![]() |
কবিতার কালিমাটি ১৪৯ |
জরিপ থেকে জিরাফে নেমে
(১)
তৃষ্ণাতুল্য প্রিজমের ভোর। বাড়বাড়ন্ত সাইনবোর্ড হয়ে ওঠা রঙের। নাবালক দেখার গুচ্ছভর্তি ডালিম। তিনফুট গভীর। পাঁচওয়াক্ত খুঁটেতোলা সানাইয়ে আটপ্রহর শালিক। উড়ে যায় চারুলতার মেঘ। শিকার যেন বুকের ডুবন্ত জলে না-ছোঁয়া মধুর প্রতারক। রঙের মিথ্যে কালোয় ঝলকের মিলমিশ। প্রতিসাম্যের কাল না-বলা আত্মার স্বচ্ছ তিমির।
(২)
কানা অহংকারের বেগুন। ভিরমি-লাগা মাটির ভাস্কর্য। পুতুল আমি। তুমিও পুতুলে। গলতে গলতে নারীনদী। ছায়াকে পাশ কাটিয়ে ছয়কে নয় লিখছো। সব পিছনে রেখে এগিয়ে আবার হাত ধরছো বাহানার। তাসের বাহান্ন। এপিঠ ওপিঠ। একশোচার। ফরমার দাঁতবাঁধানো ততোধিক মাংসে। বিতিকিচ্ছিরি খোদাই হতে থাকা মেঘে চুলকানি মাখছো।
(৩)
পাহাড়ের গায়ে হাত-লাগানো হাসির সূর্য। ছুঁয়ে দেওয়া সাম্রাজ্যের ন্যাপথলিন। বঞ্চিত ঘা-ফোট। কর্পুর লাগানো পায়রার পালক। জড়িয়ে ধরে সন্ধ্যা। দাবার নকশায় আলিঙ্গনের অব্যক্ত। মায়াময় আপেল ভোলানো আঙুর। সুড়ঙ্গের লম্বা আকাশে পা-দোলানো এরোপ্লেন কাগজের।
(৪)
বিম্ব ভেঙে জীবন বেরিয়ে এলো অপর। অপরিচিত শেয়াল যদিও খুব অচেনা। তবুও বাঘ আঁকতে হয়। ভালোলাগাজনিত আদরে যদিও থাবার খয়েরি। আয়না নিজের পেটেই উজ্জ্বল। বিস্তার শুদ্ধতম জলের। আকস্মিক ভেঙেপড়াগুলো রাংতায়। রজঃতন্ত্র উন্মোচিত এই খসড়া
(৫)
টিয়েটি। খুঁটছে রংকরার খুঁটিনাটি ডালিম। নোঙরের উচ্ছ্বাসডোবা জমালয় চারধার তুলির। দাঁতে রাত বিছানো বারুদের ভয়াবহ তরল। সূর্য হরিণের দক্ষিণে বাঘ নামিয়ে অন্যমনষ্ক। যে জানে সেই নিয়ন্তা। জামাপরানো জোকার। ছায়ার বিচিত্র নায়ক
(৬)
মহিম এই জলকণায় কী আঁকবে চোখ। পাঁক-পয়জার পাঁচতারা চোখের হোটেল। বিভূতির ঐশ্বর্যে প্রসূতির সময় আঁকা কল্পনা। বারান্দায় ওড়নাঢাকা মালিকানার আসর। বারোজোড়া রিডে আঙুল বোলাচ্ছে। জল জাগছে নকশায় তোলপাড়
(৭)
গিটারবাজানো চাবুকে চিরাগঘষা-দেশলাই। ছলে-সাজানো অতল জলের অগণন। ছয়তার মুগ্ধ নিবচে ছুতোয়। জলও না-বলা পঙ্ক্তির আফিম। না-দেখা অন্ধের নাপাক। ইস্ত্রি বোলানো রঙের ন-মাইল তীব্র কানা-পথ।
(৮)
দুর্বার মনসবদারের নৌকায় এক ভোটযন্ত্র। শব্দের কালো কৌশলে কানা-রাবণ। দশ-আঙুলের বোবা-তানসেন। হাসে কাদে বিয়োই। তুষের আলোয় রঙিন তুরপাইকরা জঙের নাচঘর। ছেঁড়া ছবির গহীন মর্মর।
(৯)
বহর ছোট হতে হতে পাখিরা পথের বিলুপ্তি ধরে সন্ধ্যা আঁকছে। কাছে ডাকা নৌকোর নোঙর। আঁশের ছিপে গাঢ় চোখ লেপটে ভণিতার দেয়াল। মাঝির একপেয়ালা বন্দী সুরায় হিম তুলছে যৌবনের টেরাকোটা। বোঁটা থেকেই মাতৃহারা এক স্বপ্ন
(১০)
জনার্দনের ভ্রুণ। মনমরা একলা হয়ে ওঠার গান। ছয়তারছেড়া টুকরো টুকরো খেলনার চাবি। ঢলেপড়া নিছক ভাষার ইঙ্গিত। নিজের সঙ্গোপনে আরও একলা রঙের প্রয়াস। চেতনার আলোয় ডুবে ছায়ার নগ্ন এক ছবিমানুষ। প্রশ্রয়ের বিড়ালে আরও নিবিড়।
(১১)
ফুরিয়ে যাওয়া গোফের বিড়ালে তিলের লাল। সংশয়ের গণ-জন। মোটা ভয়ের চাদর মোড়ানো টুকরোটাকরা যেটুকু ছিন্নছবির গুগল। সিঁদুরের সাপ খুলে রাখা কোটোয়। রংকে এমনও সংশয়াতীত হলুদাভে ডোবানো। বাঞ্ছার এই মনোভাব গায়েগতরে পুষছে বালিশ। রক্তের পুলিশে ভীষণ বরফ আঁকা জাহাজমাস্তুল। আঙুল দুমড়েমুচড়ে দিচ্ছে রাজার।
(১২)
ছয়ফুট নীচে নামিয়ে মাটিতে শুয়েছে গজদাঁত। হাতির মনোরথ আরও গভীর। বাঘরং পিয়োন পাঁচ ইন্দ্রিয়ের জলজ্যান্ত লাজুক। ডাকবাক্সের অনতিদূর ভয়ের ঘুণধরা চামড়ার খোলস। রঙের খামে ডোবানো নোঙর।
(১৩)
গিটার ছুঁতে পারছে না জলের বিস্মৃতি। থমকে মোড়াম-মাখা লাল। দুপাশের সবুজ অদ্ভুত লোহার ভিতর বসলো সেজে। কিছু না-বলা বালির খদ্দেরও আমার মতোই বেশি অন্ধ তোলপাড়। লজ্ঝড়ে নৌকোও ঔদ্ধত্যভরা
(১৪)
দেবীর ছায়ায় মন্দির মালঞ্চের মাদকতা। ভুল ও শৃঙ্খলা
মোমবাতির আয়না। ফুলের ঘোলাটে আবছা ফুঁয়ে বাঁশের কাঠামো। ভাঙাচোরা বোতলভরা প্রলেপের সওদাগর
ঘাটে এসে লাগে। জল ছোঁয় জীবনের
(১৫)
অন্য চোখে ডুবে যাওয়া আঁকতে আঁকতে তুলির মোলায়েম। রঙের ঐকান্তিক ভেঙেপড়া। যেখানে যেখানে খিদে। তীব্র ক্যামেরার উলটো দিক সেলাইকরা জোনাকিপোকার আলো।ধানজমি আর বসন্তের ছেঁড়াফাটার গান
(১৬)
বালির কুহকে উটের বাদামি। গলায় লম্বা জিরাফ। গহীন ছবির ডোবা-চাতকের মরীচিকা। পাখাবোনা শান্তনার। ভুলের ইঙ্গিতে নৌকোজমা ঘাটের বরফ খুলে গাইছে সাপ।
(১৭)
মর্মান্তিক কংকালের হাড়গুলোয় জলরঙে অবিমিশ্র কায়ার ভয়ানক। ছবির লালে ডোরাকাটা শীতল বেহেশত। মানুষ আঁকছে। পাশাপাশি শুয়োরও। কিংবা একপাল গাধার রঙে ছবিটি একটানা বাজছে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন