কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

দেবযানী বসু

প্রোফাইলের একক প্রজনন


(১)

দুঃখ বেশি হলে আমি নেড়িক। ক্রসস্টিচে পড়ে একক প্রজনন সৌরভী বিরিয়ানিতে পুতুলরা খেলা করে আমার ইথিওপিয়ার ডিশ মনে পড়ে খবর হয়েছে দশ বছরের পুতুলটির মা বনে যাওয়া স্বপ্নের ব্যাখ্যা স্বপ্নেই চোখ রাঙায় 
ঝগড়ার আঠালো সুতো দিয়ে সারা দেহ প্যাঁচানো আমার অথবা পুতুলদের কুমিরঘোলা বাজার রক্ত আলতা পায়ে ঘোরাঘুরি করে পেট বরাবর  দ্বিখন্ডিত আমিলিকলিকে শিরদাঁড়া জোড়া দিয়ে রাখে আমাকে সহেলিরা গাছকোমর বেঁধে টানাটানি করে তোমাকে গড়ে ওঠে ডলারের সমান আদরণীয় সম্পর্ক 
'যে রাতে মোর দুয়ার'এর মতো দুয়ার নেই আমার গ্যালারির দেওয়ালে দু’হাতের  ভাঁজে রাখা মুখটাকে যেই ধরতে যাও কারা যেন রেইড করে হলঘর আমার  পোশাকটাকে তারা টাঙিয়ে দেয় মৃত্যু পশুর ছালচামড়ার মতো গ্যালারি ছেড়ে এসে দেখি বাসস্টপের বিয়ে হয়ে গেছে যে গল্প ছুঁতে গেলে কাচের ফুলদানি হয়ে ভেঙে পড়ে তার জমিতে  হাজারো  আইডি
অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ুতে স্বপ্ন নিয়েই পরের জন্ম নেয় শিশুতারা আঙুল কামড়ানো ভুল আর ভ্রূণ পূর্ব জীবন থেকে পাই আমি রামধনুকে পূর্ণ বৃত্ত দিতে দিতে যৌবন  আসে মনে  পড়ে তুমি ছুঁতে এলেই স্তন মিলিয়ে যাচ্ছে আমার তখনো কয়লার  উনুন আর হ্যারিকেনের আলো নক্ষত্র চেনার কাজে লাগত নস্টালজিয়ার বিপরীতে রিল সাজানো সাপের শরীর শর্টহ্যান্ড শেখার ধেড়ে ইস্কুল প্রতিটি সংসারের আলাদা জাতীয় সঙ্গীত
মেজে তোলা বাসনপত্রে ঘসে তোলা সোফা ডিভানে জলস্রোতে ভাসা ফ্রিজের বক্তব্যে ভ্রূণ চিহ্নন স্বরভঙ্গী মুহূর্তে পাল্টে পাল্টে যায় রেহাই নেই সামান্য হেয়ার কালারের তার হাত মুচড়ে দিয়েছে কেউ প্রান্তিক সোপানের স্বেচ্ছাচারিতা কিংবা  উদ্দেশ্যহীন সোডিয়াম পটাশিয়ামের গন্ডগোল হঠাৎ করে একই লাইনে দাঁড়িয়ে যায় লাইনটা ভক্তিগীতির হিংস্র ঘুমের নাম কোমা লাথি খেয়ে কঁকিয়ে উঠছে কোমার অপরাধ ওহ ঐ মৃত্যু পছন্দের নয়

(২)

বাচ্চারা গন্ধ শুঁকে ঢুকেছে তেলপিচ্ছিল গুহায় ওদের মিনিমাম একটা করে পাছা,  দুটো করে মাথা, খেঁকুটে হায়নার চোয়াল নৈ-ঋত দৃষ্টিতে তাদের সিংহ বলে ভুল হতে পারে রক্তের জঘন্য তক্ষক অসুখ-বাসা বানিয়েছে ঘুম দুপুর দুটোয় ভাঙলেও থরে থরে নাস্তা সাজাতে হবে
আমার গ্রামবাংলা ফ্রকের বালিকা শরীর নিয়ে ওদের মাথাব্যথা নেই তুমি তো আমাদের চির সুইট সিক্সটিন মা কিছুটা অচেনা এক স্মৃতিভ্রংশতায়... পানাদাম বাচ্চারা বারান্দার টবে টবে আলকাতরা ঢালছে কাঁচা খিস্তির শুরু খানকির পুত্রকন্যা  দিয়ে, শেষ কোথায় তা ছানাকাটা স্বপ্নও বলতে পারে নি 
এক মহূর্তের জন্য স্বপ্নের বাইরে আসি হাউই থেকে মহাকাশে আসা যেনড্রেপদোলানো লেহেংগা সরিয়ে প্রিয়জনের বালিকা ভৌতিক গল্পের পা দেখায় চিরুনির ঘা মারতে তা আলগা হয়ে এল এই জানু পাড়ার পাগলা হরেনের ছিল আমাদের ডাকবাক্স খুলে সে (সবে লার্ভা থেকে পিউপা হয়ে আসা) আমার সহপাঠি বন্ধুর প্রেমপত্রটি জোরে জোরে চেঁচিয়ে পড়ছিল ডাকবাক্সের স্বাধীনতায় তালা পড়ে গেল ক্রমশ গজাল তালার কোটরে গুচ্ছরোম সদ্য কিশোরীর
বাসুকিনাগের পরিবার জানালায়  সাপেরা শিক জড়িয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করে একে অপরের পেটে কান চেপে ধরে শুনি পালস্থলীর কৃমি অভিলাষ আয়নাকে বোরখা পরিয়ে সবে গাড়িবারান্দায় এসেছি সারি দিয়ে হিন্দু সৎকার সমিতির কাচের গাড়ি পরস্পরের মৃত্যু চেয়েছি চাতকের তৃষ্ণাকে হার মানিয়ে এখন নিজেদের জেদে আর কাঁদতে পারি না 
শ্মশানের গৌরব লক্ষ লক্ষ ফাইল ফাইলের চিতাকাঠ কাকতাড়ুয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয় কাকদের ডেকে আনারবইপত্র মানপত্র সের দরে বিক্রি করছি আমি নিমগাছের ছায়ায় বসে ঘর পুড়ে গেছে বইয়ের আগুনেদুটো সমান্তরাল রেখার একটা আমি শামুকের গর্জন শুনে গুটিয়ে যাই একটাই ভরসা শামুক আঁকাবাঁকা পথে হাঁটে না 
আইন পড়া ঘোড়াকে ওষুধের কাছে আনা যায়, ওষুধ খাওয়ানো যায় না

(৩)

একসময় ধ্বজভঙ্গের প্রকৃতিতে স্বপ্নভঙ্গ হয় ভোরের মর্যাদা যে স্বপ্ন পায় তাকে লালন করি বাজি লাগানো ঘোড়া আইন পাশ করে যাবে সব ঠিক ঘোড়ার  অবাধ্যতায় ব্যবস্থা পত্রটি ধনুষ্টংকার রোগে দুমড়ে মুচড়ে নীল হয়ে যাচ্ছে  সুজির মোড়কে ভেজে ফেলি বম্বেডাক মেসেঞ্জারে পোস্ট দিয়েছি দেখবেন পচা সিমেনের গন্ধে কাকেরা আসে ওদের প্রতি গর্বে আমার ধ্বনিরূপ দিয়েছি দান 

এখনও দেওয়ালে টর্চ মেরে স্বপ্ন দেখাই বাড়ি নিস্তব্ধ কলিংবেলের আর  দায়দায়িত্ব নেই মানুষের সমান মহান ইঁদুর তার পরচুলা আর অভিনয় চিবিয়ে খায় বুড়ো আঙুলে নেলপালিশ দাগানোর পর মড়া নাম্বার চারশো বিশ পায়ের বুড়ো আঙুলটি নাড়াই স্ট্রোক হবার কথা ছিল অথচ হলো না -- গল্পে বিশ্বাস না থাকার বিশ্বাসঘাতকতায়। 

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন