কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২

চিরশ্রী দেবনাথ

 

সমকালীন ছোটগল্প


মৃত্যু

 

-বাবুয়া, ঘুম থেকে উঠলি?

-ছোড়দা? কী ব্যাপার, এতো সকালে? কারো শরীর-টরির খারাপ হলো না তো?

-না, মানে আমরা ঠিক আছি। তুই মুখ ধুয়ে একটু কিছু খেয়ে নে। তারপর বলছি।

-মানে? মা ঠিক আছে তো? আগে বল।

-আমি যা বলেছি সেটা আগে কর।

-না, আগে বল কী হয়েছে।

-তুই মুখে জল দে, তারপর বলব।

-কী হয়েছে গো? সকাল সকাল ছোড়দার ফোন! বাবুয়ার স্ত্রী রাই জিজ্ঞেস করল।

-মনে হয় মা মারা গেছে, এখনি বলতে চাইছে না, কিছু একটা খেতে বলছে।

-সে কী? ছোড়দা কি মায়ের ওখানে বসে আছে? আর কারো গলা শুনতে পেলে?  মানে কান্নার আওয়াজ টাওয়াজ, ঝুমকি এসেছে ওখানে?

-কী জানি ঠিক বুঝতে পারলাম না।

-আরে আমার কাছে ফোনটা দাও। তুমি একটি গাধা, মা অসুস্থ হলে রাত বারোটা  হলেও তোমাকে ফোন করে, আর মৃত্যুর খবর এতো পরে দিচ্ছে কেন, এখানে প্যাঁচ আছে, সবার আগে বাড়িতে পৌঁছে গেছে ওরা, তুমি বুঝতে পারছো না।

হ্যালো! হ্যালো! ছোড়দাভাই? আমি  রাই, কী হয়েছে বলো না গো! আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে টেনশনে।

ওপাশে একটু নীরবতা। ছোড়দা মানে অলোক, একটু হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা অনুধাবন করছিল বোধহয়। মায়ের মৃত্যুতে রাইয়ের হাত পা ঠান্ডা হওয়ার কোনো কারণ নেই, অলোকেরই হাত পা ঠান্ডা হচ্ছে না। মায়ের ড্রয়িংরুমে বসে মৃতদেহ সৎকার সমিতিকে ফোন করেছে, পারিবারিক পুরোহিতকে ফোন করা হয়ে গেছে, বিপদনাশিনী ডেকোরেটরের বিল্টুকে ফোন করে রজনীগন্ধার মালার ব্যবস্থা করেছে, সবাই সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে এসে যাবে।

এইসব কিছু করতে বেশ কিছু টাকা লাগবে, তবুও অলোক চাইছে মায়ের শেষযাত্রা যাতে বেশ ঘটা করে হয়। মানে শব্দটা ঠিক ঘটা নয়, কী বলা যায়, লোকজন যাতে কয়েকটা দিন মনে রাখে শ্রীযুক্ত অলোক রায় মায়ের শেষযাত্রা খুব সুন্দর করে শ্রদ্ধার সঙ্গে করেছিল। এখন হিসেব করলে চলবে না। শ্রাদ্ধটাও ভালো করে করতে হবে। মা খুব ভালো সময়ে মারা গেছে। কয়েক বছর হলো তিনি রাজনীতিতে ঢুকেছেন, সামনেই মিউন্যাসিপ্যালিটির ইলেকশন, তিনি একজন দাবিদার, তাই এই মুহূর্তে ভাবমূর্তি তৈরি করাটা খুব দরকার। মা যদিও এতদিন একাই থাকতেন, বাবার করে দেওয়া এই বাড়িটাতে, ঝুমকি তো শ্বশুরবাড়িতেই, অলোক আর বাবুয়া আলাদা করে বাড়ি করে নিয়েছে বেশ কিছুদিন আগেই, আর বড়দা আগরতলায়। মা, বাবার পেনশন দিয়েই চলতেন, দেখাশোনার জন্য দুজন আয়া ছিল। না, মাকে টাকা দিয়ে কোনো সাহায্য করতে হয়নি, শুধু একটু খোঁজখবর নেওয়া, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দেওয়া, বাজার করা, তাই নিয়েও বহু চাপান উতোর গেছে।

এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা, সেটা  হলো  শহরের ওপর এই বাড়ির দাম অনেক।

অলোক দেখল ঝড়ের বেগে বাবুয়া আর রাই আসছে। আরো একটি গাড়িও থামল, ঝুমকি, ঝুমকির হাজবেন্ড রাজীব। ছেলে মেয়ে দুটোকে আনেনি, ওদের কি দিদাকে শেষ দেখা দেখার দরকার নেই? অবশ্য অলোকের ছেলেও শিলচরে ইঞ্জিনীয়ারিং পড়ছে, ওর আবার পরীক্ষা চলছে, খবর পাঠিয়েছে অলোক, তবে বলেছে এখন আসতে হবে না, শ্রাদ্ধের সময় এলেই হবে। বড়দা পৌঁছুতে পৌঁছুতে আরো দু  একঘন্টা, সকালেই রওনা দিয়েছে। সবাই এলেই কাজ শুরু হবে। পাড়ার লোকজন এখনও তেমন খবর পায়নি, আরো একটু পরে অলোক পাড়ায় জানাবে ভালো করে, সব রেডি হোক। পরিচিত এক কীর্তনের দলকে আনাবে, শেষযাত্রায় হরিনাম সহকারে খই আর ফুল ছিটিয়ে মাকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হবে।

অলোক বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসেছিল, ওদের ছোটবেলার বাড়ি, দেওয়ালে মা বাবার পঞ্চাশতম বিবাহবার্ষিকীর ছবি, বাবা পালন করেছিলেন।  ঝুমকি, অলোক, বাবুয়া, নিলয় সবার বিয়ের ছবি যত্ন করে সাজানো আছে। মায়ের চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের একটি পর্ব শেষ হলো।

অলোকের মা খুব সৌখিন মহিলা ছিলেন, টাকা পয়সার ব্যাপারটাও ভালো বুঝতেন, খোঁজখবর রাখতেন সবকিছুর। উনার ঘরে মোট তিনটে আলমারি, সেগুলোতেই নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখতেন। তিনি কিছু ভুলে যাননি, প্রায় শেষ অবস্থা পর্যন্ত পরিষ্কার কথাবার্তা বলেছেন।

রাই ছোটভাইয়ের বউ। তাই প্রথমেই সে কিছু বলতে পারছে না। মুখটা যথাসাধ্য  কাঁদো কাঁদো করে বলল, ঘটনাটা ঠিক কখন ঘটেছে ছোড়দা? মানে তুমি কখন খবর পেলে?

-সকালেই তো, অলোক একজন আয়াকে দেখিয়ে বলল, ও ফোন করেছিল, মার শরীর খারাপ লাগছে, সঙ্গে সঙ্গে চলে এলাম। জল খেতে চাইলেন, কোনোরকমে   একটু মুখে  দিতেই মাথাটা ঢলে পড়ল, তারপরই তোদের ফোন করলাম।

-শরীর খারাপ লাগছে, শুনেই তো, আমাকে ফোন করলে পারতে  দাদা! মা মেয়ের হাতের জল পেলো না! ঝুমকি ডুকড়ে উঠল।

-না মানে আমি তো সবসময় তোদের ডিস্টার্ব করি না, প্রায়ই তো তোরা আসতে  পারিস না, আমি আর তোর বৌদিই এসে ঘুরে যাই, তাই ভাবলাম বাড়াবাড়ি হলে    বলব, তার আগেই সব শেষ।

-বৌদি কোথায়?

-ঐ কী কী লাগবে, সব জোগাড় করছে।

অলোক লক্ষ্য করলো, রাই নড়ছে না মায়ের ঘর থেকে, অথচ ও এ বাড়িতে মায়ের  ঘরে আসতেই চাইত না। ওর নাকি পেচ্ছাপের গন্ধ লাগে, ডেটল আর ফিনাইলের  গন্ধে বমি পায়। বাবুয়া মায়ের পায়ের কাছে বসে আছে, মুখটা গম্ভীর করে, ওকে খুব একটা দুঃখিত মনে হচ্ছে না, কিন্তু দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত লাগছে। বাবুয়া সরকারি চাকরি পায়নি, বিজনেস করে দিয়েছিলেন বাবা, কিন্তু বিজনেসটা প্রথমে খুব ভালো চললেও, এখন হাল একটু খারাপ। অলোক কানাঘুঁষোয় শুনেছে, বিয়ের পরপরই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে আলাদা জায়গা কিনেছিল, তখন ওর খুব রমরমা, প্রচুর ইনকাম হচ্ছিল।

ঝুমকি বলল, মায়ের আলমারির চাবি কোথায় ছোড়দা?

-আশ্চর্য! তুইই  তো রেখেছিলি একটির চাবি, বাকি দুটো তো মায়ের বালিশের তলায় থাকত। কেন কী করবি? অলোক বলল।

-মায়ের জন্য ভালো শাড়ি বের করব, পুজোর সময় দেওয়া নতুন শাড়ি আছে।  সেটাই পরাবো।

-বের কর তাহলে।

-সেই আলমারির চাবি তো নেই আমার কাছে।

-তাহলে এখন থাক। ডেডবডি বাইরে নেওয়া হলে দেখা যাবে।

-আচ্ছা, বাড়ির দলিলগুলো কোন আলমারিতে আছে রে?

-হবে কোনো একটাতে।

-মানে তুই বা বাবুয়া কেউ জানিস না?

-তাহলে বড়দা জানবে।

-বড়দা আগরতলায় বসে বসে জানবে কী করে?

-আগরতলা থাকলে বুঝি জানা যায় না? বড়দার সঙ্গেই তো মায়ের সবচেয়ে বেশি  ভাব ছিল। এখানের সব সমস্যা আমরা ট্যাকল করব, আর রাতের বেলা বড়দার  সঙ্গে গুজগুজ। বড়বৌদি ফোন করে কত কথা, তোমার বড়দাই তো ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে সব ওষুধ পাঠায়, তোমরা তো শুধু আসা যাওয়া করো।

-ঠিকই বলেছ ঝুমকি। আমাকেও শোনায় বড়দি। অথচ দেখো  তোমার ভাই  মার বাজার নিয়মিত করে দিত, কাজের লোক কি খাবে, মার জন্য ভালো মাছ, ফল, দুধ, দই, শাক, লতাপাতা সব তো ওই  এনে দিতো।

রাইকে থামিয়ে দিয়ে ঝুমকি বলল, মায়ের রান্না সপ্তাহের মধ্যে তিনদিনই আমার বাড়ি থেকে আসত, বুঝলে রাই। মা কাজের লোকের রান্না খেতে পারত না, আর বাবুয়ার বাজার করার নামে তো অর্ধেক তোমার ঘরেই যেত, আমি আর বাবুয়া পিঠোপিঠি ভাইবোন, বাবুয়ার স্বভাব আমার থেকে ভালো আর কেউ জানে না। যাই হোক, দলিলগুলো যাতে সহি সলামত থাকে, মায়ের পর তো আর এই বাড়ি রেখে লাভ নেই, বোন হিসেবে আমাকে যাতে কেউ না ঠকায়।

-আহ্ তোরা কি শুরু করলি, মায়ের দেহ এখনো ঘর থেকে বের হয়নি ঝুমকি!

-সে তো তুমি কখন থেকে আগলে বসে আছো ছোড়দা কে জানে? কখন মরেছে,  আমরা টেরই পেলাম না।

-তুমিই সব ব্যবস্থা করে নিলে।

-তা তুই কি ব্যবস্থা করতিস শুনি, সঙ্গে সঙ্গেই তো ফোন করলাম আমি। আমি যেহেতু ছেলে এসব কর্তব্য তো আমারই, বড়দা দূরে থাকে আর বাবুয়া ছোট।

-কতখানি কর্তব্য জানা আছে ছোড়দা, মা যখন বেশি অসুস্থ হতো তখন তো মায়ের  ফিক্সড ডিপোজিটগুলো তুমিই ভেঙে চিকিৎসা করিয়েছো, কত টাকা ছিল, কত টাকার চিকিৎসা হলো, কত টাকা বাঁচল, কিছুই হিসেব পেলাম না, শুধু দেখলাম তোমার জমি, বাড়ি, গাড়ি হচ্ছে। মাস্টারির টাকায় তো আর এতোসব হয় না  ছোড়দা, তাছাড়া তুমি এখন পেনশনেও চলে গেছো।

-ঝুমকি তুই কিন্তু সীমানার বাইরে কথা বলছিস, মায়ের দুটো ফিক্সড ডিপোজিট   ছিল, কত খরচ হয়েছে বলেছিলাম, আর টাকা যে শেষ হয়ে গিয়েছিল সেটাও জানিস, বড়দা তো আর নিজের টাকায় মায়ের সব ওষুধ কেনেনি, ঐ ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙানো টাকা গেছে বড়দার একাউন্টে। বড়দা এলে জিজ্ঞেস করিস, মায়ের মৃত্যুর দিনে মিথ্যে বলতে পারবে না।

এদিকে গেট দিয়ে লোকজন ঢুকছে, ঝুমকি কান্না শুরু করল। রাই চোখে আঁচল চাপা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পুরোহিত মশাই এসেছেন।

অলোকের বউ সব গুছিয়ে দিচ্ছেন।

বাবুয়া, ঝুমকি, অলোক আর নিলয়ের মা ...সৌদামণির দুহাতে দুটো সোনার বালা, ওদের বাবা গড়িয়ে দিয়েছিলেন, আমৃত্যু হাত থেকে খোলেননি সৌদামণি।

ঝুমকি মায়ের হাত থেকে বালা খুলে নিজের হাতে পরে নিচ্ছে, রাই সঙ্গে সঙ্গে বলল, সে কি গো, দুটো বালাই তুমি নিচ্ছো নাকি, আর আমরা যে তিন বউ!

-মায়ের বালা মেয়েই পরে, তোমাদেরকে তো তোমাদের বাপ মা গয়না দিয়েছেন,  শাশুড়িও দিয়েছেন বধূবরণের সময়।

-সে তো তোমাকেও দিয়েছেন।

-আচ্ছা রাই, তুমি চুপ করবে? লোকজন এসে গেছে, বালাকে তো আর কেটে  টুকরো টুকরো করা যাবে না! ওটা আমারই থাক, আমার মা যেহেতু।

-আর ছেলেদের বুঝি মা না?

ঝুমকি আর কোনো উত্তর দিলো না। এখন কথা বলা যাবে না। প্রতিবেশীরা শেষ দেখা দেখতে এসেছে ।

বড়দা ফোন করে বলেছে দশমিনিটের মধ্যে ঢুকে যাবে বাড়িতে। ওরা পুরো পরিবার আসছে।

ম়ৃতদেহ সৎকার সমিতির গাড়ি গেটে দাঁড়িয়ে আছে।

রজনীগন্ধার মালা ও ফুল নিয়ে পৌঁছেছে বিল্টু। গাড়ি সাজানো হচ্ছে। কীর্তনপার্টিও এসে গেছে।

নিলয়, সৌদামনির বড়ো ছেলে, আগরতলা থেকে ছেলে, মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে এইমাত্র ঢুকল। নিলয়ের ছেলে মেয়ে বেশ বড়, ছেলেটি চাকরি পেয়ে গেছে, মেয়ে মাস্টার্স করছে, বহুদিন পর সৌদামনির বড় ছেলের ঘরের নাতি নাতনি এলো, বেঁচে  থাকলে নিশ্চয়ই বাড়িতে খুব আনন্দ হতো। এখন ওদের নিয়ে এসে নিলয় কর্তব্য পালন করছে। কর্তব্য পালনের ধুম লেগেছে মৃত্যুর পর। এরমধ্যেও মায়ের ঘরটা ঝুমকি ও রাই রীতিমতো পাহারা দিয়ে রেখেছে। আসলে ঝুমকি ঢুকে বসে আছে, তাই রাই বেরোতে পারছে না সেখান থেকে, আলমারিগুলো পাহারা দিতে হবে তো!

কিন্তু এখন বেরোতে হবে, না হলে দৃষ্টিকটু দেখায়।

গলায় সাদা গোলাপের মালা, কপালে চন্দনের টিপ, ঘিয়ে রঙের টাঙাইল শাড়িতে সুন্দর করে সাজিয়ে সৌদামনিকে রজনীগন্ধা দিয়ে সাজানো গাড়িতে তোলা হলো।  ছেলেমেয়েরা, বউরা খুব কাঁদছে, মনে হচ্ছে বেশ ভরা সংসার ছিল। সৌদামনি ডেকে ডেকে সবাইকে একত্র করতে পারেননি বহুদিন। শেষসময়ে সবাই এসেছে, শুধু তাঁর চোখে আলো নেই ...কীর্তনের বিষণ্ণ সুরে যাত্রা শুরু হলো। সৌদামনির এখন নিজেকে শরতের মেঘের মতো হালকা লাগছে, পঁচাশি বছরের দেহটা অনেক ভোগ করেছে, আর কোনো দুঃখ নেই তার।

ছেলেমেয়েগুলো খুব ঝগড়া করবে, করুক। বাড়ির দলিল নিয়ে ভীষণ ঝামেলা হবে। আবার নতুন করে বের করতে হবে দলিল, কারণ উনি দলিলটা লুকিয়ে রেখেছেন এমন জায়গায়, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। না হলে তো একমাসের মধ্যে বাড়ি বিক্রি করে দেবে। বালা ঝুমকি নেবে এটা তিনি জানতেন, বাকি গয়নাগুলো নিয়ে ঝগড়া হোক। মা বাবা বেঁচে থাকতে তো ওরা কম স্বার্থপরতা দেখায়নি!  একদম অসহায় যখন হয়েছেন তখন শুধু নির্ভর করেছেন কিছুদিন। এখন এই ঝগড়াঝাটিগুলোই ওদের মধ্যে যোগাযোগ সৃষ্টি করে রাখবে। গাড়িটা খুব ঠোক্কর খাচ্ছে,

"বাবা অলোক, মায়ের শেষযাত্রার ভালোই আয়োজন করেছিস, মিউন্যাসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান হলে রাস্তার খানাখন্দগুলো ভরাট করিস। একে তো টিনের বিছানা, তায় গর্তের ওপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে যাচ্ছে, উঃ, বাপরে!" ভাসতে ভাসতে নিজের এত বছরের বন্ধু স্পন্ডেলাইটিসে আক্রান্ত  নশ্বর শরীরটার কষ্ট দেখে সৌদামনির ভারী খারাপ লাগছিল।

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন