কুয়াশামাছ
মন খারাপের মনখারাপ হলে টুপুর পুকুরঘাটে চলে যায়, জঙ্ঘা
অবধি জলে ডুবিয়ে তেচোখা মাছ দেখে। কিছুটা সময় পরে জলে মাছ খেলছে, না
তার নিজের চিন্তারা, টুপুর
বোঝে না। টুপুরের মাথা ফাঁকা হয়ে আসে, মাছগুলো জল থেকে উঠে উঠে আসতে থাকে মাথার
মধ্যে। টুপুরের মাথার ভিতর একটা গোটা পুকুর, আর সেই পুকুরে ঘুরপাক খায় কুয়াশামাছের
দল।
টুপুর মাছ খায় না। তার কষ্ট হয় মাছদের মরে যেতে দেখলে।
মাছেদের জীবনের purpose টুপুরকে
হতবাক করে দেয়। বাবার বড় গোল থালার এককোণে শুয়ে থাকা তেল কইকে টুপুর চোখে চোখে
জিজ্ঞেস করে, এতই সহজ? জীবন?
কই কিছুই বলে না, গোল গোল চোখে সিলিং ফ্যানের ঘূর্ণন
দেখে চলে। টুপুর টেবিল ছেড়ে
উঠে যায়। মাছের গন্ধে তার বমি আসে। টুপুরের মাছ না খাওয়ার আরেকটা কারণ হলো,
অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে একমাত্র মাছই টুপুরের সাথে কথা বলে। যাদের সাথে টুপুর কথা বলে, তাদেরকে সে খায় না।
পুকুরের একটা নিজস্ব গলা আছে। সেই গলায় পুকুর দুপুরবেলা টুপুরকে
ডেকে নেয়। মন খারাপের মনখারাপ না হলেও টুপুর এমনি এমনিও পুকুরে এসে বসে। ফড়িঙের
ডানার থেকে রোদ এসে ঝলসিয়ে দেয় তার চোখ। টুকটাক গাছেরাও ছায়া দিয়ে যায়। এই সবজেটে
জলের দিকে তাকালে কীসব ভেবে ফেলা যায়। পায়ের পাতায় টোকা দিয়ে যায় কুচো মাছ। টুপুর জলের মধ্যে উঠে দাঁড়ায়।
সিঁড়ি দিয়ে নেমে যায় জলের দিকে। জলের মধ্যে ডুব দিয়ে টুপুর চোখ খোলে। ঘন সবুজ
চারপাশ, ওপর থেকে অদ্ভুত সব আলো নেমে আসছে। মাথা তোলে টুপুর।
টুপুরের মাথার ওপর সিলিং ফ্যান বন বন
ঘুরছে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন