প্রতিবেশী সাহিত্য
সঞ্জয় অলংগের কবিতা
(অনুবাদ : মিতা দাশ)
কবি
পরিচিতিঃ সঞ্জয়
অলংগের জন্মতারিখ ৮ জুলাই। জন্মগ্রহণ করেছিলেন ছত্তিসগড় রাজ্যের বৈকুন্ঠপুরে। তিনি
কর্মসূত্রে আই এ এস অফিসার। বর্তমানে ছত্তিসগড়ের বিলাসপুরে ডিভিসনাল কমিশনারের
দায়িত্বে আছেন। তিনি কবিতা ও গদ্য রচনায় সমান দক্ষ। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলির
মধ্যে ‘শব’ (কবিতা সংগ্রহ), ‘পাগদান্ডি ছিপ গই’ (কবিতা সংগ্ৰহ), ‘ছত্তিসগড় :
ইতিহাস ও সংস্কৃতি’ (গদ্য ), ‘ছত্তিসগড় : তেওউহার ও উৎসব’ (গদ্য), ‘ছত্তিসগড়’কে
হস্তশিল্প’ (গদ্য), ‘ছত্তিসগড়’কি রিয়াশত ও জমিদারি’ (গদ্য) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
তিনি ‘ভারত ভাস্কর এওয়ার্ড’ ও আরও পুরস্কার ও সম্মানে বিভূষিত।
ওরা ওখানেই থাকে
থাকতো যেখানে
ওদের বাবা
থাকবেও সেখানে
ওদের সন্ততিও
ওদের কেউ
নিয়োগকর্তাও নেই
ওরা করেও না
কাউকে নিযুক্ত
ওরা না আয় করে কোনো লাভ
আর সুদও নেয় না
ওরা ওখানেই থাকে
থাকতো যেখানে
ওদের বাবা।
আমায় কি বস্তরের জন্য কাঁদা উচিত
আমার কি বস্তরের জন্য কাঁদা উচিত?
বনবাসীদের কাছে জমি ও বন এখন কিছুই নেই
ওরা এখনো নগ্ন কারণ
ওদের পলায়ন রুখতে সালবাজুলুমে বন্দি করে রেখেছে
কারণ ওদের মারার জন্য লোক এসে গেছে
ওদের মুখে বোমা, সুরঙ্গ, বন্দুক ঢুকিয়ে এঁটে দেয়া
হয়েছে
কারণ জীবিত মানুষদের থেকে জীবন বের করে নিয়েছে ওরা
কারণ স্থানীয় বাহিনী পঙ্গু হয়ে পলায়ন করেছে
শিবিরে ভাত খেয়ে বনবাসীদের বসিয়ে ওদের ছেড়ে
পালিয়েছে
যেখানে বাইরে থেকে আশা সৈনিক হিসি করছে ও মরছে
কারণ এখানকার লেখকরা বন্য
কারণ ধর্ম প্রচারকরাও ধর্ম ভুলে গেছে
কারণ উপর থেকে উঁকি দিচ্ছে
ওদের উপর কাঁদাই সুখকর
কিন্তু ওরা তো হাসছে এখনো কি
আমাযর কাঁদা কি উচিত?
শব
শব যদি পিতার হয়,
জ্বলন্ত প্রদীপ হল শুধু মাত্র স্মরণে
আর যদি মায়ের হয় তাহলে গোটা বাড়ি দুঃখে ভেঙে পড়ে
কিন্তু দুর্গন্ধ ও ভয় এখনো কোথাও যদি চিৎকার করে উঠে
তাহলে বলা হয় বিস্ফোরণ ঘটেছে
কবে শবগুলি সরানো হয়ে গেছে!
সেগুলি তো বাবারও না মায়েরও না
হ্যাঁ সেইগুলি না ভাইয়ের, বোনের, স্ত্রীর, স্বামীর আর
কোন প্রিয়জনেরও না
তাই সেই শবগুলি কোথাও ফেলে দেয়া যায় কোনো চিৎকার ছাড়াই
পুলিশ বুঝতে পারছে না
স্বপ্ন ও ইচ্ছাগুলি কোথায় ফেলবে
এখন তো দান্তেওয়াড়া, বেরুত, বাগদাদ, গোধরা
সব জায়গায় সব গর্ত গুলিভরা
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা তো সরকারের হাতে
তারপর এই ব্যবস্থা বিশ্ব জুড়ে বা স্থানীয়
নালা কাদা ও প্লাস্টিকে ভরা
হ্যাঁ শবগুলিও রয়েছে তার ভেতর
হ্যাঁ এটাও ঠিক সেই শব দিয়ে তো গর্তগুলি ভরা হয়েছে
গর্তগুলি কবে ভরা হয়ে গেছে
এখন কোনো মিথ্যা কথা নয়
না কোনো খোলস
এখন শব কোথাও আর দেখা যায় না
ইচ্ছেগুলোকে কফিনে মোড়ক দিয়ে বাঁধা হচ্ছে
সরকার, চাকরি, পেনশন, ব্যবসা, ডলার, জামহুরিয়াত বদলাচ্ছে
কিন্তু মোড়কে জানি না কিসব প্রিন্ট করা
শবগুলোকে তো সরাতেই হবে
ভাগ করা রঙ
সে বলল
এই রঙটা আমিষ
আর এই রঙটা রাজসিক
আর এই রঙটা সাত্ত্বিক
তারপর জানানো হল
এই রঙটা কি মরদদের
এই রঙ তো মেয়েরা পরে
আরো এও বলা হয়
এই রঙটা তো ওদের
আর এটা আমাদের
আর আবার জানানো হল
এটা তো ওর রঙ
আর এটা আমাদের
তারপর সে জানালো
সে কেবল মাত্র নিজের রঙটা পরে
বাকি রঙ খারাপ
তখন থেকে
ওর কাছে থেকে
রঙ হারিয়ে গেল
সে এখন
শুধু ধূসর ও সাদা দিয়ে ঢাকা
আর
বাকি রঙ দিয়ে ঢাকা দুনিয়া।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন