কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২১

পায়েল মণ্ডল

 

ইউলিসিসের এম’ইন্টোস…




 (১)

‘I’ve put in so many enigmas and puzzles that it will keep the professors busy for centuries over what I meant, and that’s the only way of ensuring one’s immortality.’

এই উক্তিটি করেছিলেন আইরিশ লিখিয়ে জেমস জয়েস তাঁর নিজের লেখার উপর। কোন লেখক হয়তো নিজের লেখা নিয়ে এমন উন্নাসিক মন্তব্য করেননি যা জয়েস করেছেন। নিজের প্রতিভার উপর তাঁর ছিল পূর্ণ আস্থা আর তাই তিনিই বলতে পারেন এমন ভাবে। শতবছর ধরে প্রফেসরদের ব্যস্ত রাখতে তাঁর মাত্র দুটো উপন্যাসই যথেষ্ঠ। ইউলিসিস এবং ফেনিগ্যান্স ওয়েক। ইউলিসিস লিখতে তিনি সময় নেন আট বছর (১৯১৪-১৯২২) আর ফেনিগ্যান্স ওয়েক লিখতে ১৭ বছর (১৯২২-১৯৩৯)। প্রথম উপন্যাস শতবছর আর দ্বিতীয় উপন্যাস ফেনিগ্যান্স ওয়েক তিনশ বছর প্রফেসরদের ব্যস্ত রাখবে বলে ধারণা করা হয়। তাঁকে দুর্বোধ্য ভাষায় লেখার জন্য দোষ দেয়া হয়। শতাব্দীর দুর্বোধ্যতম দুটি উপন্যাসের লেখক তিনি।

গত ৯৪ বছরব্যাপি ইউলিসিস পাঠকদের কাছে উপন্যসটির একটি চরিত্রের রহস্য নাড়া দিয়ে যায়। ‘Man in the macintosh!’  জুন ১৬, ১৯০৪ সালের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নায়ক ব্লুম যাকে একাধিকবার দেখে। এই ব্যক্তি দেখা দেয় কিন্তু কারো সাথে কোন কথোপকথন হয় না। ম্যাকিন্টোসম্যানকে প্রথমে দেখা যায় উপন্যাস এপিসোড হেইডসে মিস্টার ডিগন্যামের অন্তষ্টিক্রিয়ায় যেখানে ব্লুম অপর এগারোজন ব্যক্তির সাথে উপস্থিত ছিলেন। ব্লুমসকে নিয়ে উপস্থিত মানুষের সংখ্যা ছিল বারোজন আর তেরোতম ব্যাক্তটি হলো ম্যাকিন্টোসম্যান যে সংখ্যা তেরোর মত রহস্যময়।

‘Now who is that lankylooking galoot over there in the macintosh? Now who is he I’d like to know? Now, I’d give a trifle to know who he is. Always someone turns up you never dreamt of.” This lankylooking galoot’s presence, Bloom notes, turns the dozen mourners into a group of 13 (“Death’s number,” Bloom thinks, even if he admits it’s a “silly superstition”)’. -ইউলিসিস।

ডেইডস এপিসোডে ডিগন্যামের লাশ যখন সমাধিতে নামানো হচ্ছিল ঠিক তখন কফিনের উপর দিয়ে একজন লম্বা ছিপছিপে মানুষেকে দেখা যায় দূরে বাদামী রঙের লম্বা কোটে। ব্লুম মৃত ডিগন্যামের আত্মার শান্তির জন্য চ্যাপেলে মন্ত্রপাঠের আসরে তাকে দেখেনি। অথচ ওর উপস্থিতি ব্লুমের চোখে ধরা দেয় কবরস্থানে। তবে কি সে বাস্তব না ঘোরের মাঝে দেখা কোন অবাস্তব অবয়ব? ব্লুম ভেবে পায় না।

ম্যাকিন্টোসম্যান ইউলিসিসের অন্য এ্যপিসোডগুলোতে ঘুরেফিরে আসে তাকে দেখা এক ঝলক আবার হারিয়ে যায়, তাঁর চিন্তার প্রবাহ বর্ণিত হয় না, সে কারো সাথে ইন্টারএ্যাক্ট করে না। প্রথম প্রথম মনে হচ্ছিল ম্যাকিন্টোসম্যান ব্লুমের ভ্রম কিন্তু হাইন্স ডিগন্যামের অন্তষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত অতিথিদের নাম পত্রিকায় দেবার জন্য তালিকা প্রস্তুত করার সময় জিজ্ঞাসা করে তেরো নাম্বার অতিথির নাম যাকে হাইন্সও দেখেছে। হাইন্সের প্রশ্ন ছিল এমন-

‘that fellow in the, fellow was over there in the…’ উত্তরে ব্লুম বলে-  ‘Macintosh. Yes, I saw him.” Hynes scribbles down the name “M’Intosh!’

ব্লুমের উচ্চারিত নাম হাইন্স তালিকায় লেখে – ‘এম’ ইন্টোস!’  হাইন্সের যখন ব্লুমকে বলে সেও তাকে দেখেছে তখন ব্লুম বিশ্বাস করতে শুরু করে যে এম’ইন্টোসের অস্তিত্ব রয়েছে।

হেইডসের কয়েক এপিসোড পরে ‘ওয়ান্ডারিং রক’ এপিসোডে আবারো বাদামী লং কোট পরা ‘এম’ইন্টোস’-কে দেখা যায় ফুটপাথ ধরে রুটি খেতে খেতে হেঁটে যেতে। : ‘A pedestrian in a brown macintosh, eating dry bread, passed swiftly and unscathed across the viceroy’s path.’

এবারো কিন্তু ব্লুম তাকে দেখে। ‘সিরেন’ এপিসোডে পাবে গান শুনতে শুনতে এই রহস্যময় চরিত্র ব্লুমের চিন্তার প্রবাহে হানা দেয়। ব্লুম ভাবে -  ‘Wonder who was that chap at the grave in the brown mackin.’  এই প্যাসিভ চরিত্র ব্লুমকে আচ্ছন্ন করে রাখে তার অন্যসব চিন্তার সাথে। ‘সাইক্লোপ্স’ এপিসোডে এম’ ইন্টোস’ আবারো হানা দেয় ব্লুমের চিন্তায়, সে ভাবে –‘The man in the brown macintosh loves a lady who is dead.’  ব্লুমের এই ভাবনা যেন রহস্যের মাঝে রহস্য। এপিসোড ‘নওসিকাতে’ আবারো লোকটি ফিরে আসে ব্লুমের চেতনা প্রবাহে – ‘that fellow today at the graveside in the brown macintosh!’ ‘অক্সেন ইন দ্যা সান’ এপিসোডে আবারো আবির্ভাব হয়। আমরা দেখতে পাইনা যে সে কারো সাথে কথা বলছে বা দেখি না তার কোন এ্যাকশন। ব্লুম ছাড়া হাইন্স তাকে দেখেছে, আর দেখে পাঠক। কখনো তাকে ব্লুম চোখে দেখে কখনো বা সে ব্লুমের চিন্তার জগতে এসে উপস্থিত হয়। জয়েস এই রহস্যময় চরিত্রকে এমন ভাবে উপস্থাপিত করেন যে পাঠকরাও ধন্ধে পড়ে যান এই ভেবে যে হয়তো বা এম’ইন্টোস ব্লুমের ইলিউশন। ‘কিয়ার্কে’ এপিসোডে এম’ ইন্টোসের বর্ণনা ন্যারেটর নিজেই দেন এমন ভাবে! এবার সে কথা বলে। কিন্তু সেটা যেন বাস্তবে না ব্লুমের হ্যালুসিনেশনের মাঝে –

‘A man in a brown macintosh springs up through a trapdoor. He points an elongated finger at Bloom.

THE MAN IN THE MACINTOSH: Don’t you believe a word he says. That man is Leopold M’Intosh, the notorious fireraiser. His real name is Higgins.

BLOOM: Shoot him! Dog of a christian! So much for M’Intosh!

সব শেষে তাকে দেখা যায় ‘ইথাকা’ এপিসোডে। এখানে তাকে উপস্থাপিত করা হয় প্রশ্ন-উত্তর ভূমিকায়। ন্যারেটর নিজেই প্রশ্ন করছে আবারো উত্তরও দিচ্ছে – ‘What  selfinvolved enigma did Bloom risen, going, gathering multicoloured multiform multitudinous garments, voluntarily apprehending, not comprehend? Who was M’Intosh?’ এই প্রথম এম’ ইন্টোসের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। পাঠকরাও নিজের অজান্তে প্রশ্ন করে কে এই এম ইন্টোস?

(২)

রাশিয়ান কবি ও উপন্যাসিক ভ্লাদিমির নভোকভ একদা জয়েসের উপর লেকচারে তাঁর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন –‘আমরা কি জানি কে সে?’ প্রশ্নটা ছিল জয়েসকে নিয়ে না, প্রশ্নটা ছিল এম’ইন্টোসকে নিয়ে। তাঁর ছাত্রদের অবাক করে দিয়ে তিনি উচ্চারণ করেন –‘আমার মনে হয় আমি জানি কে সে!’ এটা ছিল একটা অপ্রত্যাশিত তথ্য। যে এম’ ইন্টোসকে নিয়ে এত জল্পনা কল্পনা তার পরিচয় নভোকভ জানেন শুনে ছাত্ররা নড়েচড়ে বসেন। শুরু হয় ‘কন্সপিরেসি থিওরি’।   নভোকভ হাটে হাড়ি ভাঙ্গেন। তিনি বলেন- ‘বাদামি লংকোট পরে ছিপছিপে মানুষটি আর কেউ নয় স্বয়ং লেখক (জয়েস)!’  নভোকভ তাঁর এই থিওরীর পেছনে যুক্তি তুলে ধরেনে এই বলে যে জয়েস একটা ক্লু দিয়ে গেছেন উপন্যাস ইউলিসিসের ‘সাইলা এন্ড ক্যারিবডিস’ এপিসোডে। ইউলিসিসের এই এপিসোডে আমরা দেখি স্টেফান লাইব্রেরীতে বসে শেক্সপিয়র নিয়ে আলোচনা করছে। স্টেফানের বক্তব্য ছিলো এমন – ‘Shakespeare himself is present in his, Shakespeare’s, works. Shakespeare, he says, tensely: ‘He has hidden his own name, a fair name, William, in the plays, a super here, a clown there, as a painter of old Italy set his face in a dark corner of his canvas…’ and this is exactly what Joyce has done.’

লেখক তাঁর সৃষ্টিকর্মে নিজেও থাকেন, সেটা ইচ্ছেয় বা অনিচ্ছায়। শেক্সপিয়রের  নিজের উপস্থিতির কথা জয়েস স্টেফানের মুখ দিয়ে শুনিয়ে দেন পাঠকদের। পাঠকদের জন্য তিনি ক্লু ছেড়ে যাচ্ছেন প্যারালাল প্যাটার্নে যেন এটার সাথে তুলনা করে পাঠকরা বের করতে পারে এম’ ইন্টোসের পরিচয়।

নভোকভ এমন তত্ত্ব দিতেই পারেন। কারণ নিজের লেখায় তাঁর উপস্থিতি লক্ষণীয়। তাঁর উপন্যাস ললিতা ও এ্যাডাতে ভিভিয়ান ডার্কব্লুম , অথবা ব্লাবডাক ভিনোম্রি – কিং, কুইন, নেভে। এরা দুজনই নভোকভ স্বয়ং। নভোকভ বলেন ব্লুম তার নিজের সৃষ্টিকর্তাকে দেখেছে। অর্থাৎ সে এম’ইন্টোসকে ওরফে জয়েসকে দেখেছে। নভোকভের প্রতিপক্ষরা বলেন স্টেফান ডেডেলাস যেহেতু জয়েসের অল্টার ইগো এম’ইন্টোস কখনো জয়েস হতে পারে না। তাহলে স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন ওঠে সে জয়েস না হলে কে সে? তাহলে কি ব্লুম যিশুর অবয়বে ঈশ্বর দর্শন করেছে? অজস্র ধর্মীয় তত্ত্ব হাজির করা হয় এই রহস্যের জট খোলার জন্য। সে কি জোসেপ? সে কি মুসা? নাকি ল্যাজারাস? বা শয়তান? এদের কেউ না হলে সে কি মৃত্যুর প্রতীক? এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা জয়েস স্কলারদের। কেউ কেউ মনে করে এম’ইন্টোস হার্মেস যে জিউসের বার্তাবাহক যে মৃত ব্যক্তিদের পথ দেখিয়ে পাতালে নিয়ে যায়। আর সেই জন্য ব্লুম তাকে প্রথম কবরস্থানের দেখতে পায়। হাইন্সের হিসেবে সে ১৩তম ব্যক্তি ছিলো মিস্টার ডিগন্যামের ফিউনারালে। আর এক কন্সপিরেসি থিওরী দেয়া হয় এই রহস্যময় চরিত্রকে নিয়ে। হতে পারে সে থিওক্লাইমেনোস, যে মহাকাব্য ওডেসির এক চরিত্র যে ভবিষ্যতবাণী করে রাণী পেনিলোপের পাণিপ্রার্থীরা মৃত্যুবরণ করবে। 

(৩)

মানুষটি বর্ষাতি পরে আছে কারণ সে মনে করে ডাবলিনে বৃষ্টি হতে পারে। অথচ  জুন ১৬, ১৯০৪ সালের সকাল থেকে রাত অব্দি কোথাও বৃষ্টির চিহ্নমাত্র নেই। এই দিনে উপন্যাস ইলিসিসের ডাবলিনে এম’ইন্টোস ছাড়া কাউকে বর্ষতি পরা অবস্থায় দেখা যায় না। কন্সপিরেসি থিওরির আর একটা থিওরি বলে এম’ইন্টোস হয়তো ডাবলিনারের চরিত্র মিস্টার ডাফি। এর পেছনে থিউরিস্টরা এই যুক্তি তুলে ধরেন যে, ক্যালিস্পো পর্বে এম’ ইন্টোস সম্পর্কে জয়েস বলেন – ‘loves a lady who is  dead!’ ডাফি যে মহিলাকে ভালোবাসতো সে মরে যায়। সে একজন স্বনির্বাসিত মানুষ। ন্যারেটরের ভাষায়- ‘outcast from life’s feast!’

ডাফি প্রেমে পড়ে মিসেস সিনিকোর সাথে যিনি ছিলেন বিবাহিতা। সে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায়। সবাই ভাবে সে আত্মহত্যা করেছিল। একটা ব্যাপার লক্ষনীয় যে  হেডস এপিসোডে ব্লুম চিন্তা করে মিসেস সিনিকোর কবরে প্রার্থনা করার জন্য। কবরস্থানে এম’ইন্টোসের উপস্থিতি মিস্টার ডিগন্যামের অন্ত্যষ্টিক্রিয়ার জন্য নয়। তার একটা বড় কারণ যে তাকে চ্যাপেলে দেখা যায়নি। ব্লুম তাকে দেখে কবরস্থানে। তাহলে কি এম’ইন্টোস তার মৃতা প্রেমিকার কবরে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিল?  

কন্সপিরেসি থিওরির কেউ কেউ মনে করে ইউলিসিসে আরো চরিত্র আছে যারা এম’ ইন্টোস হতে পারে। কেউ কেউ দাবী করেন যে, এম’ ইন্টোস হল ওয়েদাআপ  নামের একজন চরিত্র। কেউ কেউ মনে করে বাদামী বর্ষাতি পরা মানুষটি আর কেউ না, সে হলো ‘ওক্সেন ইন দ্যা সান’ এপিসোডের অগ্নি সংযোগকারী। আবার  এটাও ধরণা করা হয় যে সে ব্লুমের বাবার প্রেতাত্মা কারণ সে আত্মহত্যা করেছিল। তার আত্মা নিশ্চয় স্বর্গে স্থান পায়নি আর তাই মর্তে সে ঘোরাঘুরি করছে এম’ ইন্টোসের বেশে। এপিসোড কিয়ার্কেতে আমরা জানতে পারি ব্লুমের বাবা আবহাওয়ার আগাম বার্তা দিতেন। তাই এই ধারণা দৃঢ় হয়ে যে সে রুডলফ ব্লুম হলেও হতে পারে।

(৪)

থিয়োরিস্টরা বিভিন্ন মত দেন এই রহস্যময় চরিত্র সম্পর্কে। এর মধ্যে দুটি মত সবচেয়ে জোরালো। তারা মনে করেন জয়েস সম্ভবত এম’ইন্টোসকে কোন পরিচিতি দেননি। তিনি হয়তো একটা ইলুশন তৈরি করেছেন পাঠকদের জন্য। পাঠকরা ইউলিসিসের কাহিনিসূত্রে যে আইডেন্টিটি দিতে পছন্দ করবে, সেটাই দেবে। দ্বিতীয়  মত এই হলো যে জয়েস তাকে এঁকেছেন এক প্রচ্ছন্ন সংযোগকারী হিসেবে ইউলিসিসের ঘটনাগুলোর মাঝে রহস্য সৃষ্টির জন্য আর তাই তাকে হেডস কান্ড থেকে কিয়ার্কে কান্ড পর্যন্ত দেখা যায় হঠাৎ হঠাৎ। ইউলিসিসের প্রতিটা শব্দ যেন অর্থবহ। ঠিক তেমনই প্রতিটা ঘটনা বিশেষ বিশেষ অর্থবহন করে। এম’ইন্টোস জয়েসের এমন এক প্যাসিভ চরিত্র যে পাঠকদের কাছে রহস্যময় পাজল যা সল্ভ করবে তার পাঠকেরা। তিনি এমন এক এ্যামোইবা চরিত্র এঁকে গেছেন যে পাঠকরা যেখানে খুশি মিলিয়ে দিতে পারেন। জয়েসের স্বভাবই এমন তিনি যেন কিছুই সহজভাবে করতে পারেন না। এমনকি তাঁর লেখাও। স্টেফানের বাবার মুখ দিয়ে তিনি শুনিয়ে দেন– ‘It’s as uncertain as a child’s bottom.’  থাক না এমন রহস্য পাঠকদের জন্য। মিস্টার এম’ইন্টোস রহস্যই থেকে যাক, আমরা যেমন ইচ্ছে ভেবে নেব তাকে।

 

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন