কবিতার কালিমাটি ১৪৮ |
উঠোনের পাতাবাহার গাছটা
কিছুদিন বুলবুলির আঁতুরঘর
মাঝেমধ্যেই ধানক্ষেতের
মধ্যে নিঃশব্দে দাঁড়ায় ঘুমকাতর ভোরের লোকাল
আর একটা বিরক্ত রাগী বেড়াল
ক্যালেনডার থেকে নামে
মেঝে আঁচড়ায় ঘরের কোণে
তীর্থযাত্রার আগে
কোনও এক আগন্তুক
আমার নর্মশরীরে ঢুকে খোঁজ করছে
টুকরো সাদা মেঘ,
ফুরফুরে হাওয়া
একাকুম্ভ, নিধিরাম, বীরপক্ষ, নীচুদম্ভ, আদিনাথ – সকলের
সঙ্গে
তার দেখা হয়,
কথাবার্তা শেষে
তারা আমার কপালে
মাথায় ফুঁ দিতেই
বহুদিনের চাপা দীর্ঘশ্বাসটা
মোষের শিং মতো
পাক খেয়ে মিশে যায় শূন্যে
সমস্ত ট্রেনই একসময়
পৌঁছে যায় গন্তব্যে
ধানক্ষেতের লাগোয়া
জলাশয়ে ধর্মবক দাঁড়িয়ে থাকে একা
নীল
লণ্ঠন
পোড়া নারকেল গাছটার
পাশ দিয়ে হাঁটো
দেখবে নীল লন্ঠন
ঘুমিয়ে আছে কুয়াশামাখা রাস্তায়
কিছু চামচিকে
নক্ষত্রের দিকে উড়ে গেলেই
বুঝতে পারবে ফসফরাস
মাখা একটা কী যেন –
- ভেসে উঠেছে পাশের
তালপুকুরে
কুড়িয়ে নিও কিংবা
ভরে নিও ব্যাগে
যেখানে
টগবগ করে একটা ঘোড়া ছুটে বেড়ায়
সেখানে
কুকুর, বিড়াল, পাখি, প্রজাপতি - সবার ছুটি
ঘুমের,
স্বপ্নের, আহ্লাদের, নিস্তব্ধতার দফারফা –
এমনকি
অশ্রুরও -
ঘোড়াটাকে
থামানো দরকার
নির্জন
সবুজ প্রান্তরে ওকে ছেড়ে দিলে
ঘাস
খেতে খেতে ও হয়তো দেখা পাবে বহু-ডার্বি জেতা ঘোড়াটার
জখম
হতেই যার কলিজা ফুঁড়ে দিয়েছিল একটা গুলি!
বাঁচামরার সোয়াদ
এক্ষুণি যার মরে
যাওয়া উচিত
সেও লিখছে ডায়রি,
ইনিয়ে-বিনিয়ে
আর যে আত্মহত্যা
করল কাল রাতে সে ডায়রি লেখেনি!
লিখে যায়নি টুকলি করা
স্কেচ থেকে বেরনো লিলিপুটের কথা
যে ওর কাঁধে বসলেই একটা
পালতোলা নৌকো ভেসে পড়ত সমুদ্রে
দেয়ালের পেরেক থেকে
পিদিম হাতে নেমে পড়েছে আমার ঠাকুমা
খুঁজছে অকালে মরে
যাওয়া ছোটোপিসিকে
আর আমি সকলের চোখে
ধুলো দিয়ে
চড়ে বসেছি লম্বা
ঠ্যাংওলা পিঁপড়ের পিঠে
পিঁপড়েটা এগোচ্ছে
একটা রজনীগন্ধার মৃতদেহের দিকে
ছোটোপিসি সাদা ফুল
খুব ভালোবাসত
আর আমি ভালোবাসতাম
ছোটোপিসির কোল
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন