কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ১ মে, ২০১৯

দেবলীনা চক্রবর্তী




অনুভবে

তোমাকে ভালোবাসা যেমন অবধারিত,
তেমনি নির্ধারিত এই সকালও।
একটা রিনরিনে শান্ত শুদ্ধ হাওয়ার সাথে পায়ে পা মিলিয়ে এলো ঐ চন্দনরঙা ভোর,
সুগন্ধি জাফরিকাটা আলোর ছোঁয়ায় চোখ যখনই খুলল, বুঝলাম এমন দুর্বার চৈত্রদিনেও গোপন ডানা মেলে পাখি হতে পারে যে কোনো মন, মখমলি আবেগে ভর করে

বলতে দ্বিধা নেই,
এযাবৎ আমার কাছে জমা হয়েছে তোমার অগুনিত ঋণ!
তোমার শিমুল বনে যে ছড়ানো সাদা মুক্তোর মতো শব্দ, দেখে বিভ্রান্ত হই। একই শব্দ কীভাবে বারবার রঙিন মোড়কে মুড়ে জ্বেলে দাও অসংখ্য বাতিদান  সন্ধ্যের আলসেতে,
পেলব কাচের ভিতর দিয়ে ঠিকরে আসা নতুন বোধ আর হাজার আলোর বিচ্ছুরণ! আলোকিত হয় চারিধার বেজে ওঠে সাতসুরে সরগম-
অপার বিস্ময়ে মুগ্ধতায় আমার একটা একটা দিন পার হয়ে যায় আর বেড়ে যায়  তোমার ঋণের বোঝা...


মুক্তি

অর্বাচীন পাখিটিকে নিয়ে আমার ছিল ভারী গুমর,
তার চাল-ঢাল, রকম-সকম ছিল একরকম কেতাদস্তুর।
সবুজ বিটপের স্নিগ্ধ ছায়ায় থাকতে থাকতে সে হয়ে উঠেছিল ভীষণ  উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত-
প্রতিদিন তার নাজুক ঠোঁট জোড়া ছুঁয়ে যেত আমার সাধের ফুটন্ত গোলাপে, মাধবীলতার কলিতে
সকালের কাচরোদে ডানা ডুবিয়ে সে উড়ে বেড়াতো আমার নাবিক মনের মাস্তুলে
মিঠে বোলে শিস দিয়ে প্রতিটি কামরাঙা দুপুরকে আরও রঙিন করতো গভীর আশ্লেষে।

বিগত শীত-বসন্তে আমি ও সে পাখি ছিলাম, একে অপরের একমাত্র অধিকারী আর
গর্বিত অধিকারিনী

কিন্তু এ বসন্তে,
তার নীল চোখে দেখেছি নিরূদ্দেশের স্বপ্ন,
তার রঙিন ডানায় এখন পরিযায়ী গন্ধ!

তাই তার কোমল পায়ে রেখে এসেছি
নিশ্চুপে আগল ভাঙার গুচ্ছ-


মনগড়া কথারা 

জড়িবুটির মতো জড়ানো শীতপোষাকে আবার সেই জাফরানী গন্ধ 

রাতের নিঃশ্বাসপ্রশ্বাস বড় গভীর আর নিঃসঙ্গ 

যন্ত্রণাবোধ একরকমের যন্ত্রবৎ -

তোমার উপেক্ষাগুলোই আমার এক একটা কাব্যের জনক 

 শরীর তো মাটিময়, তবু তোমার শিকড় এ দেহ পেড়িয়ে যায়  

 ই তো এলো অনাদায়ী ভোর
 ছত্রে ছত্রে ফুটে আছে কবিতা - ভোরের বিবাদি বাতাসে।


দূরের থেকে

তখনও সফেদ শূন্যপাতা-
অপেক্ষাতে,
কিছু অক্ষর জন্ম নেবে। 

কিছু শব্দ মুক্তি পাবে, 
পাঁচ আঙুলের কারসাজিতে!

কিছু বোল সুর ছোঁয়াবে 
কোমল রেখাব, হয়ত বা সে গান্ধারেতে,
নাহয় নতুন লয়কারিতে!

 তুমি তখন দাঁড়িয়ে ছিলে 
 উদাস হয়ে,
 শূন্যচোখে আকাশ নীলে। 

আমি ছিলাম,
দূরের এক নীরব কোণে, 
তোমার নিভৃত সেই সাধন ব্রতের
সাক্ষী হয়ে-
দাঁড়িয়ে ছিলাম একলা মনে।









0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন