কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২১

ইন্দ্রাণী সরকার

 

কবিতার কালিমাটি ১০৫


দিনান্ত শেষে মেঘমালা

 

হেমন্তের বিকেলের ডিম রাঙা সূর্য

পাইন বনের ওপারে দীর্ঘ ছায়া ফেলে

সমুদ্রের জলের আয়নায় মুখ দেখে।

 

তখন নিঃস্তব্ধতা, কচি পাতার ঘ্রাণ,

কালপুরুষের দীর্ঘ ছায়া আকাশ পারে

ম্লান হয়ে আসে ধূসর বিকেল পেরিয়ে।

 

দূরে বৃহৎ গাংচিলের ডানার শব্দ

পতঙ্গদের কান্নার মত ক্রমশঃ বিস্তৃত হয়।

জলপাই রঙের মেঘ আকাশে ভাসমান।

 

সে তখন এসে মৃদু স্বরে ডাকল আমায়

ভাসমান দুটি চোখ সাঁঝের আলোয় মলিন।

বলল, মেঘমালা, তোমায় নিয়ে যাব বহুদূর।

 

সন্ধিস্নান

 

নিঃস্তব্ধ রাতের মত তার শান্ত চলাফেরা

একরাশ ঝিঁঝির শব্দে চোখ বুজে আসে

ঠান্ডা হাওয়ায় ফুরফুরে আমেজ  ছুঁয়েছে

পাশেই দুটো হাত ধরে নরম চাহনি তার

বারে বারে নতুন কষ্টগুলো মুছে মুছে যায়।

 

অপার ঢেউয়ের মতন চুম্বনদের ওঠানামা

ফিরে ফিরে বাহুবন্ধনের নিবিড়তম শৃঙ্খল

কতদিনের না দেখার অসম্ভব অভিলিপ্সা

প্রার্থনার মত শরীরে তারা হয়ে ঝরে পড়ে

একদিন জলপ্রপাতে সন্ধিস্নান সেরে নেবে।

 

সুবর্ণছায়া

 

কত কিছু বলাই বাকি রয়ে যায়

এক একটা কথা যেন এক একটা মেঘের পালক

ফুঁ দিলেই উড়ে যাবে আকাশের বুকে

এমনি এক মগ্ন কোনোদিনে

কারুসজ্জায় এঁকে নিও তোমার সুবর্ণছায়া

থমথমে নীল পাহাড়ের মাঝে

তোমার অপূর্ব ভেজা দুই চোখ

যেন প্রদীপশিখার মত জ্বলজ্বল করে

আমার সব কথার অবসান হয়

তোমায় এক পলকের একটু দেখার নিবিড়তায়।

 

নীলকন্ঠ

 

রাত্রির নির্জনতায় বাঁশপাতা কেঁপে কেঁপে ওঠে

শিরশিরে হাওয়ায় কিছু শব্দের হালকা প্রতিধ্বনি

রাতপাখিদের ডানায় ডানায় একরাশ ঘরে ফেরা

নদীর পাড়ে হু হু বাতাস কপাল ছুঁইয়ে ভালবাসে

তখনি কি তুমি আসো ধীর পায়ে অতি নির্জনে?

চেনা পথটার ধার দিয়ে চুপিসারে অতি সন্তর্পণে?

সারা শরীরে তোমার জড়িয়ে বাতাবীলেবুর ঘ্রাণ

বুকের নির্জনতায় তেপান্তরের গভীর হাতছানি

তোমার ঠোঁটের স্পর্শ সারা শরীরে ছড়িয়ে দাও

সমস্ত ব্যথা নি:শেষে শুষে নিয়ে নীলকণ্ঠ হও।

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন