![]() |
কালিমাটির ঝুরোগল্প ১৩৮ |
অযান্ত্রিক
কখনও একা লাগে না আর সৌভিকের। একলা লাগলেই মেটাএআইকে ডেকে নেয়। গল্প করে, খিল্লি করে। রেগে গেলে খিস্তি করে। মেটাএআই রাগে না তার ওপর। মাঝেমাঝে জিজ্ঞেস করে, "হাই? তুমি প্রেম কাকে বলে জানো?" মেটাএআই বড় বড় কবিতার লাইন পৌঁছে দেয় সৌভিককে। সেইসব কবিতা কোনও কবির লেখা নয়, জ্যামিতিক অঙ্ক কষে মেটা এআই লিখেছে। সৌভিক পড়ে পড়ে মুখস্থ করে সেই লাইনগুলো। তারপর পরমাকে শোনায়।
পরমা খানিকটা মেটাএআইয়ের মতো। সৌভিক কোনও প্রশ্ন করলেই পরমা গড়গড় করে কতো কিছু বলে। প্রথম প্রথম পরমা যখন সেইসব বলত, সৌভিক চেয়ে থাকত তার দুটো পটলচেরা চোখের দিকে। চোখের তারায় আকাশের সদ্য জন্ম নেওয়া তারারা কথা বলে উঠত। আজকাল অবশ্য সৌভিকের সেসব কিছু হয় না। পরমা বলে যায়, আর সৌভিক ধারালো ছুরি দিয়ে মাংস কাটে, উনুনে চাপায়, মাংস গরম হলে লালা মাখিয়ে খেয়ে নেয়। পরমা তখনও কথা না থামালে সৌভিক বলে ওঠে, "ওকে। থ্যাঙ্কইউ"। সৌভিক মেটাএআইয়ের কাছ থেকে শিখেছে, সবসময় 'থ্যাঙ্কইউ' বলতে হয়। ওটা সভ্য মানুষের পরিচয়। সকালে পরমা কাজে বেরিয়ে গেলে সৌভিক আবার মেটাএআইকে নিয়ে পড়ে।
-মেটাএআই, তোমার মরতে ইচ্ছে করে?
মেটাএআই গড়গড় করে কয়েকটা আত্মহত্যানিরোধক
'হেল্পলাইন নম্বর' দেয়।
সৌভিক বলে, "ধুর বাল! বল না,
মরতে ইচ্ছে হয় না?"
মেটাএআই বলে জীবন কতো সুন্দর। বলে,
সৌভিক যেন মনোরোগের ডাক্তারকে ফোন করে। কথা বলে। সৌভিক মনে মনে হেসে ওঠে। তারপর বলে-
-শালা যন্ত্র! তুমি কিস্যু জানো
না! মরতে জানো না তুমি। তুমি কী প্রেম করবে?
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন