কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

অরুণিমা চৌধুরী




খনন দুপুর

মেঘ ওঠে মেঘ যায়।
  উদ্বায়ী বাতাস এসে পিষে ধরে চুল তুমি নেয়ে উঠে  গিঁট দাও, ভাবো ধোঁয়া, ভাবো
বসত আগলে ধেয়ে এলো কালসর্প যোগ
 
কে এমন খর নজর
  কে ছুঁয়ে দেয় স্বচ্ছ লিবাস ভিটেমাটি বিষ হল বুঝি   সাজানো বসতখানি 
আরেকটু পিচ্ছিল হল তবে!

আরেকটু খুঁড়ে ফেলো ঢিপি
  আরেকটু ত্রস্ত শরীর। মুখখানা শুকিয়ে এসেছে
খনা জিভ টিকটিকি মানতের সুতো
 
পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে ওঠে চাল
চাল ঘিরে লূতাতন্তুজাল মনের বিস্তারে তবে কী!

তাবৎ সংসার
  ছল।ওই যারা ঘটপট আলেয়া আলাপ  মুখ মুছে পানটি খেয়েছে,তারাও শত্তুর 
বটের শিকড় বুঝি মন পড়ে ফেলে, বুঝি তার
 
তাবৎ মাথাটি জুড়ে শিকড় নামায়!
কি অস্থির কি অস্থির মাগো!
 মাথা চিড়বিড় করে

মেঘ ওঠে, ঘন হয়,
 
সখীবৃন্দ দ'য়ে পড়ে খলবল ঢেউ

তুমি ঝাঁপি আঁটো বড় বউ
ওরা দমবন্ধ হয়ে মরে। মরাই নিয়তি ভেবে হাত গোণা
  

এবার ছক
  পাতো আঁক পাতো চালান বসাও
বাড়ন্ত সুখে কে দেয় কাঠিটি
'য়ের ভিতর পুরুষাদ্য পুরুষার্থ
 
বয়স ফুরিয়ে এলো
  প্রদীপের সলিতা উস্কাও!
খোলসে ছেয়েছে বুক। তুমি! তবে তুমিই নাগিনী!

'য়ের ভিতর থেকে ধোঁয়া ওঠে ছেয়ে যায়
আকাশ বাতাস ঘোর অসংসার
 

পিশাচিনী! এতো মেঘ আগে কি দেখোনি!
 


হাতে থাকে শূন্যের এক

শূন্যতার কিছুমাত্র নেই শূন্যতর পথ, 
তারচেয়ে বেশি শূন্য মুঠো 
খানিকদূর দিয়ে হেঁটে গেছে আলো 
আমাকে ছোঁয়নি কেউ 

দ্যাখো জল  তাতে ছায়া
নড়েচড়ে সরে বসে 
যেমনটি দেখায় তেমনটি সে নয়

আমি শিয়রে বালিশ বেঁধে স্বপ্ন দেখি 
আঠেরো উনিশ বিশ... তেতাল্লিশ
হাতে থাকে শূন্যের এক

আরেকটু বিষ পেলে ডুবে যাওয়া সহজ
অতল!  স্পর্শ বোঝো!  ছুঁয়ে দাও তবে এই হাত! 

একমাত্র জলের জাতিকা জানে ঋণ ছাড়া
 কিছুই বাড়ে না।


উদ্বাস্তু

একটা হলুদ রঙের নদী আমাকে কাঁদায় রঞ্জন 
কত কত তারা  ঝরে গেলো
শোক শুকোলো না

আমার সমস্ত ঘ্রাণে জলের শব্দ  
চোখে শিশির  পড়ে আমি কেন আজন্মের শোধ  হলুদ নদীটির শোকে পাথর হয়ে উঠি

সকাল বিকেল তেমাথায় কাক ডাকে, 
চোরাগোপ্তা খুন হয়ে যায় শ্বশুরের ভিটে
নিকোনো উঠোনে  ছিঁড়ে খাওয়া পোয়াতি শব 
কার কার লাশে মুছে গেছে  সদ্য এয়োতি কার 
অবিন্যস্ত সিঁদুরের দাগ

 সব দৃশ্য অলৌকিক  সব শোক বটের বিস্তার 
 প্রাচীন, যার শিকড়ের গভীর থেকে  
 কুলকুল শব্দ শোনা যায়  
 ছেঁড়া ছেলেবেলা  সাঁতার শেখা হয়না

 কী ভাবে একটা হলুদ রঙ ধীরেসুস্থে  মাথার ভিতর উঠে আসে!

বেড়ার ওধারে পড়ে আছে  না দেখা জমিদারি  
আগাছার মতো উপড়ে এসেছি  
ভিনমাটি ভিন্ন শিকড়  অবাঞ্ছিত এত
প্রেম এলো কই ন
গা থেকে  সোঁদামাটির  বাস বাতাস ভারী করে 
তবু  উদবাস্তু  ভুঁই 
রক্তের লোণা স্বাদ জিইয়ে রাখে 

তবুও যুদ্ধ  হয়
যুদ্ধ তোমাকে ক্লান্ত করে না!   
হলুদ নদীর পলি  মানুষের ঘাম রক্ত ঘিলু  মিশে
তখন কমলা... সিথান থেকে ধাক্কা মারে স্রোত
 ঠিকুজি কুলুজী ভেসে যায় ভেসে যায় 
 আধখানা কলিজা 
 মাথার ভিতর হলুদ নদীটি কিলবিল করে নড়ে ওঠে  
 শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন