঙ্ক্ষিত সকাল...

এতো আমার চু্রি যাওয়া ভাবনার ফেনা হতে উড়ানো বুদ্বুদ।

আশ্চর্য! কোথাও কোন কবিতা নেই।

আড়াল থেকে প্রসারিত চির চেনা ছায়াটি

ছুঁড়ে দিলো প্রশ্নের তীর-

"এখনো কি কবিতা লেখো?"

 

অথচ আমি জানতাম,যে পথ পড়ে আছে মর্মের নিগূঢ়ে

তার আমূল পরিবর্তন হয়েছে।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন