কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মলয় রায়চৌধুরী

রাস্তার কবিতা

ডাক্তার বলেছে রোজ সকালে একঘণ্টা হাঁটুন
ডায়াবেটিস আর হৃদরোগ নিরাময়ের সবচেয়ে ভালো ওষুধ--
বেরোলুম সকালে ফাঁকা রাস্তায় হাঁটতে

এরকম উদ্দেশ্যহীন হাঁটার কোনো মানে হয়!
আমি তাই রাস্তায় পড়ে থাকা কাগজগুলো কুড়োবার কাজ
আরম্ভ করার কথা ভাবলুম
কী লেখা থাকে তাতে? কেনই বা তাদের গতি শেষ পর্যন্ত বেওয়ারিশ
পথশিশুদের মতন হয়!

কত মানুষের পরিশ্রম! কাগজের কলে মণ্ড তৈরি থেকে মেশিনে
তাদের পাতলা করে শুকোনো, কেটে সাইজ করা
তারপর বাজারে ছাড়া

সেই কাগজ কিনে বই খাতা সংবাদপত্র কত কী হয়!
তবু শেষ পর্যন্ত তাদের গতি রাস্তায় কেন?

কাগজ কুড়োনোর কাজ আরম্ভ করে প্রথম ছেঁড়া-নোংরা কাগজের টুকরো
তুলেই কাজটা ছেড়ে দিতে হলো
কাগজটা দিয়ে দিলুম কুড়ানিকে
যে আঁস্তাকুড় থেকে কাগজ বাছাই করছিল

আসলে যে কাগজটা তুলেছিলুম সেটায় দেখলুম
আমারই একটা কবিতা, ‘কালিমাটি’ পত্রিকায় বহুদিন আগে
প্রকাশিত হয়েছিল


শাকাহার

"বাঁচাও বাঁচাও"
শুনে মনে হলো কোনো কিশোরের আর্তচিৎকার
ওই বিশাল বাড়িটা থেকে শোনা যাচ্ছে
"বাঁচাও বাঁচাও"
রাতের অন্ধকারে ঢাকা প্রাসাদের মতো
প্রাচীন বাড়িটা
ভাবলুম, কী করব, কিডন্যাপারদের সামলাতে পারবো না
যা হবার হোক, ঢুকে যাই, দেখা যাবে
জীবনে তো সবকিছু পাওয়া হয়ে গেছে
এখন কিডন্যাপারের ছুরি বা গুলিতে মরলেও ক্ষতি নেই
ঢুকে গেলুম চুপচাপ হাট-করে খোলা বাড়িটাতে
"বাঁচাও বাঁচাও" যে-ঘর থেকে আসছিল
সরাসরি সেই ঘরে ঢুকে দেখি, বাচ্চা ছেলেকে
ডাইনিং টেবিলে বসিয়ে খাওয়াচ্ছেন তার মা
আমায় দেখে উনি বললেন, কী, আপনিও নিশ্চই ভাবলেন
এটা ছেলেধরাদের বাড়ি? কীই বা করব বলুন
আমার ছেলেটা মাছ-মাংস খেতে চায় না একদম
আজকে চিকেন হয়েছে, চিংড়ির মালাইকারি, মুখে দিচ্ছে না
খাওয়াতে গেলেই লোকজড়ো করবার জন্য ওই বিটকেল
চেঁচানি, "বাঁচাও বাঁচাও"; ছেলেটি আমাকে বলল, দাদু
তুমিই বরং মাংস আর চিংড়ি খেয়ে যাও--
আমি পালংশাক ভাজা আর মোচার ঘণ্ট শুধু খাবো ভাত দিয়ে


2 কমেন্টস্: