কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০

বিদ্যুৎলেখা ঘোষ



ঝুরোগল্প 



ডিওডোরান্ট


উশখুশ করছে তখন থেকে বাসভর্তি লোকজনের মধ্যে। বসতে জায়গা পেলে লাস্ট মিনিট সাজেশনে চোখ বোলাতে পারতো দিশা। মাধ্যমিকের প্রি-টেস্টের জন্য চাপা টেনশন চলছে। গত পরশু ম্যাথ টিউশন নিতে গেলে এমন ভিড়েই হঠাৎ বাঁ দিকের স্তনটাকে মুচড়ে দিলো কেউ। ঘটনার দ্রুততায় হাতের মালিক অধরাই থাকলো। রাস্তাঘাটে মহিলাদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ চিন্তাজনক আজকাল। মা বাবা চিন্তায় পড়বে বলে মোচড়ানি খাওয়ার ঘটনাটা বাড়িতে জানায়নি। 

আজ, এই এখন, ভিড় বাসের মধ্যে একটা লোক ঠিক পিছনে সেঁটে দাঁড়িয়ে আছে। ইচ্ছে করে নয়, তবু মনে হচ্ছে কিছুর একটা ঘষা লাগছে দিশার পিছনে। বয়স পঞ্চাশের উপর হয়তো। এমন বয়সী অনেকের মধ্যেই একটা ছোঁকছোঁকানি ভাব থাকে। গার্জেনরা এদেরকেই বলেন দুষ্টুকাকু, দুষ্টুদাদু।‌ পিছনে মুখ ঘুরিয়ে বার দুই দেখে মনে হলো মুখটা মলিন, কী যেন গভীর ভাবনায় ডুবে আছে লোকটা।  সিটে বসে দিশার এই অস্বস্তি খেয়াল রাখছিলো অল্প বয়সী একটা ছেলে। অবশেষে দিশাকে নিজের জায়গায় বসতে বললো। দিশা তক্ষুনি পিছনে ঐ সেঁটে থাকা বিমর্ষ লোকটিকে বললো বসতে। লোকটাও সিট পেয়ে দিশাকে আর ঐ অল্পবয়সী ছেলেটির কল্যাণ কামনা করলো।

দিশার পাশেই এসে দাঁড়ালো ছেলেটা। জিজ্ঞেস করল, তুমি বসলে না কেন? সজল চোখে দিশা উত্তর দিলো, আমার পিছনে কাকুর সাইড ব্যাগটা ছিল। উনি এই ভিড়ের মধ্যে আমাকেই গার্ড করছিলেন, আর আমি... ছি ছি... খুব খারাপ লাগছে, জানেন! দুই স্টপেজ পরেই নামবো তাই আর বসিনি। ছেলেটার চোখমুখে তখন স্মিত কোমল একটা হাসি ফুটেছে। চোখ নামিয়ে নিল দিশা। ডিওডোরান্টের একটা মিষ্টি গন্ধ নাকে আসছে...


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন