কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৬

শিবাংশু দে

চেনা

ফরাসডাঙা নামে একটা নদী ছিলতার পাশে ভাগীরথী শহর। নদী'তে বজরায় বেড়াতেন মহর্ষি নামের এক জমকালো হিরো। তাঁর পুত্র নয়ন শুনিয়ে পাঁচশো রাণীছাপ পার্চমেন্টের টুকরো, প্রযত্নে ব্যাংক অফ বেঙ্গল। আমি তাঁর গান মাঝে মাঝে গেয়ে থাকি। ঠিকঠাক হয় কিনা সেটা নিয়ে এখনও হল্লা গুমশুম। খজাঞ্চির খাতায় কোনও দাগ নেই। শোনো, তোমাকে একদিন নিয়ে যাব মোরানসাহেবের বাংলো। বেশি দূর নয় সেই মেঘমহাফেজ। আমি প্রায়ই যাই। ঢালু লালটালি আর ফিরিঙ্গি ঘরদোর। একটা বাদামগাছ পিছন দুয়ারে। ব্রীড়াময় নবপত্রালিকা। সবুজ ঢালাই বেঞ্চি লতাপাতা কাটা। ছবিটা কেমন লাগলো পোস্টকার্ডে লিখো। আজকাল কেউ তো লেখে না। আজকাল তুমিও শুনেছি স্ক্রিপ্ট দেখে পিয়ানো বাজাওআমাকে শুনিও একদিন। নদীটির পাশে স্ট্র্যান্ড। চূড়াবাঁধা কৃষ্ণ ও রাধা সারে সারে মহালিমরুপ। জল আর ঢেউগুলি মাটি থেকে অন্তরীক্ষ পথে। এখানে মহর্ষির ছেলে কানে কানে একদিন। চিনিলে না আমারে কি? বহুদিন এইভাবে গেলআর নয়। তোমার নিসর্গ দাও প্রিয়ে। আমি ক্যামেরা এনেছি।


চলো

ঘুম পেলে কৃষ্ণচূড়া পাখিদের পাশে শুয়ে পড়ে। অন্ধকারে কী সবুজ কী লাল সবই চাঁদঝরা শবনমগুঁড়ো। লোহাখাদান খুব দূরে নয়। তুমিও শুয়ে রয়েছো মেঘাতু বাংলোয়, ঠিক তার নিচে। পাহাড়ের খাই আঁকড়ে আরো দীর্ঘ হয়, বেড়ে ওঠে অথৈ  শাল্মলীরাত জেগে কখনও শুনেছো অন্ধকারে আর্থমুভারের ঘুমপাড়ানিয়া। সারাদিন মাটি কাটে। রমণে রমণে ধ্বস্ত মাটির লালিম টর্সো। যত কথা শুধু রাতে মাটি আর লাল বুলডোজার। ক্লান্ত শোভেলের দাঁতে নাছোড় জড়িয়ে মাটি আধোয়া। ইহা কি বিবাহ? জানো, আজকাল দেশলাইগুলো ভেজা থাকে। অচেতন ফুলকির দল কী খোঁজে? লুটের বাতাসার মতো চাকরি না চই চই হাঁস। তুমি কি চাকরিতে আছ? এই নোনা হাওয়া, এই শীত কুয়াশার লেপকম্বল আর চুলের গন্ধ। এবার মৃত্যু হলে কী রকম চাকরি ভেবেছো নেক্স্ট বার্থ? কামাল হোসেন বলেছে কক্সবাজারের দিকে বহু দ্বীপ আছে। সুজলা নৌকোও যায় দুবেলা। ওখানেও কৃষ্ণচূড়া গাছে বহু পাখি।  ওখানেও চাঁদ, ওখানেও চাকরি, ওখানেও ভোর হলে সারি সারি ট্রাক ও ট্রেলার নিঃশব্দে সমুদ্রে নেমে যায়। পিছু ফেরা নেই। যাওয়া যায়, নিশ্চয়ই যাওয়া যায়। চলো...


ডাকনাম


ঝড়ের ডাকনাম তামাদি হয়ে গেছে। সে এখন তোমার নামেই সাড়া দেয়। ঐ দূর কাটজুড়ি নদীর পূর্বপারে ঘন হয়ে জল জমে। তার মেঘ, গলন্ত স্লেট। ঝিরঝির। তার একফোঁটা দুফোঁটা হয়ে তুমি পৌঁছে যাচ্ছ আমার বারান্দায়। সামনে নারকেল গাছে পাতা দোলে। অসংখ্য সবুজ ফলের উজ্জ্বল ত্বকের মতো জেল্লা তোমার রোদ বাঁচানো গাল ও চিবুক। একটা মন্দির আছে। একটা বটগাছ আর নিত্যদিন কর্পূর ধুনোর গন্ধ। তোমার রুক্ষচুলে তার ধোঁয়া। বটের ঝুরির টানে কাঁসর ঘন্টা আর দেবীর অন্ধ চোখ। এখানে বলি'ও হয়। অমাবস্যা যেদিন, জল টানে না-দেখা চাঁদের তীব্র সাধ। সেই সব রাতে তুমিও হাত বাড়িয়ে খোঁজো, খুঁজে যাও বালিশের ওপারে ঘড়ি। কতো রাত হলো? ডাকনাম ভুলে যাওয়া তুমি অস্থির হয়ে খুঁজে যাচ্ছ পাসওয়র্ড। তোমার আকুল প্রার্থনা আর ধূসর কর্টেক্স। সব ছেঁড়া স্মৃতি, লাল টুকটুকে পাপড়ি, সারি বাঁধা কৃষ্ণচূড়া অ্যাভেনিউতুমি কি গ্রহণে ইচ্ছুক? ধুলোট কাগজে লেখা ডাকনাম। দিতে পারি? ইনবক্স... আজ তো পূর্ণিমা...

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন