কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬

আসমা অধরা

সূর্য-লগ্না সমাচার


আনত দৃষ্টি জানে, কি ভীষণ ব্যর্থতা
মেখে থাকে শূন্য চোখ; আর
শরবিদ্ধ পাখির বুকে কতখানি 
রক্তারক্তি কান্ড।
আমলকী পাতার ফাঁক গলে অস্ফুট
অভিশাপ উঁকি দেয়
ইতিউতি ছুঁয়ে যাওয়া হাত জুড়ে ক্লেদ,
অমানিশা-
মুখে তবে কালিমা মেখে রাখি!
পুড়িয়ে দিই আগুনে নিবিষ্ট চর্মরেণু... 

বিনম্র পাতা গো, তোমার সারা শরীরে
এই যে এতো উপাসনা লিখে রাখি-
কবিতা সদৃশ;
তবুও জোর হাওয়ায় সেসব চিঠিগুলি
কাঁপে, উড়ে যায় মোটিফের মতো!
দেখে দেখে অবাক নিঃশ্বাস থমকে
শ্বাসকষ্ট ব্যাপক, হৃদশুমারীর পাশেই-
ভাঙ্গা ক্যানেস্তারা বাজে এক!
গোথিক গীর্জার পাদ্রী, চুমুকে চুমুকে
শুষে নিও বিষ,
ওইখানে, অসমাপ্ত প্রেমের পাশে শুয়ে
থাকে মৃত শ্বাস ও আহাজারি।

আহা! কবিতারা উড়ছে, ছেঁড়া 
ডায়েরীর পাতা
যারা ভাবে বিচ্ছেদ ভালো, আকন্ঠ প্রেম
তাদের নয়।
পাললিক হৃদপিণ্ডে টেরাকোটা আঁকো,
ডুবিয়ে দাও প্রিজার্ভ তরলে, আর-
সংস্কৃত শ্লোকের মতো দুর্বোধ্য আয়াত
পড় দুলে দুলে;
এইখানে প্রস্থানের তুমুল আয়োজন।

গুণী হেভালোবেসে দেখি হেথায়,
প্রতিদিন সহস্র কথার মরণ,
বধ্যভূমে জীবন যাপন!
তাই কার্যত ও বাহ্যতই মৃত্যু সে
সাবলীল সমাধান;
মুখর করে যাই কূলবর্তী নোঙর
তোমার।


ক্ল্যাপস ফর আ অলরাউণ্ডার

উঠোন জুড়ে উড়তে থাকা প্রজাপতির ছায়া নেচে বেড়ায়, তার পেছন ছুটতে ছুটতে লজ্জাবতি কাঁটা চিরে দেয় সেই, সে-এ-ই একদা সুস্থ পদতল। ঠিক তখনি বেজে ওঠে এক পাগলাঘন্টা; 'পালিয়েছে ফের'- বলেই মুচকি হেসে মাথার ঠিক উপরে চলে আসে সূর্য। হন্যে হয়ে খুঁজি নিজের ছায়া, নিজের চারপাশে দু'হাত ছড়িয়ে চরকি ঘোরা হয়ে আঁকতে থাকি বৃত্ত। মন বিড়বিড় করে এক হোয়াইট মার্কার বোর্ডের গোটা হরফে লিখে রাখা উলম্ব বোধ। ছায়া গো! আরো উদগ্র হয়ে থাকো, বুকের ভেতরে স্ব-অহম কেমন ক্ষ্যাপা হয়ে খোঁজে সেই রংগিলা ফানুস, হুশের সমাচার, এক পিদিমের পুড়ে যাওয়া সলতে। অথচ যে আহুত আগুন পুড়ে দ্যায় সব, তার জন্যেও নিয়মিত তেল ঢেলে ঢেলে উজ্জীবিত করতে হয় তাকে, এর নাম উপাসনা বুঝি! এইসব ফেমিনিন ছায়ারা বড্ড অস্থির, স্থিরতম নোঙরের গিঁট খুলে কোথায় কোন সমূদ্রের তলদেশ ভারী করে আছে... যে বস্তু খুঁজে পাওয়া যায় না, তাকে কি বলে ডাকি? ঈশ্বর, পরাবাস্তব নাকি অধিবাস্তব! নিজেকে সুপ্রাচীন শিলাখন্ডের মতো নিস্তব্ধ, সুনসান লাগে, এই গ্রহে একটিও কথা বলা সবজান্তা বৃক্ষ নেই! এইসমস্ত তালাশেরা খুব নৈঃশব্দ্য জানে, মুখে কুলুপ এঁটে থাকে প্রজ্ঞাবান শতবর্ষীয় বট, আর তখন কোথা থেকে এক অতিকায় ফ্যালকন উড়ে আসে- টেনে নিয়ে যায় কুয়াশার চাইতেও অধিক ঝাপসা মর্ত্যের গহীন পাতালে, যেখানে ক্লান্তি, জরা, বৈকল্য ও প্যারানরমাল অস্তিত্বেরা মিলেমিশে এক অতিকায় পাণ্ডুলিপিতে লিখে যায় ভিজিটর'স অ্যাকটিভিটিজ। এই সব দিনরাত্রির মাত্র কিছু উত্তর নিয়ে ছুটে আসো, বিড়বিড় করে মন্ত্রের মতো ঢেলে দাও কর্ণকুহরে, ছুঁয়ে দাও উদগ্রীব অস্তিত্বের ব্যাকুলিত অভ্যন্তর। একবার জেনে নিয়ে মরে যাবার সময় বিধাতা বলেই মেনে নিয়ে, সে তুমি যেই হও- মানবগোত্রীয়, প্রেতাত্মা অথবা নুরের ফারিশতা-- এসো, নেমে এসো এই মর্ত্যে, ধরায়- একটিবার। 'পরম' বলে কেবল একটা ক্ল্যাপস বাজাবে বলে হাত দুটো অধীর প্রতীক্ষায়... এসো!

1 কমেন্টস্: