কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০

আলম তৌহিদ




জগত সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টির গল্প      


 
 (১)

আদিম গোত্র-সমাজে মানুষের নাম রাখার প্রয়োজন হতো না। কারণ তখন মানুষ ছিল গোত্র মানুষ। গোত্রের নামেই হতো মানুষের পরিচয়। জনসংখ্যা কম থাকার দরুন ব্যক্তির পরিচয় নির্ধারণে তেমন কোনো সমস্যা হতো না। পরস্পরের মধ্যে জানাশোনা হতো গোত্রগত ভাবে।  

জনসংখ্যা বৃদ্ধির দরুন গোত্রের আকার-আয়তন যখন বৃদ্ধি ঘটল এবং মানুষ যখন জীবিকার প্রয়োজনে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন একই গোত্রভুক্ত  লোকজনও পরস্পরের মধ্যে অচেনা হতে লাগল। ফলে ব্যক্তির পরিচয় নির্ধারণে মাঝেমধ্যে তারা সমস্যায় উপনীত হতো। এই অসুবিধা দূর করার জন্য সম্ভবত তাদের মধ্যে নাম রাখার প্রথা চালু হয়েছিল।

আধুনিক সমাজে ব্যক্তির প্রথম আইটেনডিটি হচ্ছে তার নাম। অর্থাৎ আমরা নাম দ্বারাই প্রথমে ব্যক্তিকে চিনি। শিশু জন্মের পর হিন্দু সমাজে নাম রাখার অনুষ্ঠান পালন করা হয়, যেটাকে বলা হয় 'নাম থুয়ানি'। মুসলিম সমাজে পালিত হয় 'আকিকা'।

পৃথিবীতে যত মানুষ তত নাম। যত পদার্থ-অপদার্থ, দৃশ্যমান ও অদৃশ্য বস্তু আছে, সবকিছুর নামকরণ করেছে মানুষ। বিজ্ঞানীরা গ্রহ-নক্ষত্র আবিষ্কারের সাথে সাথে তার একটা নামকরণ করেন। আবিষ্কৃত গ্রহ-নক্ষত্রগুলোকে এখন আমরা নাম দ্বারাই চিনি। কোনো বস্তু সম্পর্কে যথার্থ ধারণা লাভ করতে গেলেও প্রথমে তার একটা নামের প্রয়োজন পড়ে। কবি-সাহিত্যিকগণও স্বীয় গ্রন্থের একটা নাম দিয়ে থাকেন। অন্যথায় কোনটা কার রচনা নাক্ত করা মুশকিল  হতো। তেমনি সৃষ্টিকর্তাকেও আমরা নাম দ্বারা চিনতে পারি, কে কোন জাতির সৃষ্টিকর্তা।  

বিজ্ঞানীরা বলেন, নিয়ানথার্ডাল যুগেই মানুষের মধ্যে ধর্মবোধের উম্মেষ ঘটে। প্রকৃতি পুজো ও জাদুবিদ্যার মধ্য দিয়ে ঘটে ধর্মের যাত্রা। আদিতে মানুষ প্রকৃতির বিভিন্ন বস্তুর পুজো করতো। চন্দ্র, সূর্য, বজ্র, মেঘ, বায়ু, নদী, সমুদ্র, পর্বত, বৃক্ষ, পাথর ইত্যাদি বস্তু মানুষের পুজ্য ছিল। মানুষ মনে করেছিল প্রকৃতির সর্ববস্তুতে আত্মা নামক এক অদৃশ্য সত্তা বিরাজমান। এই বিশ্বাস থেকেই ফেটিশবাদ ধর্মের রূপ লাভ করেছিল। টোটেম বিশ্বাস থেকে মানুষের মধ্যে প্রচলন হয়েছিল প্রাণী পুজোর। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, মহামারী, আগ্নেয়গিরি, বজ্রপাত ইত্যাদি প্রাকৃতিক  দুর্যোগে মানুষ হয়ে পড়ত ভীত। তারা মনে করেছিল এইসব দুর্যোগের পিছনে  কোনো অশুভ শক্তির হাত আছে। ফলে এই অশুভ শক্তির হাত থেকে পরিত্রাণ লাভের আশায় এগুলোর পুজো শুরু করেছিল এবং এদের উপর আরোপ  করেছিল দেবত্ব। সুতরাং তাদেরও এক একটা নামের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। প্রকৃতির  সাথে সঙ্গতি রেখেই মানুষ দেবদেবীদের নামের কল্পনা করেছিল। এসব নাম মানুষের কল্পনাপ্রসূত বলেই স্থান-কাল-জাতি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়েছে, আবার এক ধর্ম অন্য ধর্ম দ্বারা প্রভাবিতও হয়েছে। তাই সৃষ্টির গল্প ও দেবদেবীদের নামের মধ্যে সমিলও দেখা যায়। সৃষ্টিকর্তা আছে কিংবা নেই সেটি  বড় কথা নয়; বড়  কথা হল এখন আমরা নাম দ্বারাই চিনে নিতে পারি কে সৃষ্টিকর্তা,‍ আর কে সৃষ্টিকর্তা নয়। পৃথিবীতে কত কিছুর অভাব রয়েছে, যেমন  মানুষের খাদ্যের অভাব। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অভাব নেই। ধর্ম-পুরাণের কল্যাণে আমাদের সেই অভাব পূর্ণ হয়েছে।       

ইয়োরোপে স্যাটার্ন হচ্ছে ভাগ্য ও ফসলের দেবতা। চাষাবাদের পূর্বে অধিক ফসল লাভের আশায় এই দেবতার পুজো দেয়া হতো; এমন কী করা হতো রীতিমতো উৎসব। দেবতা স্যাটার্ন ভারতবর্ষে পূর্ব থেকেই ছিল। তবে তাঁর ভারতীয় নাম 'শনি'। স্যাটার্নের যে গুণাবলী, ভারতীয় দেবতা শনির গুণ এর বিপরীত। ভারতীয়দের কাছে 'শনি' হলো অপদেবতা বা অমঙ্গলের দেবতা। তাই ভারতবাসীরা শনিবারে কোনো শুভকাজও করে না। এই অপদেবতাকে তুষ্ট করার জন্যই তারা চালু করেছিল শনি পুজোর। ইয়োরোপ ও ভারতে একই দেবতার উপর বিশ্বাসের ভিন্নতার কারণ হলো জাতিভেদে চিন্তাধারার পার্থক্য। ফলে জন্ম নেয় ভিন্ন ভিন্ন ধর্মবিশ্বাস। যদি সত্যিই স্যাটার্ন বা শনি দেবতার অস্তিত্ব থাকত এবং তিনি যদি একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে তাঁর অস্তিত্বের কথা মানুষকে জানাতেন, তবে মানুষের মধ্যে বিশ্বাসের কোন তারতম্য হতো না। এমন কী হতো না নামের ভিন্নতাও।   

আদি আফ্রিকানরা সূর্যের উপাসনা করতো। নীলনদের অববাহিকায় মিসর ছিল কৃষিনির্ভর দেশ। মানুষ তার স্বীয় অভিজ্ঞতায় বুঝেছিল ফসল উৎপাদনে সূর্যের ভূমিকা রয়েছে। তারা মনে করতো সূর্য অসীম শক্তির আধার। তাই সূর্য তাদের কাছে দেবতা বা ঈশ্বর। সুতরাং এই দেবতারও একটা নাম থাকা চাই। তাদের কল্পনায় এই দেবতার নাম হলো এটন, রা, রে। ফারাও রাজারা দেবতা এটনের উপাসনা করতো। ফারাও রাজারা মনে করতো তারা এটনের প্রতিনিধি (আরবিতে বলা হয় পয়গম্বর/নবী/রসুল)। ভারতীয়রাও সূর্য দেবতার উপাসনা করে। কিন্তু তাদের এই দেবতা এটন নয়। তিনি হলেন সূর্য, বিষ্ণু, রুদ্র, নচিকেতা। প্রাচীন ইরানীয়ের সৃষ্টিকর্তা হলেন অহুর মজদা। তিনি জোরওয়াস্টার উপর আবেস্তা ধর্ম নাযিল করেছিলেন। পণ্ডিতগণ মনে করেন ভারতের দেবতা অসুর থেকেই অহুর নামের উৎপত্তি। ভারতের ইন্দ্র ও যম ইরানের দেবতা আন্দ্রা ও যিম। ভারতের দেবতা মিত্র ইরানে মিথরা এবং ইয়োরোপে মিথেরা। মূলত মানুষের চিন্তাধারা থেকেই দেবতাদের ভিন্ন ভিন্ন নাম ও বিশ্বাসের উৎপত্তি হয়েছে। তাই ধর্মগুলোর মধ্যে এক প্রকার সাদৃশ্য দেখা যায়। 

এক সময় সারা পৃথিবীতে প্যাগানিজম ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রতিমা পুজোই ছিল মানুষের প্রধানতম ধর্মপালন। তখনও একেশ্বরবাদ প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মে পরিণত  হয়নি। প্রত্যেকটা সমাজেই প্রচলিত প্রথার বিরুদ্ধবাদী কিছু মানুষ থাকে। এই বিরোধিতা থেকেই জন্ম নেয় নতুন মত, নতুন বিশ্বাস। আফ্রিকা ও এশিয়ার একেশ্বরবাদী ধর্মগুলোর উৎপত্তি হয়েছিল প্রচলিত ধর্মের বিরোধিতা ও কিছু বাস্তব কারণ থেকে। ধর্মাধিক্যের সাথে সাথে আমরা একাধিক ঈশ্বরের খবরও জানতে পারি ধর্মের কল্যাণে আরও জানতে পারি তাদের সৃষ্টিতত্ত্বের রসাত্মক গল্প।

রামকৃষ্ণ পরমহংসের বাণী হলো - 'যত মত তত পথ'। তাহলে তো বলতে হয়, যত ধর্ম তত ঈশ্বর। সৃষ্টিকর্তা যদি একজন হতো তাহলে একাধিক ধর্ম নাযিল  করার প্রয়োজন পড়ত না। সৃষ্টিকর্তা ও ধর্মশাস্ত্র মানব মতবাদ থেকে সৃষ্টি বলেই আমরা বিভিন্ন ধর্মশাস্ত্র ও একাধিক স্রষ্টা ও সৃষ্টির গল্প পেয়েছি। মেসোপটেমিয় পুরাণ থেকে জানা যায়, সৃষ্টির আদিতে সমুদ্রের নিচে ছিল পৃথিবীর সমস্ত ভূ-ভাগ। দেবতারা পানি থেকে মাটি বিচ্ছিন্ন করতে চাইলে অসুর বাধা দিত। এতে প্রধান দেবতার সঙ্গে অসুরের যুদ্ধ হয়। দেবতা অসুরকে হত্যা করে কেটে দু-খণ্ড করেন। তার দেহের ঊর্ধ্বাঙ্গ থেকে সৃষ্টি করেন আকাশ। তারপর তারকারাজী দ্বারা তা সুশোভিত করেন। তার দেহের নিম্নাঙ্গ থেকে সৃষ্টি করেন পৃথিবীর ভূ-ভাগ। তার উপরে বৃক্ষাদি রোপণ করে সেখানে বসবাসের জন্য পশুদের নিয়ে আসা হল। দেবতারা এঁটেল মাটি থেকে প্রথম যুগের মানুষ বানালেন। সেই মানুষগুলো হল দেবতাদের প্রতিরূপ।

হিন্দুধর্মে (সনাতন) শাস্ত্রের সংখ্যা অধিক। তাই দেবদেবীর সংখ্যাও অধিক।এই ধর্মে এক দেবতা কর্তৃক অন্য দেবতা সৃষ্টি হন। তাই একাধিক সৃষ্টিকর্তাও পাওয়া যায়। ঋগ্বেদে সৃষ্টির বর্ণনা করা হয়েছে এইভাবে-  
"যিনি এসব সৃষ্টি করেছেন তাকে তোমরা বোঝতে পার না। তোমাদের অন্তঃকরণ তা বোঝার ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়নি। কুজ্জটিকাতে আচ্ছন্ন হয়ে লোকে নানা প্রকার জল্পনা করে। বিশ্বকর্মা এই বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। এই বিশ্বভুবন প্রথমে জলাকৃতি ছিল। পরে তিনি এ জলাকৃতিকে বিশ্বভুবনে পরিণত করলেন। যখন চতুঃসীমা ক্রমশ দূর হয়ে উঠল, তখন দ্যুলোক (স্বর্গ) ও ভূলোক (পৃথিবী)পৃথক হয়ে গেল(১০.৮২)।"১
দশম মণ্ডলের পুরুষসূক্তে আছে - সহস্র মস্তক, চক্ষু ও চরণবিশিষ্ট এক পুরুষ।  তিনি অমর। তাঁর তিন পাদ আকাশে (অমর অংশ) এবং এক পাদ ব্যক্ত হয়ে বিশ্বজগৎ হয়েছে।

নাসদীয় সুক্তে বলা হয়েছে - সেকালে যা নেই তা ছিল না, যা আছে তাও ছিলনা। পৃথিবীও ছিল না, অতি দূরবিস্তার আকাশও ছিল না। আবৃত করে এমন কিছু ছিল না। সেখানে কেউ ছিল না। দুর্গম ও গভীর জলও ছিল না। তখন মৃত্যু ছিল না, অমরত্বও ছিল না। রাত্রি ও দিনের প্রভেদ ছিল না। কেবল মাত্র তিনি একমাত্র বস্তু (আত্মা) বায়ুর সাহায্য ব্যতিরেকে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসযুক্ত হয়ে জীবিত ছিলেন। তিনি ব্যতীত আর কিছুই ছিল না। সর্বপ্রথমে অন্ধকারের দ্বারা অন্ধকার আবৃত ছিল। চতুর্দিক ছিল জলময়। অবিদ্যমান বস্তু দ্বারা তিনি সর্বব্যাপী আচ্ছন্ন ছিলেন। তপস্যার প্রভাবে এক বস্তুর জন্ম নিল। সর্বপ্রথম মনের উপর কামের আবির্ভাব হল। তা হতে সর্বপ্রথম উৎপত্তির কারণ নির্গত হল। বুদ্ধিমানগণ বুদ্ধি দ্বারা আপন হৃদয়ে পর্যালোচনাপূর্বক অবিদ্যমান বস্তুতে বিদ্যমান বস্তু উৎপত্তিস্থান নিরূপণ করলেন। রেতোধা পুরুষেরা উদ্ভব হলেন, মহিমা (পঞ্চভূত) সকল উদ্ভব হল। ওদের রশ্নি  দুই পার্শ্বে ও নিচের দিকে এবং ঊর্ধ্বদিকে বিস্তারিত হল, নিম্নদিকে স্বধা (নিকৃষ্ট অন্ন) থাকল, প্রযতি (ভোক্তা পুরুষ) ঊর্ধ্বদিকে থাকলেন। এরপর দেবতারা সৃষ্টি হলেন।

ঐতরেয় উপনিষদ বর্ণনা করে, সৃষ্টির পূর্বে এই দৃশ্যমান জগৎ আত্মাস্বরূপ বর্তমান ছিল। সেই আত্মা সৃষ্টি করলেন অম্ভলোক (দ্যুলোকের উপরে অবস্থিত জললোক), মরীচিলোক (আকাশ), মরলোক (পৃথিবী) ও অপলোক (নদী-সমুদ্র)। তারপর তিনি জল থেকে পুরুষাকার পিণ্ডকে গ্রহণ করে সেই পিণ্ডকে উদ্দেশ্য করে সঙ্কল্প করলেন। ফলে পাখির ডিমের মতো ফুটে মুখবিবর বের হলো। সেই মুখ-গহবর থেকে বাক্‌-ইন্দ্রিয় এবং দেবতা অগ্নির জন্ম হলো। অতপর নাসিকা থেকে ঘ্রাণেন্দ্রিয় এবং তা থেকে বায়ু প্রকাশিত হলো। এরপর ক্রমে ক্রমে দর্শন-ইন্দ্রিয়, শ্রবণেন্দ্রিয়, স্পর্শেন্দ্রিয়, সূর্য ও দিকসমূহ প্রকাশ পেল। তারপর হৃদপদ্ম প্রকাশিত হলো। হৃদপদ্ম থেকে মন,বুদ্ধি, অহংকার, চিত্ত এবং এদের দেবতা চন্দ্র প্রকাশিত হলেন। চন্দ্রের পর নাভি প্রকাশিত হলো। নাভি থেকে অপান (পায়ু) এবং অপান হতে এর অধিদেবতা মৃত্যু অভিব্যক্ত হলেন। তারপর শিশ্ন (জননেদ্রিয়) বের হলো, শিশ্ন থেকে রেতঃ (শুত্রু) এবং রেতঃ থেকে  এর অধিদেবতা প্রজাপতি প্রকাশিত হলেন। ঈশ্বর পিণ্ডাকৃতির পুরুষে ক্ষুধা-তৃষ্ণা প্রবিষ্ট করালেন। তখন ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর দেবতাগণ ঈশ্বরের কাছে অন্ন প্রার্থনা করলেন। দেবতাদের কথা শুনে ঈশ্বর প্রথমে গরু আকৃতির পিণ্ড তৈরি করলে দেবতারা অসন্তুষ্ট হলেন। তখন ঈশ্বর অশ্বাকৃতির পিণ্ড বানালেন। কিন্তু তাতেও দেবতারা সন্তুষ্ট হলেন না। অতপর ঈশ্বর পুরুষাকৃতির এক পিণ্ড তৈরি করলে দেবতারা সন্তুষ্ট হলেন। ঐ পুরুষের দেহে ক্ষুধা-তৃষ্ণাকেও স্থান দেয়া হল। তারপর দেবতারা ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিবারণের জন্য অন্ন সৃষ্টি করলেন।

তৈত্তিরীয় উপনিষদে আছে, ব্রহ্ম হতে আকাশ, আকাশ হতে বায়ু, বায়ু হতে অগ্নি, অগ্নি হতে জল, জল হতে পৃথিবী, পৃথিবী হতে ওষধিসমূহ, ওষধিসমূহ হতে অন্ন, অন্ন হতে বীর্য এবং বীর্য হতে পুরুষের সৃষ্টি হয়েছে। 
ছান্দোগ্য উপনিষদ বলে ভিন্ন কথা। সেখানে বর্ণিত আছে, জগৎ পূর্বে অসৎ (নাম ও রূপহীন) ছিল। সৃষ্টির সময় এটি হল সৎ (সত্তা বিশিষ্ট) এবং ডিম্বে পরিণত হল। ডিম্বের একভাগ রজতময় (রৌপ্যময়) এবং অপরভাগ হল স্বর্ণময়। রজতময় অংশ থেকে সৃষ্টি হলো পৃথিবী। স্বর্ণময় অংশ থেকে সৃষ্টি হলো স্বর্গ, পর্বত, মেঘ, তুষার, নদী ও সমুদ্র। তারপর সৃষ্টি হলো সূর্য।

(ক্রমশ)


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন