দুঃস্বপ্নের নিমন্ত্রণপত্র
জবার মতো প্রস্ফুটিত কোন স্বপ্ন নেই। ওরা যেদিকে পারে পালিয়ে গেছে।
ছাতা হাতে অপেক্ষা করছিলাম, যাতে শেষটা রক্ষা করা
যায়। কে জানতো, ভাঁজের
ভেতর ছোট বড়
মিলিয়ে দশটির মতো ফুটো ঘাপটি মেরে আছে। বাসা থেকে বের
হওয়ার
সময় তাড়া ছিল বলে খেয়াল করিনি।
আসলে অবসর ছিলো না। যিনি ডাকলেন, তার
ডাকে তৎক্ষণাৎ সাড়া দেয়া ছাড়া উপায় ছিলো না।
কর্তার ইচ্ছেতেই কর্ম আর কী। আমি
ছুটছি। পিচ্ছিল পথঘাট। পায়ের চাপে জল
এদিক ওদিক ছিটকাচ্ছে
কিংবা পালাচ্ছে। ভাত
কাপড়ের স্থায়ী সমাধানহবে বলে সব মেনে নিচ্ছি। আমার কাছে অন্য কোন ঠিকানা নেই।
অপূর্ব কিংবা পুষ্পার কাছে থাকতে পারে। অযাচিত অনেক কিছু মেনে নিয়ে যতই
জীবনটাকে পদ্মা, মেঘনার মতো বহমান করতে চাই বাদ্যযন্ত্র কিন্তু অন্ধকারের
হাতেই
নিপুণভাবে বাজে। অপূর্ব প্রায়দিন
বলে, আলোর পথ ঢের বাকি। গরীবের সাথে
অন্ধকারের
সম্পর্ক অটুট। বিচ্ছেদ ঘটলেই
মৃত্যু। ততোধিক যন্ত্রণা।
আর একটা মোড় পাড় হতেই বাসস্টপ। বড়জোর মিনিট পাঁচেকের রাস্তা। এটুকু হাঁটলে
বিশ টাকার সাশ্রয়।
এরচেয়ে কমে এখন রিকসা চলে না। সকালের নাস্তা আর অফিস ভাড়া
মোটামুটি নিশ্চিত। ফেরার পথের কথা
ভাবলে শরীর হিম হয়ে আসে, চোখ রাখি আকাশের
দিকে। ও আকাশ, তুই মন খারাপ করিস না। আজ আনন্দের দিন। কাল কদমবেলায়
দু’জন মিলে রেললাইন যাবো। দেখবো, কতদূর যাওয়া যায়!
একটা বাস হুশ করে চলে যায় শাহবাগের দিকে। যেতে যেতে শরীরের
অর্ধেক ভিজে চুপচুপ।
দাঁড়িয়ে যে শোক উদযাপন করবো তার উপায় নেই। ইন্টারভিউয়ের জন্য দেরি
হলে হয়তো
চাকরিটাই হবে না।
এক কী দু'কদম এগোতে ঝুম বৃষ্টির মুখোমুখি। যেন অষ্টাদশী
বন্যতা মিশিয়ে অনেকদিন
পর ভেজাতে এলে। একদিন তো ভেজাবেই। কাদা কিংবা জলরঙে। অপূর্বের অনেক স্বপ্ন।
বেশিরভাগের আকার নেই। শুরু হতে না হতেই শেষ। অদক্ষ ড্রাইভার
হলে যা হয় আর কী।
সেখান থেকে একটা স্বপ্ন ধার করে আনি। মাঝখানে পূর্ণতা
মিশিয়ে যে পথ আঁকি তাতে
মক্কা মদিনা তো দূরের কথা গয়া কাশীর ট্রেনের টিকিটও হবে না। তেমনি একটা
অপূর্ণাঙ্গ স্বপ্ন ধরে টান দিলে শিশুর আকৃতি পায়। জামাকাপড়হীন সদ্য জন্ম
নেয়া
মেয়েটি কাঁপতে থাকে, শীতে কিংবা ভয়ে।
|
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন