ইম্প্রেশন
আমার তো কোনো পার্টির দরকার নেই। কোনো দামী গিফ্টেরও
প্রয়োজন নেই। খুশি থাকতে ভালো কিছু বন্ধুই যথেষ্ট। যাতে প্রাণখুলে হাসতে পারি।
দীর্ঘ কথোপকথন কি খুব জরুরি কিংবা ভিডিও কল্ মিটিংস! এতে কি ইম্প্রেশন তৈরি হয়!
সোশাল বন্ড ভীষণ ইম্পর্ট্যান্ট জীবনে। একটা পজিটিভ কথাবার্তা যা কিনা সৎ
কম্প্লিমেন্টসের আদান প্রদান। মুক্ত প্রশ্নের দ্বারা একে অপরের অন্তরের কাছাকাছি
যতদূর সম্ভব পৌঁছে যাওয়া।
এইরকম নানান ভাবনায় জারিত শিপ্রা মেন গেট লক্ করে।
শীতের শুরু, রঙিন হয়ে ওঠে পৃথিবী। শাল, সোয়েটার, মাফলার –– রং বেরঙের পালক উড়িয়ে
স্বাগত জানায়। থরে থরে সাজানো প্যানজি ডালিয়া ডায়ান্থাস। নিউ ইয়ার্স ইভ। কিছু
ক্লোজ বন্ধু আসবে বাড়িতে। উদযাপন। নতুন বছরের শুরুটা বেশ জম্পেশ খাওয়াদাওয়া ফুর্তি
শ্যাম্পেন-ড্রিঙ্কস্। শিপ্রার হাসব্যান্ড সন্তোষের ভীষণ ইচ্ছে এমনটাই হোক। সুতরাং
শিপ্রাও সেইরকমভাবে নিজেকে তৈরি করছে।
‘বাচ্চাদেরও সঙ্গে আনতে বলেছি।’
‘বরাবরই তোমার বুদ্ধিশুদ্ধির অভাব। আরে বাবা, আমরা
ড্রিঙ্কস্ করব ডান্স করব, বাচ্চাদের এখানে কাজ কি আছে?’
‘সন্তোষ, আমিই বাচ্চাদের সামলে দেবো। গুরুগাও-য়ের
মিস্টার এবং মিসেস মেহতার দুটি ছেলে মেয়ে, নয়ডায় থাকেন সিংগল মাদার মিস শেরাবতের
একটাই মেয়ে, সি. আর. পার্কের মিস্টার এবং মিসেস বোসের একটি ছেলে, বাকিরা তো হাত-পা
ঝাড়া কাপল!’
‘ইউ আর প্রোফেশনাল ন্যানি হয়ে গেলে, হা, হা, হা,...’
শিপ্রা ঘরের ডেকোরেশন করছে। সন্তোষ শিপ্রার অজান্তে
শিপ্রার ফটো মোবাইলে তুলছে, আর বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়দের হোয়াটস্অ্যাপ করছে।
‘তোমার বউটা তো একদম ছেয়েলি হয়ে গেছে দেখতে’
‘তা আর বলতে!’ সন্তোষ হোয়াটস্অ্যাপে চ্যাট করছে।
শিপ্রা ধীরে ধীরে বাথরুমে গেল। এখানেও তো কিছু
ডেকোরেশন দরকার। বিশাল আয়নায় প্রতিবিম্বিত তার মুখমন্ডলে ডার্ক সার্কেলস আন্ডারআই
ব্যাগস নজরে এল। কিডনি ঠিক আছে তো? কিংবা ঘুমের যথাযথ রুটিন? শিপ্রা স্ক্র্যাবার
নিয়ে আয়নার আনাচ-কানাচ পরিষ্কার করতে থাকল।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন