কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

প্রণব বসুরায়

তারা-কথা


(১)

এক একটা ঢেউ আসে, খুঁটি নড়ে যায়
জোর হাতে ঠেলে দেয় ঘুর্ণির দিকে...
এ সময়ে পাল ছিঁড়ে গেলে
হালের মাঝি ব্যর্থ হয় সামাল দিতে
অতএব নৌকোটি ডুববেই খরস্রোতা ঘোলা জলে

কিছুদিন পরে, তাকে ফের দেখা যেতে পারে - অন্য কাদায়
তখন সে উপুড় হয়ে, খুঁজে নিচ্ছে যাপনযন্ত্রণা

(২)

উঠোনে শোয়ানো আছে শব
তার মাথা থেকে গড়িয়ে পড়া ঘিলু খুঁটে খায়
অন্য পাড়ার কাক... অসীম খিদেয়

সে দৃশ্যে কেউ কেউ হাততালি দেয়
সোল্লাসে বলে ওঠে চিয়ার্স, চিয়ার্স...

(৩)

রাতের শূন্যতা ভিজছে বৃষ্টিতে
দেখে আমার শীত করে, জ্বর আসে...
মোটা চাদর জড়িয়ে শুয়ে পড়ি
দূর থেকে লাশ মনে হয়
যে যাবে মর্গের পথে...

ঘুম ভাঙলে দেখো
ধূপের হাল্কা গন্ধ কিন্তু তখনও রয়েছে

(৪)

বালিশে মাথাটা রেখেছি আমি যেই
দেখি কেউ আশপাশে নেই--
সবাই শুয়েছে ঠিকঠাক
আমাদের মাঝে এত ফাঁক!

বহু দূরে ডাকছে কুকুর
শব্দে ভাঙে এ হৃদয়পুর...


মহানাগরিক

তুমি মহানাগরিক
তাই শেকড়ের কথা
বুঝতে পারোনি কোনোদিন
কী ভীষণ অন্ধকার মাটির গভীরে, কতটা উত্তাপ
শ্বাসরোধী সেই ঘনত্বে--
সব কিছু মনে মনে মেপে নেওয়া যায়?
জল-তল খোঁজার ভার
সবুজ পাতার নয়
সে শুধু দুলবে হাওয়ায়, সরে যাওয়া ছায়া দেবে
উঁচু বাড়ির ছাদ, অকস্মাৎ
গানে ও কলহে, ঘূর্ণির মতো

পুরনো পোস্ট অফিসের পাশের বাড়ির বাসিন্দার
আসন্ন ঠাঁই-বদল
প্রকৃত প্রস্তাবে -- বর্ষা ঋতুর
স্বয়ং রবি ঠাকুর একশ গানের ডালি নিয়ে মজুদ আছেন
নগরের কান-ফোনে তিনি সদাই বাজেন...

তন্দ্রা আসে, ঘুম পায় -- তোমার বিছানা নিজেই পেতেছো

শেকড় ঘায়েল করার কৌশল মাটি তো জানেই

2 কমেন্টস্: