কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১ মে, ২০১৯

প্রণব বসুরায়




বদল-মানুষ

বন্ধ ঘরে দু'একটি আসবাব সামান্য সরাই
নাইট ল্যাম্পের শেড বদলে দিলে
চেনা ঘর অন্যের গৃহ বলে মনে হতে পারে
তখন বিছানায় বসতে সঙ্কোচ লাগে
আবাল্যের শিক্ষা বসিয়ে রাখে কাঠের চেয়ারে
আমাদের ইচ্ছাগুলি তখন ছিঁড়ে ছিঁড়ে যায়
ছিপ রেখে দিই বারান্দার পাশে
আর এ্যাকোয়ারিয়ামে গুঁড়ো খাবার দেবার সময়
সেলফি তুলে রাখি
কার্তুজের বাক্স মেলে দিই ভেজা চাঁদের আলোয়
ইঁদুরের গর্তে ঢেলে দিই শস্যের দানা
কুয়োতলা সরে যায় কদম গাছের ছায়ায়
আর আমিও দেশলাই কাঠি দিয়ে তৈরী করি রাজার প্রাসাদ
এবং, তারপরে সে দৃশ্য থেকে আর নড়তে পারি না...

অথচ আমি এক মাংসাষী প্রাণী
আমার ভ্রমণপথ সিংহল থেকে সাহারা
প্রিয় খাবারের খোঁজে
আমি অনায়াসে ছাদের পর ছাদ টপকাই
রোজ রাতে  আংশিক দিনে
রবীন্দ্র সেতু থেকে বিদ্যাসাগর ব্রিজ জুড়ে দিই আলোর মালায়
পুষি রাজহাঁস, শতাব্দী প্রাচীন গাছের গুঁড়িতে ডেরা বেঁধে দিই

বিশ্বাস হয় না সামান্য পরিবর্তনে
আমিও কেমন বদল-মানুষ হয়ে যেতে থাকি...


শেষ দেখায়

শেষ দেখায় রুমাল নাড়তে নেই
বলতে নেই 'টেক কেয়ার'...
মৃত্যুর দিন ঘোষণা করে 
কলম ভেঙে ফেলাই চলতি রীতি
আমি তা যথাযথ পালন করেছি...

নীলাম্বরী শাড়ি পরে শোক প্রস্তাব পাঠ ক'রো
নতুন চটি সামলে রেখো, বেহাত না হয়
সভা শেষের আগেই চলে যেও ফোয়ারার কাছে
সে মূর্খের কথা কখনও শুনোনা আর যে বলেছে
কবিতায় উপশম হয়

মেঘ ঢাকছে, সরে যাচ্ছে প্রিয় মালভূমি
নীল বৃষ্টিতে আমার শরীর ভিজে যাচ্ছে খুব


অগ্নিপতাকা

বিবদমান দুটো শিবিরের মাঝে দাঁড়িয়ে
আমিও হাতে তুলে নিই বিষময় ক্ষেপণাস্ত্র--
যাকে শত্রু ভাবি সে-ই কি এনেছিল সতেজ বিষ
মিত্র যে তার হাতে আমলকি ফল ও ধুনোর গন্ধ
আমার 'বুল্‌স-আই', তাই বারবার নড়ে সরে যায়
রাতে চলে বিমান হানার মহড়া ও আঞ্চলিক প্রয়োগ
দিনে দেখি কয়েক’শ বৃক্ষ জ্বলে খাক হয়ে আছে...

এইসব সমান্তরাল যুদ্ধে কেউ জেতে না কখনও
কেই-বা জানেনি বলো, অনিঃশেষ কলহ-কাহিনী?

ধাতু পুড়ে ছাই হয়
ওড়ে শুধু অনির্বাণ অগ্নি পতাকা



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন