প্রতিবেশী সাহিত্য
আহমেদ
ফয়েজ’এর কবিতা
(অনুবাদ : দেবলীনা চক্রবর্তী)
কবি পরিচিতি : উর্দু কবিতার জগতে ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ বিশ্বসাহিত্যে সবচেয়ে আলোচিত কবি এবং অন্যতম সেরা
প্রগতিশীল উর্দু কবি। তিনি একজন মানবতাবাদী প্রেমিক কবি, বিপ্লবী কবি। জীবদ্দশায় ফয়েজ উর্দু কবিতার কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। ষাটের দশকে তাঁর কবিতা রুশ ভাষায় অনূদিত হলে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। ফয়েজের কবিতা সমগ্র রুশ ভাষায় অনূদিত এবং গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে। মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু বিভাগে ফয়েজের কবিতা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত। ১৯৬২ সালে তিনি লেনিন শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। নোবেল পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম প্রস্তাবিত হয়েছিল।
খোয়াব মরতে
নেহি (স্বপ্ন কখনো মরে না)
স্বপ্ন কখনো মরে না
স্বপ্নের না আছে মন না চোখ না শ্বাস-প্রশ্বাস
যা খানখান হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়বে আর
শরীরের মৃত্যুর সাথে সাথে সেও শেষ হয়ে যাবে
স্বপ্ন কখনো মরে না
স্বপ্ন তো প্রকাশ, ঝঙ্কার, সে নবীন
যে কোন উঁচু চাট্টানের বাধা সে মানে না
অত্যাচারী নরকীয় যন্ত্রণাতেও নত হয় না
স্বপ্রকাশ ও শব্দের দূত স্বপ্নকে
দুঃখের বদ্ধভূমিতেও আবদ্ধ করা যায় না
স্বপ্ন হল অক্ষর
স্বপ্ন হল জ্যোতি
স্বপ্ন হল অমৃতময় বিষের পেয়ালা
স্বপ্ন হল মন্সুর-বিজয়ী।
ইজহার (বয়ান)
পাথরের মতো যদি আমি নিঃশ্চুপ থাকি
তবে এ কথা ভেবে নিও না যে
আমার অস্তিত্ব প্রেম-প্রতিজ্ঞায় উদাসীন, জড়
আমায় উপেক্ষার নজরে দেখো না ওভাবে
হে মূর্তিকার
সম্ভব হলে তোমার ঐ শানিত ছেনির
প্রথম আঘাতে আমাকে বিদীর্ণ করো
আর চিনে নাও আমার অন্তরের ছাইচাপা আগুন
ওই আগুন'ই আসলে আমার জীবন।
বাপসি (ফেরা)
সে বলেছিলো --
শোনো,
শুধুমাত্র কথা রাখার খাতিরে ফিরে এসো না
কারণ কথা রাখতে জানা মানুষগুলো প্রায়শই অসহায়তা ও একাকীত্বে জর্জরিত
হয়ে ফিরে আসে।
তুমি যাও
তোমার আকণ্ঠ তৃষ্ণা মেটাও
সেই দীঘল আঁখিতে ডুব দিয়ে
অতল মনের গভীরে ঝাঁপ দাও
আমার ইচ্ছে স্রোত তোমায় বাধা দেবে না
তবে একথা জেনে রেখো
আমার ভালোবাসাও আপ্রাণ চাওয়ার অগ্নিশিখা যত তেজী ও দীর্ঘ হবে
আর সে আঁচ যখন তোমার মনকে কাঁদাবে
তখন ফিরে এসো।
ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুনঅসংখ্য ধন্যবাদ
মুছুন