স্টার-ডাস্ট
সূর্যের
তাপে গরম আছে। সূর্য ছাড়া আমরা মানুষ গাছপালা জীবজন্তু কেউই বেঁচে থাকতে পারি না।
সূর্যের আলোয় সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া থেকে গাছ খাবার তৈরি করে। আমাদের বেঁচে থাকা
সমস্তটাই নির্ভর করছে এই সূর্য নামের নক্ষত্রটির দ্বারা। সূর্যের জীবন শুরু হয়েছিল
পাঁচ বিলিয়ন বছর আগে। আরও পাঁচ বিলিয়ন বছর বেঁচে থাকবে আমাদের সূর্য।
আমরা
কয়েকজন বন্ধু স্পেসশিপে বেরিয়ে পড়েছি ব্রহ্মান্ড-ভ্রমণে। আমাদের তথাকথিত কোনো ধর্ম
নেই। আমরা মানবধর্মে বিশ্বাসী। এই মহাবিশ্ব অর্থাৎ ইউনিভার্স, তার নামের মধ্যেই জড়িয়ে
আছে এক ছন্দে বাঁধা কবিতা। ‘ইউনি’ মানে ‘সম’ বা ‘এক’ এবং ‘ভার্স’ মানে কবিতা,
ছন্দ। রাতের আকাশে জ্বলজ্বল নক্ষত্রের টানে তাকিয়ে থাকি আমরা। এ তো নাড়ির টান!
কারণ আমরা সবাই নক্ষত্রের ধুলো বা স্টার ডাস্ট থেকে জন্ম নিয়েছি। টেলিস্কোপে চোখ
রেখে দেখতে পাচ্ছি বিশাল লেগুন নেবুলা। এর গ্যাস আর ধুলোর মধ্যে জন্মাচ্ছে অনেক
নতুন নক্ষত্র। চোখ চলে যাচ্ছে অন্যদিকে, দেখছি ওরায়ন নেবুলা জন্ম দিচ্ছে অসংখ্য
নক্ষত্রের। সমস্তটাই স্টার-ডাস্টের নিরন্তর ঘটে যাওয়া খেলা। আমরা আমাদের
গ্যালাক্সি মিল্কি-ওয়ে বা আকাশগঙ্গায় ভেসে চলেছি। মহাবিশ্ব বেড়েই চলেছে, সে যে
অশেষ। আমরা এই পৃথিবীবাসী হয়ে মহাবিশ্বে কখনই একা নই বলেই বিশ্বাস। আমাদের সব থেকে
কাছের বড় গ্যালাক্সি অ্যানড্রোমিডা, মাত্র ২.৬ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে।
মহাবিশ্বের
সমস্ত নক্ষত্র বিভিন্ন গ্যালাক্সির মধ্যে বাস করে। আমাদের দৃশ্যমান মহাবিশ্বে
গ্যালাক্সির সংখ্যা ১২৫ বিলিয়ন। আমাদের পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরে চলেছে, সূর্যও
তেমনি তার পরিবার নিয়ে মিল্কি-ওয়ে গ্যালাক্সিকে প্রদক্ষিণ করছে।
এই
মুহূর্তে মহাশূন্যে ভাসমান আমাদের স্পেসশিপ অবতরণ করেছে মঙ্গলগ্রহে। সামনেই এই
গ্রহের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি অলিম্পাস মনস্। এরকম উঁচু পাহাড় সূর্য-সংসারে আর কোথাও
দেখা যায় না। মঙ্গলের উপরে এখন জীবনের কোনো চিহ্ন নেই। আমরা মঙ্গলগ্রহে বসবাসের
দ্বিতীয় আবাসস্থল গড়ে তুলতে এসেছি। মঙ্গলে শুকনো ধুলোর ঝড় বইতে থাকে সবসময়।
মঙ্গলের মাটির তলায় বাসভূমি গড়ে তুলব আমরা।
আচমকা অসংখ্য স্পেসশিপ মঙ্গল-বুকে নেমে আসতে দেখা
যাচ্ছে। এরা কি শুধুই পৃথিবীবাসী? নাকি সূর্য-সংসারের বাইরের কেউ? লাল গ্রহকে
রোমানরা যুদ্ধের দেবতা মার্সের নামে ডেকেছিল একসময়। মঙ্গলের আকাশে তখন সূর্যোদয়ের
ছটা ছড়িয়ে পড়ছে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন