কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৩

০১ ঊষসী ভট্টাচার্য


রুদ্র-নবনীতা সিরিজ

(নবনীতার ডায়েরি থেকে)
 
()
রাস্তায় ঝোলানো ব্যানারের ধারে কত মৃতদেহ,
তোমার আমার ঝুলনো শব!
আতঙ্কের চোখে চেয়ে আছে নবজাতক!
কি ঘোর বিপত্তির আঁচে পুড়ে ছাই হবে বারুদজন্ম;
পলাতক রুগ্ন দৃশ্য সেই অপেক্ষায়
অপেক্ষাতে অপেক্ষাতে ফের প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে গেল
তৃতীয় মেল ট্রেন,
খবর আসেনি কোনো  
জোনাকি রোদ্দুরও জেনে গেছে
ওয়েটিং কল মানেই আরেকটা বিশ্বাসঘাতকতার চাবুক,
চাবুক মানেই রক্তদাগ,
দাগ মানেই ফের স্মৃতির কম্বল চাপা
দেওয়াল জন্ম নাগরিকতায় আবার! 
দেখো রুদ্র
আকাশটা ছেয়ে গেছে দেওয়ালে দেওয়ালে,
এত দেওয়ালও কি পারবে আরেকটা বারুদ জন্ম দিতে?

()
আগের মতো শব্দের তুফান ঢেউয়ে ভাসে না অবিরাম  
তুমি নাকি বদলে গেছ,
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ময়ূরপঙ্খী বলেছে নিখুঁত  
এইটাই নিয়ম, এইটাই হতে হয় এখানেই
কলের জলের শব্দে,
স্থির হেঁটে চলা হাতের আঙুল  
পাথর সারি সারি 
সমতল ছুঁই ছুঁই ঢেউ 
তুমি নাকি আগের মতোন   
নও কেউ, সেই অবিকল সব এক
আমি সেই কলম চালনা সেতু
অভিধানে একটা দুটো তিনটে 
দেওয়াল সূচক শব্দ সংযোজন   
বিপাশা নক্ষত্র জন্ম,
আকাশ জুড়ে প্রশ্ন চাদর
বদলের আলতা কে পড়ালো পায়ে
তুমি কি আদতে আছো?’ 
 
()
কার কাছে দিয়ে যাব তোমাকে?
বুঝতে পারি না
অঙ্গহানি প্রত্যয়ে মুখ চুবিয়ে চুপ তারপর 
সন্ততি বা ভ্রষ্ট বুক 
নষ্ট করছে তোমার চশমার কাচ 
মল্লিকা, মালবিকা, নিরুপমা 
হাতাহাতি করছে তোমায় নিয়ে
করুণ ঠোঁটে থুতু গিলে খাচ্ছে নবনীতা।    
আলনায় মেলা কালো পাঞ্জাবীর সেন্ট
বুকে সিটিয়ে রাখবে সে! 
তুমি বিছানা - বিলাস বিকিয়ে দিয়েছ নাটকের রিহার্সালেই 
তোমার আমিটাকে রেখে যাব কোথায়?
সেটাই বুঝতে পারি না।
যখন পালানো দুপুরে 
নির্জনতার খোঁজে একলা মরা ফড়িং...
তখন একলা ট্রাম কন্ডাকটার
হেঁটে চলে গেছে একা একা ট্রাম গাড়ি। 
আমি সেলফিন পেপারে মুখ ঢেকেছি।
তোমাকে রেখে আসতে পারিনি।
তাই আজো গর্ত খুঁড়ে,
বীজ বুনছি আগাছার।
  
(রুদ্রর বৃষ্টির বাঁশি)

(১)  
চাহিদার ঢেউয়ে ভাঙো না আর
নদীর দুপার
থেকে থেকে আলগা হয়ে গেছে বালি -
শুকিয়ে উঠেছে বুকের চর
কেমন যেন নিম্নগামী ধারা
জোর খাটানোর বিক্ষোভই নেই, নীতা?
আগুন দিয়ে যাও...
অপেক্ষার বারুদ তলানিতে আজ,
জল দিয়ে নরম কোরো না মাটি
শুকনো বুকের উঠোন
আগুনই, বড্ড প্রয়োজন 
বিকেলে আজ সমুদ্র হবে?
ঘুরে আসব বালিয়াড়ি,
নোনা ঢেউ আসেনি - 
শরীরে বহুদিন। 
আমার শরীর,
তোমার ঠোঁট পাহাড়ের ঋণ।
এখানে গর্ত, ওখানে গর্ত 
নীলাচল বড্ড ডাকছে নীতা...  
পাহাড় জমাট পাহাড় জমাট শুধু।
তুমিই আমার খরস্রোতা

(২)  
মরীচিকা টানতে টানতে শরনিক্ষেপ ফেরালো একেবারে
দেখো, নবনীতা কত গভীরে এসে পড়েছি থিতিয়ে,
আর কোথাও যাবার পথ নেই,
চেরাপুঞ্জীর বৃষ্টি আসেনি এখনো - 
এখনো মেঘ মেলেনি ডানা। 
নবনীতা, এমন মরীচিকা হয়ে
পালিয়ো না অনন্তে   
তোমাদের মতো ঝকঝকে দাঁতের হাসি 
হাসতে পারি না বলে
আজো আমি প্রাণ ভরে কেঁদেছি
এসে দেখ, নবনীতা
কত আয়না তোমার অপেক্ষায়
কত দিন নিজের মুখ দেখোনি তুমি! 
এবার আয়নার পর আয়না এঁকে দেব তোমায়,
এসো,
আমরা পাতালে ডুবি,
আরও একটা স্বপ্ন প্রতিশ্রুতির খোঁজে... 

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন