কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১ মে, ২০১৯

রিমি দে




সংসার ও রসিকচাচা 
       

জয় ইতিমধ্যেই একবার বাইরে গিয়ে দেখে এসেছে যে, রসিকচাচা ঘাড় উঁচিয়ে কথা বলে যাচ্ছে তিনতলার সাথে। অভ্যেসবশতই এরকম করে ও দেখে যেন ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে এবং ঘটবে! দুধচিড়ের বাটি টেবিলে রাখা। ধোঁয়াওঠা থেকে ঠাণ্ডা হয়ে যায় দুধ আর চিড়ে গেট খুলে বারকয়েক দেখা হয়ে যায়! এতবছর আগের বাড়ি যে সে সময়ে ঘরের ভিতর দিয়ে সিঁড়ির তেমন প্রচলন ছিল না সেই যুগে অনিল অমন জবরদস্ত বাড়ি বানিয়ে আশপাশের সক্কলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। জয় বাড়ির ছোটছেলে ব্যবসা সেসময়ে ভালই চলত। বড়ছেলে অমল সিংহভাগ দেখত হঠাত দুটো কিডনিই খারাপের দিকে, অবশেষে ডায়ালিসিস শেষের দিকে নিয়ে গেল সব অমল। বউ বাড়ি ছেড়ে দিল। বড়র সংসার তালাবন্ধ হল। টাকার পরিমানও কমের দিকে। ছোটছেলে জয় জন্মানোর পর বীণা রক্তশূন্য হয়ে গেছিল একেবারে সাদা। অথচ খলবলে ছিল অমল ওকেই বাঁচানো গেল না। তারপর কালের নিয়মে অমল বীণা তিনতলায় এখনো যেন  অনিল আর বীণা। ওখানেই দুধচিড়ের সংসার। রসিকচাচাই রোজ দুধ আর মাটি আনে। ছাদে মাটি জমে। সেখানে চারাগাছ বৃক্ষ হবে। রসিকচাচা বলে ছাদ ভূমি হবে।

জয় একতলায় থাকে। মাশরুমের চাষ শুরু করল। কিছুদিন পর হেরে গেল, তারপর হারিয়ে ফেলল কাজ। নিজেকেও হারাতে হারাতে নিজেকেও খুঁজে পায় না। ওষুধ খায় আর ঘুমোয়। ছাদে মাটি জমতে জমতে আকাশ ছোঁবে, এমন ভাবে জয় বাটি পড়েই থাকে টেবিলে। জয় তিনতলায় যায়। মাটির নিচে মা বাবাকে খুঁজতে থাকে। পায় না। খাটের ঊপর নিচেও পায় না। হন্যে হয়ে দোতলায় নেমে দেখে তালাবন্ধ। ভাবে, দাদা বৌদি এখুনি ফিরবে। আবার গেটের কাছে গিয়ে দেখে রসিকচাচার পা দুটো মাটি থেকে উপরে। অর্থাৎ ভাসমান। ওভাবেই হাওয়াতে দাঁড়ানোর মত করে  ইঙ্গিতে মা বাবাকে দুধচিঁড়ে খেয়ে নিতে বলছে। নিশ্চিন্তে গেট বন্ধ করে ঘরে ঢোকে। টেবিলে রাখা বাটি উধাও দেখে  জয় দৌড়তে দৌড়তে তিনতলায় গিয়ে দেখে ভাড়াটের মিষ্টি সাজানো  সংসার রক্তিম আর ঝিনূক।
ঝিনুক বলল, জয়দা আসুন কফি করছি ঘোর কাটে কিছুক্ষণের জন্য। লজ্জা পায় জয়। ছাদের বাগানে প্রচুর আগাছা জমেছে, রসিকচাচার ছেলে আতিফের ফোন নাম্বারটা পাচ্ছি না। একটু দেবেন, ঝিনুক...





0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন