কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৯

ইন্দ্রাণী সরকার




প্রতিচ্ছবি

উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের মত তার 
প্রতিচ্ছবি আমার আত্মায় জুড়ে থাকে
তার হাসি আতসবাজির মত আকাশে
 
আঁকা হয়ে যায় বিরল কোনো প্রতীক্ষার মত

তার রাজকুমারী এসে সামনে দাঁড়ায়
 
হাতে প্রগাঢ় চুম্বন এঁকে তাকে সুদৃশ্য রথে তুলে নেয়

আমার অবাক আর অশ্রুময় চোখের
 
সামনে দিয়ে তারা ক্রমাগত:
দৃশ্যবহির্ভূত হয়ে দিগন্তে মিলিয়ে যায়

ক্রমশঃ আমার পা দুটি পাথরের মত শক্ত হয়ে আসে

রাতের আকাশে যখন গাঢ় কমলা রঙের চাঁদের পাশে
 
একটা মেঘের টুকরো অনবরত: সোহাগে জড়ায়,
তখন আমি জানি সে আর তার রাজকুমারী
 
অনন্ত ভালোবাসায় মগ্ন দুটি জ্বলজ্বলে তারা
                        

পালক অথবা গ্রাহক 

যখন পালকের ছায়া থাকে না 
তখন অরণ্য হাতছানি দেয় অথবা সুমেরু শীর্ষ
সুচারু প্রয়োগে তাকে করতলে রাখি,
করতলের আওতায় রাখাই প্রধান লক্ষ্য
হাতের কলম তখন ফুল অথবা তীর,
আদরের নাম আদরের ভঙ্গী অজস্র চুমু
হাতের পাতায় লিখে নি আবেশিত আবেশে 
কখনো মেঘ, কখনো আঁধার, ভেবে ভেবে 
গচ্ছিত সম্পর্ককে রক্তাক্ত খুঁচিয়ে অস্তিত্ব রাখি
পরে ভাবি পালক না কি গ্রাহক ছিলাম?


অভিযান

ঘুরেফিরে একই ভাবনার আড়ালে আটকে থাকা বিভিন্ন আঙ্গিকে 
বারে বারে আত্মা হয় জর্জরিত,
 
একই গোলোকে ঘুরতে থাকে মন
 ...
যেন এ ছাড়া ভাবার অন্য কোনো বিষয় নেই
মুক্তি নেই, মুক্তি নেই 
সমস্যার হয় না সমাধান
 
উল্টে মানুষদের যাই যাই প্রাণ
 
একই ক্ষেপণাস্ত্রে কোনোদিন মানবজাতির সুরাহা হয়েছিল কি?
বরং দ্যাখো কেমন ওই ধূম্রজালে আচ্ছাদিত আকাশ 
শীতের কুয়াশা ছুঁয়েছে ভোর
 
নিঃসঙ্গ চরাচর জেগে উঠছে ধীরে
 
প্রাণ বয় কারো কোমল ছোঁয়ায় আঁধারবলয় থেকে স্বর্ণবলয়
কর্মকোলাহল অন্তে দিন যায় অন্য গোলার্ধে 
এ গোলার্ধে ম্লান বিকেলে শেষ রোদের আলো ছুঁয়ে যায় শরীর
পড়ন্ত রোদের মায়ায় বিগত সময়ের
 
মুগ্ধ সব অভিযানের গল্প রয়েছে তাও বাকি


নীরবতা

প্রশান্ত মহাসাগরের মত নীরবতা নেমে এসেছে ব্যাপ্তিতে
 
আশিটা সৈকত ঝেঁটিয়ে শুধু এসেছে একদলা থুতু
 
আমরা কৃমিকীট, চেম্বারে বসবাস করি
 
তাই থুতু চেটে চেটে খাই
বগলে বুড়ো গন্ধ, চোখ নিষ্প্রভ 
সেলাই করা হাতে রোজ অমৃত মাখি
ডাস্টবিন থ্যেকে রোজ কুড়িয়ে আনি মৃত মায়ের লাশ
 
খাবার না পেলে পথের ধুলো চটি
উটের মত থলিতে জল জমাই 
কুঁজো পিঠ সামনে ঝুঁকে যায়
 
লোকের বাড়ি গিয়ে গিয়ে স্প্রিঙ্কলার সিস্টেম সরিয়ে
 
থলি রেখে আসি
ঘরে এসে দাড়ি চুমরিয়ে ফিসফিস করি 
আলু ফাঁক, পটল ফাঁক, চিচিং ফাঁক
 
বলতে বলতে মুখোশ খুলে পড়ে
 
সামনে এসে দাঁড়াতে অপারগ আমরা অজগর হাঁটি



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন