কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

ওবায়েদ আকাশ




আমাদের নিবার্ণকাল   

তারকাঁটায় হেঁটে হেঁটে একদিন ঠিক পৌঁছে গিয়েছিলাম
নিষিদ্ধ শরীরী বিদ্যায়
আমার শরীর তা জানে
যেভাবে তোমার অতীত তা মানে  

এখন এতদিন পর স্মৃতিচারণের মতো চিহ্নগুলো
গলায় ঝুলিয়ে ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্য প্রদর্শন করে চলেছি

আমাকে দেখলেই তোমাদের গৃহপালিত নদী
মুখ লুকায় উত্তাল দিনের সামুদ্রিক সন্ত্রাসে
তোমাকে দেখলেই আমাদের প্রহরারত মাঠে
অশ্বদৌড় কেঁপে ওঠে মধ্যরাতে অকুণ্ঠ উত্তাপে  

আজকাল ঊনঘুম ঊনঅন্নে রাত জেগে তীর্থ রচনা করি
পুরনো নোটবই ঘেঁটে অনাবশ্যক বাক্য কেটে
                        ভুল শুধরে নিই

আজকাল গঞ্জে বাজারে ঘুরি, নানা বরণ মানুষ ঘেঁটে
চোখে চোখে খুঁজে দেখি শরীরী সম্পর্কের ভাষা

আমাদের এই বিদ্যা ভেসে উঠেছিল
ঢলে পাওয়া কইমাছের দিনে; আজও কেউ জানেনি তো
দুজনেই মজে আছি সেই এক চিরকালীন নির্বাণের ঋণে


অক্ষর  

তোমাদের জন্য যা লিখেছি
তার অক্ষরগুলো কোনটা ভিখেরি কোনোটা পাগল
কোনোটা বধির আবার সত্যি বলতে কি
কোনটা মার্কিন প্রশাসনের ন্যায় ক্ষমতাবান

এই যে দেখছ আমার অগাধ পাণ্ডুলিপি
ব্যাপক মলাটের নিচে গুপ্তহত্যা, প্রকাশ্য প্রেম
গোপন বিরহ, মিথ্যে অহংবাজি
আলেখ্যর নির্ঘুম বাড়ি, খনন-নির্মাণ তাদের প্রকাশ্য আশ্রয়

আরো কিছু অক্ষর যারা প্রাক-বৈবাহিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে
রেস্তরাঁয় মাঠে প্রকাশ্য প্রেম করেছিল
মৃতকে বিস্মৃতি আর অসহ অক্ষমতার নাম রেখেছিল খুন
একদিন নিজেরাই খুন হয়ে হয়ে ঢুকে পড়েছিল 
শবের মিছিলে, ঘুমিয়ে পড়া বিদ্যাভ্যাসের মতো লেখার খাতায়

আরো কিছু অক্ষর কিংবা অনক্ষর
যাদের নিজেদেরই সাক্ষরতা ঘিরে প্রশ্ন রয়েছে
কখনো বাজারের ফর্দ, কখনো পুলিশের ভয়ে
গভীর অজ্ঞাতবাস বলে নির্বাচন করেছিল আমার বিষণ কবিতা

দুচারটি অক্ষর যারা কখনো হাঁটেনি ঘাসের মূর্খতা
ব্যবহৃত দাম্পত্যের ঘ্রাণ, আবশ্যক উচ্চাশার ভেতর...
আজ দেখি তারা নদীতীরে মাছের শৃঙ্খলা জুড়ে
খসে পড়ে গেছে দাউদাউ আগুনের উচ্ছিষ্ট খাবার


অনুনয়হীন

ঘাসবিচালিময় ছন্দে রচনা করেছ
           উজ্জ্বল আলোর উৎসারণ
রাঙিয়ে দিয়েছ ধর্তব্য বিষয়াবলি ছেড়ে
             নিরবচ্ছিন্ন বিপরীত দৃশ্যাবলি

চলো গাছে উঠে ভূদৃশ্য ছাড়িয়ে লিখি
পূর্বাপর অবিশ্বাস্য মেঘে পাওয়া জলের ঘটনাবলি
লিখি অঝর বর্ষণের দিনে ছায়াময় হৃদয়ক্ষরিত
                    অসহ বেদনাবিধূরতা

গলুইয়ের ভেসে উঠবার আগেই যারা
উঠে পড়েছে শতাব্দীপ্রাচীন ছেঁড়াখোঁড়া জরাজীর্ণ ঢেউয়ে
তাদের বুকভর্তি কুয়াশার দীর্ঘশ্বাস আর
চোখভর্তি লতাগুল্মময় দুঃস্বপ্নের মাতাল আশ্রয়

চলো খোলা প্রান্তরে বাতাসের সৌন্দরয ঘেঁষে
ফেলে রেখে আসি অনুদ্ধারিত মাটির বেদনা
আরো দূর আখ্যানসীমায় ছড়িয়ে আসি প্রশস্তি আর

অঙ্কুরোদগম কালে প্রতিটি পাতার মহলে
থেমে থেমে রচনা করি অনুনয়হীন আলোর ভঙ্গিমা




0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন