কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ইন্দ্রাণী সরকার

ঋষি উপাখ্যান


(১)

ঋষিমা দোলনায় দোলেন
দু’হাতে দুই কবুতর  
ঋষি ধ্যান ভেঙে অস্ফুটে বলেন,
ওগো আর কত দুলবে,
তোমায় হেরি মন মোর গেল দুলি
চিত্ত আকুলি বিকুলি
কৌপিন গেল খুলি
দন্তবিকশিত ঋষিমা
খিলিখিলি হেসে বলেন,
না গো শুধু কি তোমার তরে দুলি?
পড়ে আছে সারা জগৎ তাদের কীভাবে ফেলি?

(২)

একলা বাঁচে, একলা বাঁচে ঋষি
গাই গুণে গুণে হিসেবে করে
এক দুই তিন চার এবার
মার মুখে জুতো মার
খালি বৌটারে মারিস না
সে যে আমার দোলনা
নিশপিশে চারটে আঙুল
কষে লাগাই চড়
ঋষিমা কাঁদেন
ওরে ও ত্রিকালজ্ঞ ঋষি
বোধের ঘরে লম্ফ জ্বলে
ধর ওকে ধর!


নথনাড়ানি কাব্য
             
ঘামজ্বরেতে ভাম বেরোলো ঘামটা নাকের ডগায়
পুঁইগাছেতে ঝুলছে মোচা ঘামকাজলে কাঁদায়
কোমর বিছে, গলার বিছে, বিছিয়ে শীতলপাটি
নথনাড়ানি কাব্য লেখে ঘামের পোড়ামাটি  
ছন্দ নিয়ে খেলবি যদি মায়ের মাথায় কাঁটা
পানপিঁড়িতে পানের বজর বজরা জলে হাঁটা
চৌদিকেতে ছই নেচেছে খইয়ের ফেলাছড়া
মন যমুনায় প্রেম নেচেছে চক্ষু ছানাবড়া


আমার হরিণ
              
ক্লান্ত শেষ প্রহরে মেঘের ঘোমটা তুলে
যখন অঘোরে ঘুমোয় গোধূলিবেলা
চোখ তুলে দেখি তুমি দাঁড়িয়ে
সদা জাগ্রত একটু অন্যমনা
যেন জাগতিক দৃশ্য থেকে বিচ্ছিন্ন
পাতার ফাঁকে দুলে ওঠে অপরাজিতার ঝাড়
তোমার যত্ন হাতে লাগানো
মৃদু বাতাসে দোলে পাখিদের ডানা
নিশ্চুপ জলে ভাসে মুখের ছায়া
তোমার চোখের ঘন কালো তারায় মায়াদৃষ্টি
কবে যেন কোনো কৃষ্ণাতিথির রাতে সাথ নিয়েছিলে
এখন আর মনে পড়ে না
কবে যেন তোমার গালে ঠোঁট ছুঁয়েছিলাম
তাও ভুলে গেছি, মুখ মুছিয়েছিলাম কি?
বল ত' কেন ভুলে যাচ্ছি সব একটু একটু করে?
ইদানীং যখন নিরাশা ঘিরে নেয়
পাশে পাতার খসখস আওয়াজে বুঝি তুমি আছ
শুধু একটু ডাকার অপেক্ষা
তোমার এই অনন্ত প্রতীক্ষার আদলে আমি নত হই

অসীম ভালোবাসায় আর মমতায় আমার হরিণ

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন