কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১ মে, ২০১৯

এদুয়ারদো গালেয়ানো




প্রতিবেশী সাহিত্য


এদুয়ারদো গালেয়ানো’র কবিতা  
    
(অনুবাদ : জয়া চৌধুরী) 




কবি পরিচিতি :  

সাংবাদিক, লেখক এদুয়ারদো গালেয়ানো ১৯৪০ সালে উরুগুয়েতে জন্মগ্রহণ  করেন। এপ্রিল তাঁর প্রয়াণের মাস। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত দুটি বই হলো  Las venas abiertas de América Latina  লাতিন আমেরিকার উন্মুক্ত ধমনী (১৯৭১) y Memoria del fuego আগুনের স্মৃতি (১৯৮৬)। কুড়িটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এগুলি। অসংখ্য বইয়ের লেখক গালেয়ানোর প্রয়াণ হয় গাবো মারকেসের সঙ্গে একই দিনে ১৩ই এপ্রিল ২০১৫।



El metelíos (নষ্টামির সৃষ্টিকর্তা)

ওরা আলাদা হয়ে থেকে গিয়েছিল আকাশ আর মাটি, ভাল ও মন্দ, জন্ম এবং মৃত্যু। দিন ও রাত নিজেদের গুলিয়ে ফেলেছিল। এবং নারী ছিল নারী ও পুরুষ ছিল শুধুই পুরুষ।

কিন্তু এক্সু, ভবঘুরে এক্সু মজা পাচ্ছিল। নিষিদ্ধ সব মেলানো মেশানো জিনিষসহ তখনও সে মজাতেই ছিল। তার বদমায়েশিগুলো সীমানা মুছে ফেলছিল এবং সেইসব দেবতাদের একসঙ্গে জুড়ে দিচ্ছিল যারা ইতিমধ্যেই আলাদা হয়ে গিয়েছিল। তার দয়ায় ও কাজের ফলে সূর্য কালো হয়ে গিয়েছিল, রাত জ্বলত, আর পুরুষদের গায়ের রোমের ছিদ্র থেকে নারীরা ফুটে উঠত ও তারা ঘামের সাথে পুরুষদের সৃষ্টি করত। যে মরে সে জন্মায়, যে জন্মায় সে মরে যায়। আর সব সৃষ্ট প্রাণী অথবা সৃষ্টির কারণে পুরো উল্টোদিকে আর অধিকার নিয়ে মিশে যেত। এমনকী সে জানতও না কে প্রেরিত অথবা বাধ্যতায় উপনীত কিংবা ওপর কোথায় অবস্থিত নাহলে নিচ কোথায় আছে।
তাড়াতাড়ির বদলে ঢের দেরীতে স্বর্গীয় নির্দেশ দেবতন্ত্র ও তার ভূগোল পুনরায় প্রতিষ্ঠা করলেন। সব কিছু যথাযথ জায়গায় ও যথাযথ ভূমিকায় রাখলেন। কিন্তু দেরীর চাইতে ঢের তাড়াতাড়ি পাগলামি ফিরে এল।

তখন দেবতারা দুঃখ করতে লাগলেন দুনিয়াটা কী ভীষণ অনিয়ন্ত্রণীয় হবে।


Caminos de alta fiesta (বড় উৎসবের রাস্তারা)

   
আদম ইভ কালো মানুষ ছিলেন?

মানুষ তার দুনিয়াব্যপী যাত্রা শুরু করেছিল আফ্রিকায়। সেখান থেকেই আমাদের পূর্বপুরুষেরা গ্রহ জয় করার উদ্যোগ নিতে শুরু করেছিলেন। বিচিত্র সব পথ তৈরী করেছিলেন ওঁরা এবং বিচিত্র সব গন্তব্যও। এবং রঙের বন্টনের গোটা এলাকা জুড়ে ছিল সূর্য।

এখন নারী পুরুষ, আমরা, পৃথিবীর রামধনু। আকাশের রামধনুর চেয়ে ঢের বেশী ধরনের রঙ আছে আমাদের। কিন্তু আমরা আফ্রিকানরা সকলেই অভিবাসী। এমনকী সাদারা, সাদাতমরাও আফ্রিকা থেকেই এসেছে।

মনে হয় আমরা আমাদের সাধারণ মূল ধরে রাখতে অস্বীকার করি কেননা জাতিভেদ আমাদের ভেতর স্মৃতিভ্রংশতার উদ্ভব ঘটায়। অথবা কেননা আমাদের বিশ্বাস করিয়ে তুলতে অসম্ভব মনে হওয়ায় সেইসব দূরের দিনে গোটা দুনিয়াটাই আমাদের সাম্রাজ্য ছিল। সীমানাহীন বিপুল এলাকা। এবং আমাদের পা’গুলি ছিল দেখানোর মত একমাত্র পাসপোর্ট।


De deseos somos (আকাঙ্ক্ষাজাত এই আমরা)  

জীবন, নামহীন, স্মৃতিহীন, ছিল একাকী। তার হাত ছিল। কিন্তু তা দিয়ে ছোঁবার মানুষ ছিল না। একটা জীবন ছিল। অথচ তার মনে হত সেটা কেউ না, কিছু না।
তখন আকাঙ্খা তার তীর ছুঁড়ল। কামনার তীর জীবনটাকে আধখানা করে চিরে দিল। জীবন হয়ে গেল দুটি।

দুজনে একে অন্যের সাথে পরিচিত হল। তারা হাসলও। দেখা হয়ে দুজনেরই বড্ড হাসি পেল। একে অন্যকে তারা ছুঁলোও।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন