প্রতিবেশী সাহিত্য
আনন্দ
গুপ্তা’র কবিতা
(অনুবাদ : মিতা দাশ)
কবি পরিচিতি : জন্ম - ১৯ জুলাই, ১৯৭৬,
কলকাতায়। শিক্ষা - কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে হিন্দিতে স্নাতকোত্তর। বিভিন্ন হিন্দি পত্র-পত্রিকায় তাঁর কবিতা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ভারতীয় বিভিন্ন ভাষাতেও তাঁর কবিতার
অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া আকাশবাণী এবং দূরদর্শন
কলকাতা কেন্দ্র থেকে কবিতা পাঠ করেন। Sanskritik punarnirman mission, কলকাতা দ্বারা কবিতা নবলেখনের জন্য শিখরসম্মান লাভ করেন ২০০২ সালে।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা পরিচালিত বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা কাজে নিযুক্ত আছেন।
বাচ্চারা বালিতে স্বপ্ন আঁকে
বাচ্চা!
সমুদ্রের
ধারে স্বপ্ন আঙ্কছে
পৃথিবীর
সবচেয়ে সুন্দর স্বপ্ন
দশটি কোমল
আঙ্গুল
বালির
পাহাড়ে গড়ে তুলে
সুন্দর
সুন্দর আকৃতি
ফুটে উঠে
পৃথিবীর কিছু সুন্দর স্বপ্নও
সেই
স্বপ্নগুলিকে সমুদ্র আশীর্বাদও করে
গর্জনের
সঙ্গে।
প্রত্যেক
দিন
অন্ধকারে
ভিতু, নিষ্ঠূর বেপরোয়া, ছন্নছাড়া বাতাস
করে দেয় সব স্বপ্নকে ছারখার
বাচ্চারা কিন্ত মানে না হার
এঁকেই চলে
প্রত্যেক সন্ধ্যে
কিছু নতুন
স্বপ্ন
প্রত্যেক
দিন বাধে যুদ্ধ
বাচ্চারা ও বেয়াড়া বাতাসের সঙ্গে
এই
পৃথিবীর সমস্ত ভিতু
নিষ্ঠূরতার
করে ওরা
বিরোধিতা,
বাচ্চাদের
স্বপ্ন হয়ে উঠে
একটি
প্রতিরোধ।
দাঙ্গায়
বাচ্চারা
রিলিফ
ক্যাম্পে
বাচ্চারা পড়াশোনা
করছে
বাচ্চারা
ইতিহাসের পাতায় খুঁজছে
নিজের শহর
আর ভূগোলে
নিজের ঘর
বাচ্চারা
ঠিক করে উঠতে পারছে না
নিজের
ঈশ্বরের নাম
এই
বাচ্চাদের সংসারে
ভয় একটি
অতিথির মত
এসে থেমে
গেছে
ভয় থেমে
রয়েছে
ওদের
হাড়ে, রক্তের রগে রগে
আর
স্বপ্নে খুনে মানুষের মত
এমন কি
নিস্তব্ধতায় পড়শির
পায়ের
শব্দে ওরা ভয়
পায়!
বাচ্চারা
বুঝতেই পারছে না
শহরের
নতুন ব্যাকরণ
মানুষের
বর্বরতার
এই জীবিত
অবশেষ হল বাচ্চারা
নিজেদের
শহরের ভাষা বদলের
চাক্ষুষ
সাক্ষী
বাচ্চাদের বুকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে
সভ্যতার
দেয়া
গভীরতম
জখমের চিহ্ন।
এখন মধ্যে
রাত
এখন সব
খেয়ে দেয়ে
আলস্যে
বুঁদ হয়ে
নিজের নিজের ঘরে ঘুমোচ্ছে
রাস্তার
ওপারে একটি বাচ্চার খিদে
বাড়িগুলোতে
ঠোক্কর মেরে
আহত হয়ে
ঝরে পড়ছে মাটিতে
এ কেমন
সময়
কি
বাচ্চারা কেঁদেই চলেছে
ফিলিস্তীন
থেকে ভিয়েতনাম
নামিবিয়া
থেকে সিরিয়া
কালাহান্ডি
থেকে মরাঠওরা
এয়ারকন্ডিশন্ড
ঘরে কানে ইয়ারফোন ঠেঁসে
রাষ্ট্রীয়
যোজনা ও ঘোষণা পত্রের বাইরে
কাঁদছে
বাচ্চারা
দেশের
নক্সায় পড়ছে জীবিত দাগ
এ কেমন
সময়
যখন দেশের
অন্যের এক ভাগ
চিল কাক
আর ইঁদুরদের জন্য বার করা হয়
কিন্ত
কান্নায় ভেঙে পড়া ক্ষুধার্ত বাচ্চাদের ভাগ
কোনো
ফাইলে নেই
বাচ্চা কেঁদেই
চলেছে
গোল গোল
রুটি মত চাঁদ হাঁসে আকাশে
বাচ্চার
পিছনে টাঙানো
বিজ্ঞাপনেও হাসছে একটা মুখ
দেশের
যশোগান গাইছে
আর এদিকে
বাচ্চাটা কেঁদেই চলেছে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন