কালিমাটির ঝুরোগল্প ১১২ |
মা সম্পর্কে একগুচ্ছ
পাগলি
এত ছোট বাচ্চার থ্যাঁতলানো শরীর আসলে আগে দেখেনি ও.সি। হাড়গোড়ও তো পোক্ত হয়নি মালটার। অস্থিমাংসরক্ত সব মিলে মিশে এক দলা আলুভাতের মতো পড়ে ছিল। প্লাস্টিকে মুড়ে এইমাত্র নিয়ে যাওয়া হল পোস্টমর্টেমে। ব্যস্ত হাসপাতালে আপাতত কারো রক্ত ধোয়াধুয়ির সময় নেই।
জিজ্ঞাসাবাদ
করে জানা গেছে, অপরাধীর পাশের বেডের রোগিনী মাঝরাতে খসখস আওয়াজ পেয়েছিল। কিন্তু স্যালাইনে
ঘুমের ওষুধ মেশানো থাকায় ঘটনা ঠিক মালুম হয়নি। ডিউটিরত নার্সও ওয়ার্ডের বাইরে ঢুলছিল।
জানা
গেছে, অ্যাডমিট হওয়ার দিন থেকেই অপরাধীর ভাবগতিক ভালো ঠেকেনি। কথাবার্তা বলত না। সিস্টার
প্রশ্ন করলে সিলিংপানে তাকিয়ে থাকত।
তদন্তে
আরো প্রকাশ, অপরাধীর নর্মাল ডেলিভারি হয়েছিল পরশু রাতে। সুস্থ, স্বাভাবিক শিশু। তবে
ওয়ার্ডের মহিলারা গতকাল বিকেলে শ্বশুরবাড়ির
লোকজনকে তড়পাতে দেখেছে। মৃদু শাসানি। শাশুড়ি,
সঙ্গে দেওর। মেয়েটির স্বামী দূরের খাদানে কাজ করে।
ওয়ার্ডে
গোলোযোগ হচ্ছিল বলে নার্স এসে তাদের থামিয়েছিল। তবে সে সাধারণ গোলমাল। সংসারে মেয়ে
বাচ্চা জন্মালে যেমন একটু আধটু অশান্তি হয়েই থাকে।
গতকাল
রাত দুটোয় সেই মেয়েকে তিনতলার ম্যাটার্নিটি ওয়ার্ড থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল তার মা।
মনোচিকিৎসক এসেছেন আপাতত। রিপোর্ট লিখছেন পুলিশি প্রয়োজনে।
তদন্তে অপ্রকাশিত যা, তা হল, মা কোলে নিতে গেলে সদ্যোজাত কেঁদে উঠেছিল মৃদু। ওর খিদে পেয়েছে ভেবে পাগলিটা দুধ তুলে দিয়েছিল মুখে। মাধ্যাকর্ষণের টানে দ্রুত নেমে আসা শিশুটি অভুক্ত ছিল না।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন