স্তন
নর্তকীর বামস্তন প্রস্তরাঘাতে ছিন্ন।
এটুকু বললেই কি সবটা বলা হল? আমার
বান্ধবী আজ সকালেই আমাকে বলল, জানো, আমার ইচ্ছে অনেক বড় বড় ছেলে আর মেয়ে আমাকে মা
বলে ডাকবে।
আমি ফোনের অন্যপ্রান্তে। পুরো
হাঁ।
সে আরও বলল, আমি বেশ বয়স্কমতন। বড় বড় ছেলে আর মেয়েরা আমার হবে ...
- কিছুদিন পর আশা পূর্ণ হবে।
- কী করে?
- তুমি যা ধর্মকর্ম করছো, আর কিছুদিন পর গুরুমা হয়ে যাবে।
- হুম্!
বুঝলাম রাগল। সান্ত্বনা দেবার জন্য বললাম, আবার হতে পারে তোমার ছেলে মেয়ে
হল। তাদের বিয়ে হল। তারা সবাই একসাথে
তোমায় মা বলল!
কী বললাম নিজে এবার বুঝতে পারলাম। যখন বিষণ্ন গলায় শুনলাম – আমি রাখছ, কাজ আছে!
ফোনটা কেটে গেল। সুইচ অফ হয়ে গেল। বুঝলাম, স্তনের মধ্যে অনেক কথা লুকিয়ে থাকে। যেখানে সম্ভাব্যতা জমা হয়ে অমৃত হয়। যেখানে আলো
জমে থাকে।
আমার বান্ধবীর স্তন উজ্জ্বল আলোকিত নয়। কালো। মাঝে আরও তীক্ষ্ণ কিছু কালো আমার চোখের সামনে, হাতের সামনে।
আমি দেখি কেমন অদ্ভুত নরম তার অবয়ব। বললাম, কী সুন্দর, না!
- যা!
তুমি যে কী কর! – বলে একটা হাত আমার চোখের ওপর আর অন্য হাত দিয়ে আমার হাত চেপে ধরে। দেখলাম তার আঙ্গুলের মাঝখানে ভাসছে মধ্যাহ্নের
অন্ধকার।
- সুন্দর! তুমি দেখো! তার আঙ্গুলগুলো
আমার আঙ্গুলের ওপর রেখে স্পর্শ করে পৃথিবীর পেলবতা।
দেখলাম, ভাস্কর অদ্ভুত মমতায় একা জন্মস্থান থেকে দূরে নিখুঁত সাধনায় মগ্ন। পাথরের শরীর থেকে একটু একটু
করতে জন্ম নিচ্ছে পেলবতা। ভাস্করের চোখে নেশা লাগে। ঠান্ডা শরীরে জাগে উষ্ণতা। কালো অবয়বে আরও কালো অঙ্গের জ্যোতষ্মান প্রভাব
তার চোখকে খুশী করে। ভেতর থেকে শিল্পী বলে ওঠে, আহা! কী সুন্দর!
নর্তকী বলল, আমি মা হতে চাই।
আমাকে গর্ভবতী করো।
শিল্পী বলল, স্তন!
- সন্তানের জন্য।
- আমার এত শিল্প, কারুকাজ, সৌন্দর্য্যবোধ!
- চাই না, এসব আমি চাই না।
তাকিয়ে থাকলাম। কেউ পাথরের টুকরো দিয়ে ভেঙ্গে দিয়ে গেছে নর্তকীর বাম স্তন। সে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। সেখানে ঘৃণা আর ভালবাসা মিলেমিশে একাকার।
নর্তকী চেঁচিয়ে বলল, তুমি একটা
বাজে লোক। বাজে! বাজে! বাজে! তোমার জন্য আমার বাচ্চাটা জানতেও পারল না
যে, সে কখনো জন্মায়নি!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন