কালিমাটির ঝুরোগল্প ১১৯ |
রাজদণ্ড
তখন নিশ্চিত ছিলাম যে নাটক করতে পারি। যতই পা মুখ ও মাথা সহ সারা শরীরে ব্যথা, আমি নাটক করবই। সেই সময়ই দেখি। কাচের ভিতর থেকে সেটা শুয়ে থাকতে দেখেছিলাম। আমার পাশেপাশে সেসব সকালে ও বিকেলে দুইজন বা তিনজন করে বন্ধু থাকত। রাত হলে তাদের চলে যাবার সময় হতে একজন বলে ফেলে, “কেমন দেখলেন?” আমি বললাম, “দুটো কথা আছে।” সে বন্ধু বলে, “এখন তো রাতের শুরু, শুধু দুটো কথায় হবে কী করে পুরো রাতটাই তো বাকি, তখন আর কোন কথাই থাকবে না এ আবার হয়।” আমি বলি, “কথা সুস্পষ্ট। তুই হঠাৎ আপনি বলছিস কেন আর কোন দেখার কথা বলছিস।” আমার মাথায় তখন ইলাহাবাদ শহরের কথা যার অপূর্ব সঙ্গম আমি দেখে ও পড়েছিলাম কিন্তু বন্ধু বলল, “মিউজিয়মের কথা বলছি।” কোন মিউজিয়মের কথা বলছে বন্ধু এটা ভাবতে গিয়ে রাত এসে পড়ে আর পরের সকাল দ্রুত চলে আসে। তখন খুব দ্রুতই পরের সকাল চলে আসতে পারত, অনেকদিন আগে। এরপর অনেক দিন পর আমিও কখন যে মিউজিয়মের কথা ভাবতে লেগেছি বুঝতে পারিনি। এটা ধরে ফেলল বুঁচকি। আমি তাকে অনেকদিন পর বেড়াতে নিয়ে গিয়ে বলে ফেলি, “কেমন দেখলেন?” বুঁচকি আশ্চর্যজনকভাবে আমার দিকে তাকিয়ে বলে ফেলেছে, “দুটো কথা আছে।” সেই শুনে ও যাতে আর কোন কথা বলতে না পারে তাতে ব্যস্ত হয়ে বলে ফেলি, “মিউজিয়মের কথা বলছি।” তখন বুঁচকি তাকিয়ে রয়েছে দেখে বুঝলাম ও এইভাবে সারারাত তাকিয়েই থাকবে। অনেক দিন আগের বন্ধুর মত বুঁচকি চলে যাবে না। এখন সময় আর দ্রুত সরে গিয়ে যে পরপর সকাল বা বিকেলে অর্থাৎ রাতের আগেরটাই দেখাবে এর কোন মানে নেই। তাই আমি ঠিক করলাম ওকে আমি রাজদণ্ডের কথা শোনাব যা মিউজিয়মে গেলেই দেখা যায়। যেই না ভেবেছি চারদিক থেকে পাঁচদিক থেকে “সেঙ্গল সেঙ্গল” শোনাচ্ছে। আমি বুঁচকিকে জিজ্ঞেস করি, “এর মানে কী আপনি জানেন।” বুঁচকি এই অদ্ভুত রাষ্ট্রের কীর্তি দেখে আমাকে আশ্বস্ত করেছে, সে আর আশ্চর্যজনকভাবে না তাকিয়ে একটা সেঙ্গল আমার হাতে ধরিয়ে দিল। সেটার পাহারায় আজ দশটা ডিম আনতে গিয়ে দেখলাম প্রতিটা ডিমের দাম হয়ে গেছে সাড়ে ছ’টাকা। দোকানদারকে বলায় সেও আমাকে আশ্বস্ত করেছে যে, প্রতিটা ডিমের ভেতর অবশ্যই কুসুম আছে ও কোনটাই প্লাস্টিকের নয়। সব কিছুই ঘটে গেল সেঙ্গলের সামনেই।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন