কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

অর্ক চট্টোপাধ্যায়




কাফকা ও নিশিডাক 


পাঠক? মধ্যরাতের অখণ্ড নীরবতার ভিতর শুনবেন নাকি একটা আওয়াজ? আওয়াজ না শব্দ? দুটো কি এক? লেখার ভিতর আওয়াজ আর শব্দকে কি এক করে ফেলা যায়? 

কি আওয়াজ শুনবেন? গুলির শব্দ? নাকি সেই শব্দ যা শুনেছিল ফ্রানজ কাফকার 'দ্য বারো' গল্পের নায়ক? আত্মরক্ষার উন্মাদনায় মাটির নিচে এক সুড়ঙ্গ-বাড়ি বানাচ্ছিল সে। তারপর একদিন খুঁড়তে খুঁড়তে সুড়ঙ্গের উল্টোদিক থেকে শুনতে পেল শব্দটা। প্রথমে মিহি, তারপর ক্রমে গগনভেদী। হৃৎপিণ্ডের ভিতর গগনভেদী। তবে কি অন্যদিক থেকে তারই মতো আরেকটা লোক আত্মরক্ষার খাতিরে আরেকটা বাড়ি-সুড়ঙ্গ বানাচ্ছে? নাকি অন্তরপৃথিবীর কোন সুবিশাল দানবীয় জন্তুর ডাক? 

পাঠক জানেন, কি ছিল ঐ শব্দ? 'দ্য বারো' গল্পটি কাফকা অসমাপ্ত রেখে যান। ১৯২৩ সালে যখন লিখতে শুরু করেন, শরীরে মৃত্যু তখন কথা বলতে শুরু করছে। ল্যারিংক্সে টিউবার কিউলোসিস। একজনই জানতেন 'দ্য বারো' গল্পের শেষে কি হয়েছিল। তিনি কাফকার শেষ প্রেমিকা ডোরা। ডোরা কাফকার কথামত ধ্বংস করেন গল্পের শেষ পাতাগুলো। খননকার কি লড়াই করেছিলেন মাটির গভীরের দৈত্যের সঙ্গে? জিতেছিলেন না হেরেছিলেন? তার সুড়ঙ্গ শরীরে কি শব্দের প্রতিধ্বনি উঠেছিল?

'দ্য বারো' অসমাপ্ত হয়েও সমাপ্ত। আর এই লেখা সমাপ্ত হয়েও অসমাপ্ত।  তার কারণ পাঠক মধ্যরাতের অখণ্ড নীরবতার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েছেন। এই লেখার শব্দেরা ঘুম ভাঙানি গুলি। পাঠকের কানের সুড়ঙ্গে গল্পের দৈত্য হয়ে ঢুকে পড়ছে। 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন