কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৯

পারমিতা চক্রবর্ত্তী




সাহিত্যজগত ও রান্না 




বাংলা সাহিত্য জগতে এমন অনেক কবি কিংবা সাহিত্যিক ছিলেন বা আছেন যারা বিভিন্ন ধরনের রান্না খেতে ভালোবাসেন এবং রান্না করেও থাকেন৷ অতীতে বাংলার বিখ্যাত পরিবারের মধ্যে অন্যতম জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে৷ এই পরিবারের লোকেদের বিদেশী রান্নার সাথে বিদেশী রন্ধনসামগ্রী ব্যবহার করতে দেখা গেছে ৷ শোনা যায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নানা ধরনের খাবার ভালোবাসতেন এবং কখনো কখনো নিজ হাতে রান্নাও করতেন। আমরা অনেকেই জানি না তাঁর রন্ধনপ্রীতি সম্পর্কে। শিল্পের সাথে পদচারণায় রসনাবিলাসও তাঁকে আকৃষ্ট করেছে প্রবলভাবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ানোর সময় সেসব জায়গার নিজস্ব খাবারের প্রতি তাঁর অনুরাগ জন্ম নেয় সেগুলো রন্ধন সামগ্রী ও উপকরণ লিপিবদ্ধ করে রাখতেন এবং রান্না করতেন
যা থেকে কোনোটি পরবর্তী সময়ে তাঁর প্রিয় খাবারের তালিকায় সংযুক্তিও পেয়েছে সেগুলি। যেমন: প্যাটিস, স্যুপ, পাই, কাটলেট, রোস্ট, কাবাব ইত্যাদি তাঁর প্রিয় খাবারের তালিকায়৷ 

কবিগুরু বিভিন্ন ভোজের নিমন্ত্রণ এবং প্রসিদ্ধ রেস্তোরাঁর মেন্যু কার্ড  সংগ্রহ করতেন এবং সেগুলো নিয়ে এসে ঠাকুরবাড়ির রসুইঘরের ঠাকুরদের দিয়ে দেশি এবং বিদেশি রান্নার ফিউশন করিয়েছেন, যা থেকে জন্ম নিয়েছে নতুন স্বাদের খাবার।  কবিগুরুর প্রিয় খাবারের মধ্যে একটি রেসিপি দিলাম।



ইঁচড়

উপকরণ:
 কাঁচা কাঁঠাল ৩ কাপ (সেদ্ধ করে ছোট করে কাটা), পাঁচফোড়নের গুঁড়া ১ চা-চামচ, নারকেলের বাটা আধা কাপ, নারকেলের দুধ ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ২ চা-চামচ, রসুন বাটা ২ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ২ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনে গুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরা ভাজা ১ চা-চামচ, সরষের তেল ও ঘি মেশানো ১ কাপ, তেজপাতা ২টা, চিনি ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো। 

প্রণালি:
 কাঁচা কাঁঠাল কেটে ভেতর থেকে বীজসহ টুকরা করে নিন। অল্প হলুদ ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে  শুকনো করে নিতে হবে ৷
কড়াইয়ে তেল ও ঘি গরম করে পাঁচফোড়ন, তেজপাতা দিয়ে দিন। পাঁচফোড়ন ফুটে এলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভেজে নিন। বাদামি রং হয়ে এলে লবণ, আদা বাটা, রসুন বাটা, মরিচ গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, তেজপাতা ও সামান্য পানি দিয়ে ভালো করে কষে নিন। ২ মিনিট মসলা কষানো হলে তাতে নারকেল বাটা দিয়ে দিন। মসলা এবং তেল আলাদা হয়ে এলে ইঁচড়গুলো ঢেলে দিয়ে ভালোমতো কষিয়ে নিন। এবার নারকেলের দুধ দিয়ে অল্প জল শুকানো পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। তেল ওপরে এলে ভাজা জিরা দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে গরম গরম পরিবেশন করুন।

এই রান্নাটি ঠাকুর পরিবারে খুব প্রচলিত ছিল ৷ রান্নার বাঙালিদের আত্মিক যোগ ৷ কথায় আছে রসে বসে বাঙালি ৷ রন্ধন শিল্প বাঙালির ঘরে ঘরে ৷ তবে ঠাকুরবাড়ি মানে প্রাচ্য প্রাশ্চাত্য মিলবন্ধন এটা ভাবা ঠিক নয় ৷ রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং নিজে রান্না করতেন শোনা যায় ৷ বিভিন্ন দেশের রান্নাকে বাঙালি ঘরাণায় রূপ দিতেন ৷ 

(ক্রমশঃ)


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন