অঙ্ক
অফিস টাইমে ট্রেনগুলোয় বরাবরই ভিড় হয়। ঠিক হর্ন বাজার মুহূর্তে দৌড়ে দৌড়ে ওঠাটা বেশ বীরত্বের ব্যাপার বলে মনে
হয়।
কমবয়স বশত না হয় একটু গেটের ধারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাওয়াই খেলাম! তা তাতে হয়েছেটা কি?
তা-ও যদি তুই বারণ করতিস্... একবার না হয় ভেবে দেখতাম, কিন্তু তুইও তো...
তাই... ‘হাওয়া-হাওয়া-ই’
জানিস তো, আজ আমি দু-বার সাবান মেখেছি, আর চারবার বডি-স্প্রে দিয়েছি,
যাতে তুই আমার গন্ধ চিনতে পারিস।
ট্রেনে সামনের কাকুটার কোনো আক্কেল নেই... আমার সামনে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে!
ভাগ্যিস্ ডিও-র বোতলটা সঙ্গে এনেছিলাম... না-হলে তুই কি ভাবতিস? যে আমি সিগারেট...
ছি! ছি!
একসময় ফিলটার-এর ধোঁয়ার মতোই উবে গেল ট্রেন-ভিড়-সিগারেট কাকু। এবার শুধু পেট্রলের গন্ধর সঙ্গে আমার সাবান আর বডি-স্প্রের গন্ধটার মারপিট বাকি।
বাসের ভিড়টা বেশ আরামদায়ক। গা-হাত-পা’র ব্যথা মারে, আর মরে মনের ব্যথা...
শেষ দিক থেকে তিন কি চার নম্বর সিট, জানালার ধা্রে।
তোর সামনের ছোট চুলগুলো উড়ছে, আর মাঝে মাঝে টর্চের আলোর মতো এক ছটাক আলো খেলে যাচ্ছে।
আমার চোখ ভরে আসছে, আর... শুধু ভাবতে ইচ্ছে করছে।
জানি না কি ভাববো, কেন ভাববো... শুধু...
নামার সময় কন্ডাকটার-টা এমন করে যেন...
মানলাম, এক-দু’বার ভাড়া না দিয়েই... কিন্তু তা বলে...
সামনে গিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখতে গেলে ঘাড় ব্যথা করে, তাই পেছন থেকেই...
হাঁটা-চলা-কথা বলা...
অনেকটা ‘তোর’ Physics-এর নিউক্লিয়াস আর ইলেকট্রনের মতো।
Nucleus- Vallance Electron -Force of
Attraction...
সেদিন আমার গাধা বন্ধুদুটো আমায় টেনে নিয়ে যাচ্ছিল ওদের সঙ্গে।
তুই তখনও বাস থেকেই নামিসনি।
কী মুশকিল!
জুতোর ফিতেদুটো তাই ইচ্ছে করে খুলে ফেল্লাম। রাস্তার ধারে উবু হয়ে বসে যখন জুতো বাঁধছিলাম, পাশ দিয়ে তুই গেলি।
মনে হলো ‘আমার’
Chemistry-র সবকটা আ্যসিডকে একসঙ্গে মিশিয়ে পিচকিরি দিয়ে মারছে। সে আ্যসিডে জ্বলে না, শুধু ভালো লাগে আর... ঘাম দিয়ে শীত করে।
তুই হাসিস, কথা বলিস... আর আমি... দেখি।
বাসে এখনও ভিড় হয়
সামনের কাকুটা এখনও সিগারেট খায়
নিউক্লিয়াসের পেছনে ইলেকট্রন এখনও ঘোরে
আ্যসিডগুলোও রিআ্যকশান করে
শুধু আমি...
{Physics+Chemistry} = ‘অঙ্ক’টা এখনও মেলাতে পারি না।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন